5 hrs ·Translate

পৃথিবীতে যদি কঠিন বলে কিছু থাকে তাহলে সেটি হলো
" মানুষ চেনা "
আপন মানুষ যখন নিজের খারাপ সময়ে অচেনা মানুষের মতো ব্যবহার করে তখন সে বিষাক্ত সাপের মতো ।

image
7 m ·Translate

একটা প্রেম চাই

১. গহীন অরণ্যের ভেতর থেকে ডাক

রাত গভীর। জানালার ফাঁক দিয়ে হাওয়া আসছে। শহরের কোলাহল থেমে গেছে অনেক আগেই, কিন্তু রায়হানের বুকের ভেতর একটা অদ্ভুত অস্থিরতা। মনে হচ্ছে, তার ভেতরে একটা গহীন অরণ্য আছে—অন্ধকার, নিঃসঙ্গ, অজস্র গোপন ব্যথা লুকানো। সে অরণ্যে পথ খুঁজে পাওয়া যায় না, শুধু শূন্যতা আর নীরবতা।

রায়হান তার ডায়েরিতে লিখল—
"মানুষ সবকিছু পায়, সাফল্য, অর্থ, পরিচিতি… কিন্তু আমি আজও খুঁজছি একটা প্রেম। একটা প্রেম চাই, যা সত্যিকারের হবে, যা আমার নিঃসঙ্গতার অরণ্য আলোকিত করবে।"

২. অতীতের ছায়া

রায়হান একসময় খুব হাসিখুশি ছেলে ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে সবাই তাকে প্রাণবন্ত মনে করত। আড্ডায়, খেলাধুলায়, গানে—সব জায়গায় সে উপস্থিত থাকত।

সেই সময় তার জীবনে এসেছিল নীলাঞ্জনা। মেয়েটি শান্ত, মিষ্টি হাসি আর নির্ভরতার প্রতীক। একসাথে ক্লাস, লাইব্রেরি, ক্যাম্পাসের দীর্ঘ হাঁটা—সবই যেন এক অদ্ভুত সুখের ভেতর ডুবিয়ে রাখত রায়হানকে।

কিন্তু একদিন নীলাঞ্জনা বলল—
—"রায়হান, আমি দেশ ছেড়ে যাচ্ছি। পরিবার চায় আমি বিদেশে পড়াশোনা করি। হয়তো ফিরে আসব না।"

শাহসী রায়হান কিছু বলতে পারল না। শুধু চুপ করে তাকিয়ে থাকল। আর সেই দিনই তার হৃদয়ের অরণ্যে এক অদ্ভুত অন্ধকার নেমে এলো।

৩. হারানোর পর

নীলাঞ্জনার চলে যাওয়ার পর রায়হান আর আগের মতো নেই। চাকরি পেয়েছে, শহরে পরিচিতি তৈরি করেছে, কিন্তু ভেতরে ভেতরে সে ভীষণ একা।

বন্ধুরা বলে—
—"তুই তো সফল মানুষ। এত কিছু পেয়েছিস।"

কিন্তু রায়হানের ভেতরে একটা প্রশ্ন জ্বলে—"যদি পাশে কেউ না থাকে, তবে সাফল্যের মানে কী?"

তার বুকের ভেতরের অরণ্যে প্রতিদিন প্রতিধ্বনি ওঠে—"একটা প্রেম চাই। শুধু একটা প্রেম চাই।"

৪. অরণ্যের ভেতরে এক আলো

একদিন অফিস শেষে বৃষ্টির রাতে এক ক্যাফেতে ঢুকে পড়ল রায়হান। জানালার বাইরে ঝরে পড়ছে বৃষ্টি। হঠাৎ দেখল এক মেয়ে ভিজে কাপড়ে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছে। সে ভেতরে ঢুকতেই চারপাশ যেন হঠাৎ নরম আলোয় ভরে গেল।

মেয়েটির নাম অনন্যা। ক্যাফের এক কোনায় বসে গরম কফি খেতে খেতে হেসে বলল—
—"বৃষ্টি আমাকে সবসময় ডাকে। মনে হয়, ভেতরের সব দুঃখ ধুয়ে ফেলতে পারে।"

