ফোমের ছোফা

image
9 ث ·ترجم

এই বাসর ঘরে বসে আমার ঘন্টা চারেক আগে বিয়ে করা বরের অপেক্ষা করছি গত দুই ঘন্টা ধরে। তবে আমায় এখানে এভাবে অপেক্ষায় রেখে কোনো এক রাজকার্য সম্পাদনে চলে গিয়েছেন তিনি। যাক, যে রাজকার্জ সম্পাদনে ইচ্ছে যাক। একসময় ফিরতে তো হবেই, তাও এ ঘরে। ঘরটাই যে তার। আজ আমি এসে দখল করে বসে আছি। ব্যাটা যখনই আসবে তখনই ওর সাথে বোঝাপড়াটা করে নেব।

ধারালো ছুড়িটা। সাইজটা বেশ বড়সড়। হাতলটা কাঠের তৈরি। সেই কাঠের তৈরি হাতলটা শক্ত করে ধরে বসে আছি। আর ছুড়ির বাকি অংশ আমার দোপাট্টার আড়ালে। দেখতে পাওয়ার উপায় নেই। তবুও কেউ যাতে দেখতে না পায় সেজন্য বেশ সতর্কই আছি।

এভাবে বসে থাকতে থাকতে কখন যে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম তার কোনো খেয়াল হলো না আমার। ঘুমের মধ্যে মুখের উপর পানির ফোয়ারা পড়তেই আমি এক চিৎকার দিয়ে উঠে বসলাম আমি৷ তন্দ্রাঘোরে তখন আমার মনে হলো ছাদ ফুটো হয়ে আমার মুখের উপর বৃষ্টি পড়ছে। দ্বিতীয়বার সে বৃষ্টি মুখে পড়তেই আমার তন্দ্রাঘোর কাটল। মুখের সামনে অচেনা একটা ছেলের মুখ দেখে ভ্রু কুচকালাম। জোরালো গলায় জিজ্ঞেস করলাম,
-‘ হু আর ইউ? ’
-‘ আই অ্যাম ইয়্যুর হাজবেন্ড ডার্লিং। বিয়ের চার ঘন্টার মধ্যেই ভুলে গেলে? বাহ! ’

‘ ইয়্যুর হাজবেন্ড ’ কথাটা শুনতেই আমার তন্দ্রাঘোর পুরোপুরি কেটে গেল। হাপুস নয়নে চেয়ে থাকলাম আমার স্বামীর পানে। তিনি আমার সামনে বসে। একটু আগে আমার হাতে থাকা ছুড়িটা এখন তার হাতে। সেটা নিয়ে সে নাড়াচাড়া করছে। দেখে মনে হলো ছুড়িটার ধার কতোটা সেটা পরীক্ষা করছেন। আবার গা জ্বালানো চোখে আমার দিকে ক্ষণে ক্ষণে তাকাচ্ছেন৷

তার ভাবভঙ্গি দেখে নিয়ে আমি তার দিকে হাত বাড়িয়ে ছুড়িটা নিতে গেলাম। তবে পারলাম না। সে হাত সরিয়ে নিল। আমি বিরক্ত কন্ঠে শুধালাম,
-‘ উফ! ছাড়ুন! এটা দিন আমায়। এটা আমার। ’

শোনা গেল তার কৌতুক কন্ঠ,
-‘ ওহ রিয়েলি? আমার ঘর থেকে আমার ব্যবহৃত ছুড়ি নিয়ে বলছ এটা তোমার? গ্রেট। ’

-‘ আপনার ঘরে ছিল তো কি হয়েছে এটা এখন আমি নিয়েছি মানে এটা আমার। এটার উপর এখন শুধু আমার অধিকার
আছে ৷ ’

-‘ তোমার যুক্তি অনুযায়ী এটা যদি তোমার হয় তাহলে তুমিও আমার। যেহেতু আমি তোমায় নিয়েছি, নিয়ে এসেছি আমার জীবনে। তোমার উপর পুরোপুরি অধিকারও আমার। তাই তুমি ছুড়ি দেখিয়ে আমায় তোমাকে নিজের থেকে দূরে রাখতে চাও বা কাতারি দেখিয়ে, তাতে আমার কিচ্ছু এসে যায় না। ইউ আর কম্পিলিট মাইন, মিহিতা। সো তোমার থেকে আমাকে দূরে রাখতে পারবে না। কখনোই না। ’

