#28
---
গল্প ১: শেষ ট্রেন
মফস্বলের ছোট্ট রেলস্টেশন। রাত তখন প্রায় সাড়ে এগারোটা। স্টেশনে একা বসে আছে বৃদ্ধ গোপালচন্দ্র। চোখে অদ্ভুত শূন্যতা। শেষ ট্রেন আসবে পাঁচ মিনিটের মধ্যে। তিনি জানেন—এই ট্রেন ধরলে ছেলেদের শহরের বাড়িতে যাওয়া সম্ভব, না ধরলে থেকে যাওয়া চিরকালের মতো এই গ্রামে।
স্মৃতির ভেতর ভেসে উঠছে স্ত্রীর মুখ, যিনি গতবছর চলে গেছেন। ছেলে-মেয়েরা শহরে, তাদের ডাক আছে—“বাবা, চলে এসো, একা আর কতদিন?” কিন্তু গোপালের বুক টানে এই গ্রাম, এই পুকুর, এই ক্ষেত।
ট্রেনের সিটি বাজল। গোপাল দাঁড়ালেন। তাঁর চোখ ভিজে উঠল—ছোটবেলার খেলাধুলা, স্ত্রীর সঙ্গে নদীর পাড়ে হাঁটা, সব যেন বিদায় নিচ্ছে।
অবশেষে ট্রেন এল। দরজা খোলা। তিনি দাঁড়িয়ে রইলেন কিছুক্ষণ। তারপর ধীরে ধীরে উঠে গেলেন ভেতরে। জানালা দিয়ে শেষবার তাকালেন গ্রামের দিকে। মনে হল—তিনি একসঙ্গে বিদায় জানালেন অতীতকে, আর স্বাগত জানালেন নতুন জীবনের শুরু।
---
গল্প ২: হারানো দিনলিপি
মিতার বিয়ের পর নতুন বাসায় উঠল। পুরোনো আলমারি খুলতে গিয়ে এক কোণে পেল ধুলোমাখা এক খাতা। কৌতূহল বশত খুলল। অবাক হয়ে দেখল—এটা তার নিজের কলেজ জীবনের দিনলিপি! সে কেমন ছিল, কাকে পছন্দ করত, কোন স্বপ্নগুলোকে বুকে লালন করত—সবই লেখা।
পাতা উল্টাতে উল্টাতে চোখে জল এল। কারণ সেখানে লিখা—“আমি একদিন ভালো লেখক হবো।” অথচ চাকরি-বিয়ে-গৃহস্থালির ভিড়ে সে স্বপ্ন যেন চাপা পড়ে গেছে।
দিনলিপি তাকে মনে করিয়ে দিল—সে এখনো লিখতে পারে। সেদিন রাতে খাতাটা বুকে চেপে প্রতিজ্ঞা করল—আবার লিখবে। হয়তো পেশাদার লেখক হবে না, তবু তার ভেতরের স্বপ্নটা আবার বাঁচবে।
---
গল্প ৩: ভিখারির গান
ঢাকার ব্যস্ত মোড়ে বসে আছে এক ভিখারি। বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি। হাতে ভাঙা একটুখানি একতারা। মানুষ তাকে কয়েন দেয় না, তবু সে গান ছাড়ে না।
এক তরুণ দাঁড়িয়ে শোনে। সুরে যেন কষ্ট আর আশার মিশ্রণ। তরুণটি বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করে—“আপনি ভিক্ষা করেন কেন? এত সুন্দর গান গাইতে পারেন!”