রায়হান তার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলল—"হয়তো এই মেয়েটিই আমার অরণ্যের আলো।"

৫. ধীরে ধীরে

কিছুদিন পর থেকেই অনন্যার সাথে যোগাযোগ বাড়ল। অফিস শেষে কফি, বইয়ের দোকানে ঘোরাঘুরি, পার্কে বসে গল্প। অনন্যা যেন সহজ-সরল অথচ গভীর মানুষ।

রায়হান ধীরে ধীরে বুঝতে পারল—সে আবার নতুন করে বাঁচতে চাইছে। অনন্যার হাসি তার বুকের ভেতর অরণ্যের অন্ধকার ভেদ করছে।

কিন্তু ভেতরের ভয়ও থেকে গেল। নীলাঞ্জনার চলে যাওয়া তাকে ভেতরে ভেতরে দুর্বল করে দিয়েছে। সে ভাবল—
"যদি আবার হারিয়ে যায়? যদি আবার আমি একা হয়ে যাই?"

৬. সত্যের মুহূর্ত

এক সন্ধ্যায় নদীর ধারে বসে অনন্যা হঠাৎ বলল—
—"তুমি কি কখনো কাউকে খুব কাছে পেয়েছ? এমন কেউ, যার জন্য ভেতরের সব অন্ধকার দূর হয়ে গেছে?"

রায়হান চুপ করে ছিল। চোখে পানি জমল। তারপর ধীরে বলল—
—"পেয়েছিলাম। কিন্তু হারিয়েছি। আজও খুঁজছি একটা প্রেম, যেটা সত্যি হবে, যেটা আমাকে ছেড়ে যাবে না।"

অনন্যা তার হাতটা ধরে নরম স্বরে বলল—
—"তাহলে খোঁজ বন্ধ করো। কারণ হয়তো তোমার সেই খোঁজ এখানেই শেষ হয়েছে।"

৭. অরণ্য আলোকিত

সেদিনের পর রায়হানের বুকের ভেতরের অরণ্যে অদ্ভুত আলো নেমে এল। তার নিঃসঙ্গতা ভেঙে গেল। প্রতিদিন অনন্যা তার সাথে নতুন স্বপ্ন বুনল, নতুন আশার কথা বলল।

রায়হান ডায়েরিতে লিখল—
"আজ আর শুধু তোমাকে খুঁজছি না, আজ তোমাকে পেয়েছি। আমার গহীন অরণ্য আজ আলোয় ভরে গেছে। কারণ আমি পেয়েছি একটা প্রেম।"

৮. সমাপ্তি নাকি শুরু?

প্রেম হয়তো সবকিছুর সমাধান নয়। তবুও প্রেমই মানুষকে বাঁচার শক্তি দেয়। রায়হানের ভেতরের অরণ্য আর অন্ধকারে ডুবে নেই। সেখানে এখন গান বাজে, আলো ঝরে।

সে এখন বুঝতে পারে—
"একটা প্রেম চাই" মানে শুধু কাউকে পাওয়া নয়, বরং কাউকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকা। আর সেই প্রেম যখন সত্যি হয়, তখন অরণ্যের ভেতরের সব পথ একসাথে আলোয় ভরে ওঠে।

20 m ·Translate

অভিযোগের প্রেম


বৃষ্টি ভেজা এক বিকেলে রোদ্দুরের আলো ফুরিয়ে আসছিল। কলেজ ক্যাম্পাস তখনও ভিজে কাদামাটিতে ঢেকে আছে। অরণ্য দাঁড়িয়ে ছিল লাইব্রেরির বারান্দায়। তার চোখের কোণে অপেক্ষার ছাপ—কার জন্য? অবশ্যই তিথির জন্য।

তিথি, অরণ্যের জীবনের সবচেয়ে বড় অনুভূতির নাম। দু’জনের পরিচয় শুরু হয়েছিল লাইব্রেরিরই বই হাতে নেওয়া নিয়ে। প্রথমদিন কথাটা খুব সাধারণ ছিল, কিন্তু সেই সাধারণ কথাই ধীরে ধীরে রূপ নেয় এক গভীর ভালোবাসায়। অরণ্য আর তিথি যেন হয়ে গিয়েছিল একে অপরের ছায়া।