তার কথা আমি কেপে উঠলাম। আমি তো তাকে নিজের থেকে দূরে রাখার জন্যও ছুড়ি নিয়ে তার সাথে বোঝাপাড়া করার জন্য এসেছিলাম। সে বিয়ের আসরে যেভাবে আমায় হুমকি দিয়েছিল সত্যি বলতে আমি ভয়ই পেয়েছিলাম। পুরুষ মানুষের বিশ্বাস নেই। এদের স্বভাব হলো ছুকছুক। এরা বেড়ালের মতো। নারীদের এরা মাছ মনে করে। আর মাছ দেখলেই এদের ঝাপিয়ে পড়ার স্বভাব। সেখানে সে যদি হয় বিয়ে করা বউ, তাকে কম্ফোর্ট দেবে এমনটা ভাবাটাও ভুল। তবুও আমি এই লোকের মধ্যে কিছুটা আশা দেখেছিলাম। ভদ্রলোক একজন পুলিশ অফিসার। পুলিশ মানুষদের আত্মসম্মানবোধ তীব্র হয়। স্ত্রী তার থেকে দূরে থাকতে চাওয়ার পরেও নিশ্চয়ই তার কাছাকাছি আসার জন্য উতলা হবে। কিছুটা সংযম নিজের মধ্যে অবশ্যই রাখবে।

এই ভেবে আমি তার সাথে বোঝাপাড়াটা করে নেব ভেবেছিলাম। ভেবেছিলাম সম্পর্ক সহজ করার জন্য কিছুটা সময় চাইবো। যদি তারপরেও আমার কাছে আসার চেষ্টা করে তাহলে এই ছুড়িটাই হবে আমার প্রটোকেশন।

তবে কাল হলো আমার ঘুম। এই ঘুমের কারণেই ছুড়িটা আমার হাতছাড়া হয়ে গেল। তার কথাবার্তা ভালো না, তার দৃষ্টি ভালো না, হয়তো তার মনের চাওয়া পাওয়া গুলো আরো ভালো না। সে ক্রমান্বয়ে আমার দিকে ঝুকে আসছে, আর আমি পিছন দিকে ঝুকছি। সে ছুড়িটা আমার গলার কাছে ধরে রেখেছে এবং গভীর চাহনিতে দেখছে আমাকে। যার দরুণ আমার সাজানো গোছানো কথাও আমি গুলিয়ে ফেলছি।

এভাবে ঝুকতে ঝুকতে একসময় আমার পিঠের ঠায় হলো নরম ফোমের বিছানায়৷ সাদা চাদরে মোড়া বিছানাটা লাল গোলাপের পাপড়িতে আবরিত। শুধু বিছানাটাই নয় পুরো ঘরটায় গোলাপ ফুলের ছোয়া, ঘর জুড়ে গোলাপের মেলা। আমাদের শুধু আকদ হওয়ার কথা ছিল তবে এইসব বাসর..এইসব বাসর হওয়ার কথা কখনোই ছিল না। এটা যে ভদ্রলোকের কারসাজি সেটা এই মূহুর্তে এসে হাড়েহাড়ে টের পেলাম।

নরম ফুলের পাপড়িতে পিঠ ঠেকতেই আমি কেপে উঠলাম। সে একহাত বিছানায় ঠেস দিয়ে আমার উপর ঝুকে রইল। আমাদের দুজনার শরীরের মধ্যে কিঞ্চিৎ ফাকা। আমি ফাকা ঢোক গিলে বললাম, -‘ দে-দেদ-দেখুন অনন্ত..

-‘ শশশ! '

তিনি আমার ঠোঁটে আঙুল চেপে থামিয়ে দিলেন। শান্ত গলায় বললেন, -‘ আমাদের বংশে স্বামীকে নাম ধরে সম্বোধন করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ মিসেস ইরফান। ’

বলেই তিনি ছুড়ি এক কোনা দিয়ে আমার শাড়ির উপর দিয়ে আলতো স্লাইড করতে থাকেন। শাড়ি বেয়ে আস্তে আস্তে উপরের দিকে হাত উঠাতে থাকেন। এবং তার সে হাত পুনরায় থামে আমার গলার কাছে গিয়ে। হাপুস ন