ভিখারি হেসে বলে—“গান আমার জীবন, ভিক্ষা আমার বাঁচা। দুটো মিলে আমি টিকে আছি।”
তরুণটি সেদিন তার ভিডিও করে অনলাইনে দেয়। কয়েক মাসের মধ্যে সেই ভিখারি হয় ভাইরাল। গানের কদর মেলে, আর ভিক্ষার বদলে আবার গানই হয়ে ওঠে তার রুজি।
---
গল্প ৪: ছোট্ট উপহার
এক ছোট্ট মেয়ে, নাম টুনি। খুব গরিব ঘরে জন্ম। স্কুলে সবাই বড় ব্যাগ, রঙিন খাতা নিয়ে আসে। টুনির কাছে নেই কিছুই।
একদিন শিক্ষক তাকে ডেকে দিলেন। হাতে দিলেন একটি নতুন খাতা আর কলম। টুনির চোখ ঝলমল করে উঠল। সে যেন দুনিয়ার সবচেয়ে দামি উপহার পেল।
সেই খাতাতেই সে প্রথম অক্ষর লিখল, প্রথম আঁকিবুকি করল। ছোট্ট সেই উপহার তার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রেরণা হয়ে গেল।
---
গল্প ৫: নীলচোখ কুকুর
বৃষ্টির রাতে রাস্তার পাশে কাঁদছিল এক কুকুরছানা। তার চোখ ছিল আশ্চর্য নীল। রিমা তাকে কোলে তুলে বাসায় নিয়ে এল।
পরিবার প্রথমে মানতে চাইছিল না, কিন্তু ধীরে ধীরে সবাই কুকুরটিকে ভালোবেসে ফেলল।
কয়েক বছর পর কুকুরটা রিমাকে একবার জীবন বাঁচাল—রাতের অন্ধকারে চোর ঢুকেছিল, সে ঘেউ ঘেউ করে সবাইকে জাগিয়ে দেয়।
রিমা বুঝল—এক বৃষ্টির রাতে যাকে সে আশ্রয় দিয়েছিল, সে-ই হয়ে উঠেছে তার জীবনের রক্ষাকর্তা।
---
👉 এগুলো প্রথম ৫টি গল্প। চাইলে আমি এভাবে বাকিগুলো লিখে দিতে পারি, মোট ২০টা পূর্ণ হবে।
আপনি কি চান আমি এখনই বাকি ১৫টা গল্প লিখে দিই, নাকি কয়েক ভাগে দেব যাতে পড়তে সহজ হয়?
#17এক অন্ধ বালক একটি বড় ব্যাংকের সামনে বসে ছিলো।তার সামনে ছিলো একটি থালা আর হাতে ছিলো একটি কাগজ,যাতে লেখাঃ ‘আমি অন্ধ,অনুগ্রহ করে সাহায্য করুন’।
সারাটা সকাল তার থালায় মাত্র কয়েকটি পয়সাই জমেছিলো। ব্যাংকের এক চাকুরিজীবী ব্যাংকে ঢোকার সময় অন্ধটিকে দেখলো। সে তার মানিব্যাগ বের করে তাকে কিছু পয়সা দিলো, তার হাতের কাগজটি নিল এবং এর পেছনে কিছু লিখলো। এরপর ছেলেটির হাতে তা ধরিয়ে দিল যাতে সবাই নতুন লেখাটি দেখতে পায়।
এরপর আশ্চর্যজনক ভাবে সবার সাহায্যের পরিমান বেড়ে গেল।অনেক বেশি লোক ছেলেটিকে সাহায্য করতে থাকলো,তার থালাও ভরে উঠলো।বিকেলে সেই ব্যাংকার তার অফিস থেকে বেড়িয়ে ছেলেটিকে দেখতে এলো। তার গলা চিনতে পেরে ছেলেটি তাকে জিজ্ঞেস করলো,‘তুমিই কি সেই লোক যে আমার কাগজের লেখাটি বদলে দিয়েছিলে? কি লিখেছিলে তুমি?’