কিন্তু, ভালোবাসা মানেই কি শুধু হাসি, আনন্দ আর কবিতা? না। ভালোবাসার ভেতরে অনেক সময় অভিযোগও বাসা বাঁধে। আর সেই অভিযোগই হতে পারে দূরত্বের কারণ।

প্রথম অভিযোগ

একদিন তিথি হঠাৎ অরণ্যকে জিজ্ঞেস করেছিল,
— "তুমি কি সত্যিই শুধু আমাকেই ভালোবাসো?"

অরণ্য হেসে বলেছিল,
— "এমন প্রশ্ন কেন? আমি তো তোমাকেই বেছে নিয়েছি।"

কিন্তু তিথির মনে তখনও সন্দেহ। কারণ কয়েকদিন ধরে সে শুনছে, অরণ্যের সহপাঠী মেহরীন নাকি তাকে নিয়ে বেশি বেশি কথা বলছে। অন্যদের কাছ থেকে এসব শুনে তিথির মনে কেমন একটা কষ্ট জন্মায়।

অরণ্য বোঝাতে চাইলেও তিথির মনে অভিযোগ থেকে যায়।

দ্বিতীয় অভিযোগ

অরণ্য খুব সাধারণ ছেলে। সে চায় না ফাঁকা সময়ে রেস্টুরেন্টে গিয়ে টাকা নষ্ট করতে। তার বরং ভালো লাগে তিথির হাত ধরে কলেজ ক্যাম্পাস ঘুরে বেড়াতে, বা একসঙ্গে গাছতলায় বসে গল্প করতে।

কিন্তু তিথি মাঝে মাঝে মন খুলে চায়, ওরা একটু রঙিন হোক, কোথাও ঘুরতে যাক, দু’জন ছবি তুলুক, একটু জমকালোভাবে স্মৃতি তৈরি করুক।

তিথি অভিযোগ করে বলেছিল—
— "তুমি কি আমার ইচ্ছের দাম দাও না?"

অরণ্য উত্তর দিয়েছিল—
— "আমি দিই, কিন্তু আমার সামর্থ্য তো এতটুকুই। আমি চাই আমাদের ভালোবাসা হোক সরল, নিখাদ।"

তিথি চুপ করেছিল, কিন্তু অভিযোগ যেন জমা হতে থাকে হৃদয়ের গভীরে।

তৃতীয় অভিযোগ

অরণ্য কখনও ফোন ধরে দেরি করলেই তিথির মনে হয়, হয়তো সে ইচ্ছে করে এড়িয়ে যাচ্ছে। আবার কখনও মেসেজের জবাব না পেলে তিথি ভাবে, হয়তো অরণ্য আর আগের মতো তাকে ভালোবাসে না।

অরণ্য একদিন বিরক্ত হয়ে বলেছিল—
— "তুমি আমাকে বিশ্বাস করো না কেন? ভালোবাসা মানেই কি সবসময় ২৪ ঘণ্টা পাশে থাকা?"

তিথির চোখে জল চলে এসেছিল।
— "তুমি বুঝতে পারো না, আমার অভিযোগগুলো আসলে ভালোবাসার ভেতর থেকেই আসে। আমি শুধু চাই তুমি আমাকে হারিয়ে ফেলো না।"

দূরত্বের শুরু

এভাবেই দিন গড়াতে থাকে। ছোট ছোট অভিযোগের পাহাড় তৈরি হতে থাকে। তবুও ওরা দু’জন একে অপরকে ছাড়তে পারে না। ভালোবাসার টান যেন সবকিছুর চেয়ে বড়।

কিন্তু একদিন সত্যিই ঝড় বয়ে গেল।

তিথি শুনলো, অরণ্য নাকি মেহরীনকে নিয়ে প্রজেক্ট করছে, আর সেটাই নাকি বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের মতো লাগছে। তিথি কোনো ব্যাখ্যা না শুনেই রেগে গিয়ে অরণ্যকে বলল,
— "তুমি আমাকে ঠকিয়েছো। আমি আর তোমার সঙ্গে থাকতে চাই না।"

