ভূতেরা পুরনো বাড়িতে বেশি দেখা যায় কেন?
এটা আসলে আমাদের মনের খেলা এবং পরিবেশের প্রভাবের মিশ্রণ। পুরনো বাড়িগুলোতে কাঠের শব্দ, বাতাসের সোঁ সোঁ আওয়াজ, ঠান্ডা জায়গা, এবং অন্ধকার কোণ আমাদের মস্তিষ্কে "agent detection" নামক একটি প্রক্রিয়া সক্রিয় করে। এই প্রক্রিয়া আমাদের পূর্বপুরুষদের শিকারি বা শত্রু থেকে বাঁচতে সাহায্য করত, কিন্তু এখন এটি আমাদেরকে অজানা শব্দ বা ছায়াকে ভয়ের সৃষ্টি করে। যা, ভূতের উপস্থিতি মনে হয়।
ইতিহাসে দেখা যায়, অনেক সমাজে বিশ্বাস ছিল যে, কোনো জায়গায় যদি অস্বাভাবিক মৃত্যু বা দুর্ঘটনা ঘটে, তাহলে সেই জায়গা অভিশপ্ত হয়ে যায়। যেমন, ইউরোপে একসময় বিশ্বাস করা হতো যে, ভূতদের ঠেকাতে বাড়ির দেয়ালে "witch-marks" আঁকা হতো। এছাড়াও, কিছু মানুষ নিজেদের স্বার্থে ইচ্ছাকৃতভাবে ভূতের গল্প তৈরি করে, যা সমাজে ভূতের ভয় বাড়ায়। এছাড়া বিভিন্ন জায়গা নিয়ে লোকমুখে চলা বিভিন্ন ঘটনাকে মানুষ বিশ্বাস করে, যার ফলে অস্বাভাবিক কিছু অনুভব করে।
বিজ্ঞান বলছে, অনেক সময় আমরা যা ভূতের উপস্থিতি মনে করি, তা আসলে পরিবেশগত বা মানসিক কারণ। যেমন, পুরনো বাড়িতে ছাঁচ (mold) থেকে নির্গত গ্যাস আমাদের মস্তিষ্কে বিভ্রম সৃষ্টি করতে পারে। আবার, অতিরিক্ত চাপ, ঘুমের অভাব, বা নিম্ন ফ্রিকোয়েন্সির শব্দ আমাদের মনে ভূতের অনুভূতি জাগাতে পারে।
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, জ্বীন, ভূত বা আত্মা একটি বাস্তব অস্তিত্ব। ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি মানুষের আধ্যাত্মিক চাহিদা পূরণ করে এবং জীবনের পরবর্তী ধাপ সম্পর্কে ধারণা দেয়। অন্যদিকে, বিজ্ঞান সবকিছু প্রমাণ-ভিত্তিকভাবে ব্যাখ্যা করতে চায়। এই দুই দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন হলেও, উভয়ই মানুষের অভিজ্ঞতা ও বিশ্বাসের অংশ।