✍️ পর্ব ১: প্রথম দেখা
কলেজ ক্যাম্পাসের আকাশটা সেদিন নীল ছিল বটে, তবে মেঘেরও লুকোচুরি চলছিল। বসন্তের বিকেল। রাহাত ঠিক বুঝতে পারছিল না— কেন যেন আজকের অনুষ্ঠান তাকে এত টানছে। শার্টের বোতাম ঠিক করে আয়নায় একবার তাকিয়ে আবার বেরিয়ে পড়ল সে।
কলেজে আজ বসন্ত উৎসব। মাঠের মাঝখানে মঞ্চ, চারপাশে রঙিন বেলুন আর ফুলে সাজানো। বিভিন্ন বিভাগ থেকে ছেলেমেয়েরা নানা ধরনের গান, কবিতা, নাচ পরিবেশন করছে। দর্শকসারিতে বসে রাহাত মুগ্ধ হয়ে দেখছিল একের পর এক অনুষ্ঠান। হঠাৎ সঞ্চালক ঘোষণা করল— “এবার মঞ্চে আসছেন ইংরেজি বিভাগের মিম আক্তার, একটি রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করবেন।”
মিম মঞ্চে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে যেন হাওয়া বদলে গেল। মিমের পরনে হলুদ-সাদা শাড়ি, কপালে টিপ, চোখে লাজুক কিন্তু দৃঢ় চাহনি। মাইক হাতে নিয়ে যখন সে গান শুরু করল— “আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে…” তখন রাহাত যেন স্থির হয়ে গেল। এত সুমধুর কণ্ঠ সে আগে শোনেনি। গান শেষ হলে চারদিক থেকে করতালি উঠল। মিম মুচকি হেসে সবাইকে অভিবাদন জানাল।
রাহাতও হাততালি দিতে দিতে লক্ষ্য করল মিমের দিকেই তার চোখ আটকে গেছে। মিম মঞ্চ থেকে নামার সময় রাহাত আরেকবার দেখল— মিমের সেই হাসি যেন তার বুকের ভেতর এক অদ্ভুত কাঁপন তুলে দিল।
সেদিন অনুষ্ঠান শেষে বন্ধুদের সাথে গল্প করতে করতে মিমের আরেক ঝলক পাওয়ার আশায় রাহাত মাঠের চারপাশে ঘুরছিল। হঠাৎ করিডোরের কোণে মিমকেও দেখল সে। মিম বন্ধুর সাথে হাসতে হাসতে যাচ্ছিল। রাহাত চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল। মিম হঠাৎ তার দিকে তাকিয়ে এক মুহূর্তের জন্য থেমে গেল। চোখাচোখি হলো। মিম লাজুকভাবে আবার মুখ ফিরিয়ে নিল।
রাহাতের মুখে অজান্তেই হাসি ফুটল। ভেতরে ভেতরে সে বুঝে গেল— আজ কিছু একটা শুরু হলো। হয়তো এটাই সেই শুরু, যার জন্য এতদিন অপেক্ষা করছিল।
সেদিন রাতে ঘুমাতে গিয়ে রাহাত অনেকক্ষণ ছটফট করল। মিমের হাসি, চোখ, কণ্ঠস্বর বারবার তার মনে ভেসে উঠল। একবার মনে হলো— “কীভাবে কথা বলবো? ও কি কথা বলবে?” আবার মনে হলো— “না, এমনিই থাকুক। ধীরে ধীরে।”
সেই রাতেই সে স্থির করল— মিমকে আর এভাবে দূর থেকে দেখে যাওয়া নয়। তাকে জানতেই হবে।
বিকেলের বসন্ত হাওয়ায় জন্ম নিল এক নতুন প্রেমের গল্প। মিম হয়তো জানত না, সে আজ কারো হৃদয়ে বসন্ত এনে দিয়েছে।
কি? পর্ব ২ (বন্ধুত্বের শুরু) লিখে দেব? বলো! 🌸