Read More

9 ث ·ترجم

#

এই বাসর ঘরে বসে আমার ঘন্টা চারেক আগে বিয়ে করা বরের অপেক্ষা করছি গত দুই ঘন্টা ধরে। তবে আমায় এখানে এভাবে অপেক্ষায় রেখে কোনো এক রাজকার্য সম্পাদনে চলে গিয়েছেন তিনি। যাক, যে রাজকার্জ সম্পাদনে ইচ্ছে যাক। একসময় ফিরতে তো হবেই, তাও এ ঘরে। ঘরটাই যে তার। আজ আমি এসে দখল করে বসে আছি। ব্যাটা যখনই আসবে তখনই ওর সাথে বোঝাপড়াটা করে নেব।

ধারালো ছুড়িটা। সাইজটা বেশ বড়সড়। হাতলটা কাঠের তৈরি। সেই কাঠের তৈরি হাতলটা শক্ত করে ধরে বসে আছি। আর ছুড়ির বাকি অংশ আমার দোপাট্টার আড়ালে। দেখতে পাওয়ার উপায় নেই। তবুও কেউ যাতে দেখতে না পায় সেজন্য বেশ সতর্কই আছি।

এভাবে বসে থাকতে থাকতে কখন যে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম তার কোনো খেয়াল হলো না আমার। ঘুমের মধ্যে মুখের উপর পানির ফোয়ারা পড়তেই আমি এক চিৎকার দিয়ে উঠে বসলাম আমি৷ তন্দ্রাঘোরে তখন আমার মনে হলো ছাদ ফুটো হয়ে আমার মুখের উপর বৃষ্টি পড়ছে। দ্বিতীয়বার সে বৃষ্টি মুখে পড়তেই আমার তন্দ্রাঘোর কাটল। মুখের সামনে অচেনা একটা ছেলের মুখ দেখে ভ্রু কুচকালাম। জোরালো গলায় জিজ্ঞেস করলাম,
-‘ হু আর ইউ? ’
-‘ আই অ্যাম ইয়্যুর হাজবেন্ড ডার্লিং। বিয়ের চার ঘন্টার মধ্যেই ভুলে গেলে? বাহ! ’

‘ ইয়্যুর হাজবেন্ড ’ কথাটা শুনতেই আমার তন্দ্রাঘোর পুরোপুরি কেটে গেল। হাপুস নয়নে চেয়ে থাকলাম আমার স্বামীর পানে। তিনি আমার সামনে বসে। একটু আগে আমার হাতে থাকা ছুড়িটা এখন তার হাতে। সেটা নিয়ে সে নাড়াচাড়া করছে। দেখে মনে হলো ছুড়িটার ধার কতোটা সেটা পরীক্ষা করছেন। আবার গা জ্বালানো চোখে আমার দিকে ক্ষণে ক্ষণে তাকাচ্ছেন৷

তার ভাবভঙ্গি দেখে নিয়ে আমি তার দিকে হাত বাড়িয়ে ছুড়িটা নিতে গেলাম। তবে পারলাম না। সে হাত সরিয়ে নিল। আমি বিরক্ত কন্ঠে শুধালাম,
-‘ উফ! ছাড়ুন! এটা দিন আমায়। এটা আমার। ’

শোনা গেল তার কৌতুক কন্ঠ,
-‘ ওহ রিয়েলি? আমার ঘর থেকে আমার ব্যবহৃত ছুড়ি নিয়ে বলছ এটা তোমার? গ্রেট। ’

-‘ আপনার ঘরে ছিল তো কি হয়েছে এটা এখন আমি নিয়েছি মানে এটা আমার। এটার উপর এখন শুধু আমার অধিকার
আছে ৷ ’

-‘ তোমার যুক্তি অনুযায়ী এটা যদি তোমার হয় তাহলে তুমিও আমার। যেহেতু আমি তোমায় নিয়েছি, নিয়ে এসেছি আমার জীবনে। তোমার উপর পুরোপুরি অধিকারও আমার। তাই তুমি ছুড়ি দেখিয়ে আমায় তোমাকে নিজের থেকে দূরে রাখতে চাও বা কাতারি দেখিয়ে, তাতে আমার কিচ্ছু এসে যায় না। ইউ আর কম্পিলিট মাইন, মিহিতা। সো তোমার থেকে আমাকে দূরে রাখতে পারবে না। কখনোই না। ’