#14একবার এক ইঁদুর লক্ষ্য করল যে বাড়িতে ইঁদুর মারার ফাঁদ পাতা রয়েছে। সে খুবই ভয় পেল। ফাঁদটি অকেজো করার জন্য সে ওই বাড়িতে থাকা মুরগির সাহায্য চাইল। মুরগি ঘটনা শুনে জবাব দিল-
“ ফাঁদটি আমার কোন ক্ষতি করতে পারবেনা। অতএব আমি এখানে কোন সাহায্য করতে পারবনা”।
মুরগির কাছ থেকে এই উত্তর শুনে ইঁদুর খুব দুঃখিত হল এবং ছাগলের কাছে গিয়ে সাহায্য চাইল। ছাগল ফাঁদের কথা শুনে বলল-
“ওই ফাঁদ বড়দের জন্য নয়। আমি এখানে তোমাকে কোন সাহায্য করতে পারবনা”।
ইঁদুর ছাগলের কাছ থেকে একই উত্তর শুনে দুঃখিত হয়ে গরুর কাছে এলো। সব কথা শুনে গরু বলল-
“ইদুরের ফাঁদ আমার মত বড় প্রাণীর কোন ক্ষতিই করতে পারবেনা। যা আমার কোন ক্ষতি করতে পারবেনা- তাতে আমি সাহায্য করতে পারবনা”।
ইঁদুর শেষ পর্যন্ত নিরাশ হয়ে তার ঘরে ফিরে এলো।
রাতের বেলা বাড়ির কর্ত্রী অন্ধকারের ভিতর বুঝতে পারলেন যে ফাঁদে কিছু একটা ধরা পরেছে। অন্ধকারে ফাঁদের কাছে হাত দিতেই উনি হাতে কামড় খেলেন এবং দেখলেন ফাঁদে ইঁদুরের বদলে সাপ ধরা পরেছে।
একটি চমৎকার ঘটনাঃ
একবার নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণ সফরে ছিলেন। মরুভূমির সফর। সকলেরই প্রচণ্ড পানির পিপাসা লেগেছে।
পানিও শেষ! কী করা যায়? তারা নবীজীকে জানালেন। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী রা. ও আরেকজন সাহাবীকে পাঠালেন পানির খোঁজে। কোথাও পানি নেই। ইতিমধ্যে দেখলেন, এক বৃদ্ধা দুই মশক পানি নিয়ে উটে চড়ে যাচ্ছে। এই তো পানির সন্ধান পাওয়া গেছে! এই বুড়ির কাছে জিজ্ঞেস করলেই পাওয়া যাবে পানির সন্ধান। কিন্তু হতাশ হলেন, যখন বুড়ি বলল- এখান থেকে পানির দূরত্ব এক দিনের রাস্তা। গতকাল এ সময় আমি পানি নিয়ে রওয়ানা হয়েছি।
কী করা যায়! অগত্যা তারা বুড়িকে বললেন, বুড়ি মা! আপনি যদি একটু কষ্ট করে আমাদের সাথে আসতেন।
তারা বুড়িকে নবীজীর কাছে নিয়ে এলেন। নবীজী বুড়ির মশকের মুখ খুললেন। সেখান থেকে একটি পাত্রে কিছু পানি ঢালা হল। (সেখান থেকে নবীজী মুখে একটু পানি নিলেন। সেই পানি আবার মশকের মধ্যে ঢেলে দেওয়া হল।) তারপর মশকের উপরের মুখ বেঁধে দেওয়া হল এবং নিচের মুখ খুলে দেওয়া হল। ট্যাপের মত সেখান থেকে পানি বের হতে লাগল।
তারপর সবাইকে বলা হল, এখান থেকে পানি নাও; নিজেরা পান কর, তোমাদের বাহনজন্তুকে খাওয়াও। সকলে পানি নিল। দুই মশকে কতটুকু আর পানি থাকে। কিন্তু ওই দুই মশক থেকে কাফেলার সকলে তাদের প্রয়োজন মত পানি নিল। যেভাবে আমরা কল থেকে পানি নিই। এমন কি সেই পানি থেকে কেউ কেউ গোসলের পানিও নিল!
#fastpart
#foryou #support