সন্ধ্যার নরম আলোয় ঢাকা পড়েছিল শহরের ছোট্ট ক্যাফেটি। জানালার পাশে বসে ছিল মেঘলা—একটা বই হাতে, কিন্তু চোখ বইয়ের পাতায় নয়, বাইরে ধীরে ধীরে অন্ধকার হওয়া আকাশে।
সে প্রতিদিন এই ক্যাফেতে আসে, কিন্তু আজকের দিনটা যেন আলাদা। হয়তো বাতাসে আজ একটু বেশি কবিতা মিশে আছে।
ঠিক তখনই দরজার ঘণ্টা বাজল। ঢুকল এক তরুণ, নাম তার অরণ্য। চোখে গভীরতা, মুখে নরম হাসি। সে ধীরে ধীরে এসে বসল মেঘলার সামনের টেবিলে। অজানার টান, যেন কোথাও আগে দেখা হয়েছে।
কয়েক মুহূর্ত চুপচাপ কাটল। তারপর অরণ্য বলল,
— "আপনার বইটা আমার প্রিয়। আপনি কি কবিতা লেখেন?"
মেঘলা একটু অবাক হয়ে তাকাল। এতদিন কেউ এইভাবে কথা বলেনি।
সে হেসে বলল, "লিখি... কিন্তু প্রকাশ করিনি কখনও।"
ওদের কথোপকথন চলল, কফির কাপ ফাঁকা হলো, কিন্তু সময় থেমে রইল যেন। অরণ্য জানাল, সে একজন আলোকচিত্রী, প্রকৃতি আর মানুষের মুখের গল্প তুলে ধরে ছবিতে।
তারপর দিনের পর দিন দেখা হতে লাগল। কবিতা আর ছবি একসাথে গল্প লিখতে শুরু করল। অরণ্য মেঘলার কবিতায় ছবি আঁকত, আর মেঘলা অরণ্যের ছবিতে শব্দ জুড়ে দিত।
এক সন্ধ্যায় চাঁদের আলোয় হাঁটতে হাঁটতে অরণ্য বলল,
— "তুমি যদি চাও, আমি তোমার প্রতিটা কবিতার পাশে থাকব—আলো হয়ে, ছায়া হয়ে, প্রেম হয়ে।"
মেঘলা নরম হাসি হেসে বলল,
— "তুমি তো অনেক আগেই আমার কবিতার চাঁদ হয়ে উঠেছ।"
চাঁদের আলোয় একে অপরের দিকে তাকিয়ে ছিল তারা—মুগ্ধ, নির্ভার, আর মায়াবী ভালোবাসায় ডুবে।