অরণ্য হাজার বোঝাল, হাজার কেঁদে বলল যে, প্রজেক্ট ছাড়া আর কিছুই নয়, কিন্তু তিথির অভিযোগের দেয়াল তখন এতটাই শক্ত হয়ে গেছে যে ভাঙার আর উপায় নেই।

একাকী অরণ্য

তিথি চলে গেলো তার জীবন থেকে। অরণ্য প্রতিদিন অপেক্ষা করত সেই পুরনো লাইব্রেরির বারান্দায়। হাতে থাকত একটা বই, কিন্তু চোখ থাকত দরজার দিকে—যদি তিথি ফিরে আসে।

সে মনে মনে বলত—
"অভিযোগ তো ছিলো আমাদের প্রেমেরই অংশ, কিন্তু কেন তুমি সেগুলোকে সম্পর্কের সমাপ্তি বানালে?"

অনুতপ্ত তিথি

অন্যদিকে তিথিও শান্তি পাচ্ছিল না। অরণ্যের সাথে প্রতিটি মুহূর্ত তার মনে পড়তে লাগল। তার অভিযোগগুলো এখন মনে হচ্ছিল বোকামি। সে বুঝতে পারল, ভালোবাসা মানে শুধু অভিযোগ ধরা নয়, বরং বিশ্বাস করা।

কিন্তু তখন আর সহজ ছিল না। অহংকার আর ভুল বোঝাবুঝি দু’জনকেই দূরে সরিয়ে দিয়েছে।

আবার দেখা

ছয় মাস পর একদিন কলেজের রিইউনিয়নে দেখা হলো অরণ্য আর তিথির।

তিথি ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে বলল,
— "অরণ্য, তুমি কি এখনও আমাকে অভিযোগ করো?"

অরণ্যের চোখ ভিজে উঠল।
— "অভিযোগ নয় তিথি, আমার শুধু একটাই কষ্ট—আমাদের ভালোবাসাকে আমরা অভিযোগের কাছে হারিয়ে দিয়েছি।"

তিথি কেঁদে বলল,
— "আমি ভুল করেছি অরণ্য। আমি বুঝতে পারিনি, তোমার ভালোবাসা ছিল আমার জন্যই সবচেয়ে বড় সম্পদ।"

অরণ্য দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
— "তুমি যদি আগেই এটা বুঝতে, তাহলে হয়তো আজও আমরা একসঙ্গে থাকতাম।"

সমাপ্তি

তিথি আর অরণ্যের সেইদিনের কথোপকথনেই গল্প শেষ হয়নি। ওরা আবার কথা বলা শুরু করল। অভিযোগ গুলো আর দূরত্ব তৈরি করতে পারলো না, বরং দু’জন শিখলো—
ভালোবাসার ভেতরে অভিযোগ থাকতেই পারে, কিন্তু অভিযোগ যদি বিশ্বাসকে গ্রাস করে, তবে সম্পর্ক ভেঙে যায়। আর যদি ভালোবাসা সত্যিকারের হয়, তবে সেই অভিযোগই হয়তো একদিন ভেঙে আবার মিলনের সেতু গড়ে দেয়।

Camera Crew In India | Worldproductionservice.com

Need a professional Camera crew in India? World Production Service delivers expert teams equipped for any scale of production. Find solutions at worldproductionservice.com.

https://worldproductionservice.....com/filming-in-indi

Camera Crew In Tunisia | Worldproductionservice.com

In the midst of Tunisia's stunning landscapes, our professional camera crew is prepared to record your story. Join Worldproductionservice.com in reliving the cinematic experience.

https://worldproductionservice.....com/filming-in-tuni

Naj Nin  shared a  post
2 hrs

পৃথিবীতে যদি কঠিন বলে কিছু থাকে তাহলে সেটি হলো ,
" মানুষ চেনা "
নিজের খারাপ সময়ে নিজের আপন মানুষের অচেনা ব্যবহার বিষাক্ত সাপের মতো ।

image