তার কথা আমি কেপে উঠলাম। আমি তো তাকে নিজের থেকে দূরে রাখার জন্যও ছুড়ি নিয়ে তার সাথে বোঝাপাড়া করার জন্য এসেছিলাম। সে বিয়ের আসরে যেভাবে আমায় হুমকি দিয়েছিল সত্যি বলতে আমি ভয়ই পেয়েছিলাম। পুরুষ মানুষের বিশ্বাস নেই। এদের স্বভাব হলো ছুকছুক। এরা বেড়ালের মতো। নারীদের এরা মাছ মনে করে। আর মাছ দেখলেই এদের ঝাপিয়ে পড়ার স্বভাব। সেখানে সে যদি হয় বিয়ে করা বউ, তাকে কম্ফোর্ট দেবে এমনটা ভাবাটাও ভুল। তবুও আমি এই লোকের মধ্যে কিছুটা আশা দেখেছিলাম। ভদ্রলোক একজন পুলিশ অফিসার। পুলিশ মানুষদের আত্মসম্মানবোধ তীব্র হয়। স্ত্রী তার থেকে দূরে থাকতে চাওয়ার পরেও নিশ্চয়ই তার কাছাকাছি আসার জন্য উতলা হবে। কিছুটা সংযম নিজের মধ্যে অবশ্যই রাখবে।

এই ভেবে আমি তার সাথে বোঝাপাড়াটা করে নেব ভেবেছিলাম। ভেবেছিলাম সম্পর্ক সহজ করার জন্য কিছুটা সময় চাইবো। যদি তারপরেও আমার কাছে আসার চেষ্টা করে তাহলে এই ছুড়িটাই হবে আমার প্রটোকেশন।

তবে কাল হলো আমার ঘুম। এই ঘুমের কারণেই ছুড়িটা আমার হাতছাড়া হয়ে গেল। তার কথাবার্তা ভালো না, তার দৃষ্টি ভালো না, হয়তো তার মনের চাওয়া পাওয়া গুলো আরো ভালো না। সে ক্রমান্বয়ে আমার দিকে ঝুকে আসছে, আর আমি পিছন দিকে ঝুকছি। সে ছুড়িটা আমার গলার কাছে ধরে রেখেছে এবং গভীর চাহনিতে দেখছে আমাকে। যার দরুণ আমার সাজানো গোছানো কথাও আমি গুলিয়ে ফেলছি।

এভাবে ঝুকতে ঝুকতে একসময় আমার পিঠের ঠায় হলো নরম ফোমের বিছানায়৷ সাদা চাদরে মোড়া বিছানাটা লাল গোলাপের পাপড়িতে আবরিত। শুধু বিছানাটাই নয় পুরো ঘরটায় গোলাপ ফুলের ছোয়া, ঘর জুড়ে গোলাপের মেলা। আমাদের শুধু আকদ হওয়ার কথা ছিল তবে এইসব বাসর..এইসব বাসর হওয়ার কথা কখনোই ছিল না। এটা যে ভদ্রলোকের কারসাজি সেটা এই মূহুর্তে এসে হাড়েহাড়ে টের পেলাম।

নরম ফুলের পাপড়িতে পিঠ ঠেকতেই আমি কেপে উঠলাম। সে একহাত বিছানায় ঠেস দিয়ে আমার উপর ঝুকে রইল। আমাদের দুজনার শরীরের মধ্যে কিঞ্চিৎ ফাকা। আমি ফাকা ঢোক গিলে বললাম, -‘ দে-দেদ-দেখুন অনন্ত..

-‘ শশশ! '

তিনি আমার ঠোঁটে আঙুল চেপে থামিয়ে দিলেন। শান্ত গলায় বললেন, -‘ আমাদের বংশে স্বামীকে নাম ধরে সম্বোধন করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ মিসেস ইরফান। ’

বলেই তিনি ছুড়ি এক কোনা দিয়ে আমার শাড়ির উপর দিয়ে আলতো স্লাইড করতে থাকেন। শাড়ি বেয়ে আস্তে আস্তে উপরের দিকে হাত উঠাতে থাকেন। এবং তার সে হাত পুনরায় থামে আমার গলার কাছে গিয়ে। হাপুস ন

Favicon 
www.facebook.com

Aktualisiere deinen Browser