অবশ্যই! হৃদয়ের আরও কিছু দিক নিয়ে আলোচনা করা যাক।
হৃদয়ের কার্যকারিতা কিন্তু বেশ জটিল এবং নিখুঁতভাবে নিয়ন্ত্রিত। এটি চারটি প্রধান প্রকোষ্ঠে বিভক্ত: দুটি অলিন্দ (atria) এবং দুটি নিলয় (ventricles)। অলিন্দ দুটি রক্ত গ্রহণ করে এবং নিলয় দুটি রক্ত পাম্প করে শরীরের বিভিন্ন অংশে পাঠায়। এই চারটি প্রকোষ্ঠ আবার ভাল্ভের (valves) মাধ্যমে এমনভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় যাতে রক্ত কেবল একদিকেই প্রবাহিত হতে পারে, পেছনের দিকে যেতে না পারে।
হৃদস্পন্দন একটি স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া। আমাদের মস্তিষ্কের একটি বিশেষ অংশ, যাকে সাইনোঅ্যাট্রিয়াল নোড (sinoatrial node) বলা হয়, বৈদ্যুতিক সংকেত তৈরি করে যা হৃদপেশীকে সংকুচিত হতে উদ্দীপিত করে। এই বৈদ্যুতিক সংকেতই হলো আমাদের হৃদস্পন্দন। মজার ব্যাপার হলো, আমাদের শরীরের ভেতরের এবং বাইরের বিভিন্ন উদ্দীপকের সাথে সাথে এই হৃদস্পন্দনের গতি কম-বেশি হতে পারে। যেমন, ভয় পেলে বা উত্তেজিত হলে হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, আবার বিশ্রাম নিলে তা কমে আসে।
হৃদয়কে সুস্থ রাখা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, যেমন ধূমপান, অতিরিক্ত ফ্যাটযুক্ত খাবার গ্রহণ, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপ হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই একটি সুস্থ জীবনशैली বজায় রাখা, নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলা উচিত।
হৃদয় শুধু আমাদের শারীরিক সুস্থতার জন্যই নয়, মানসিক শান্তির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। যখন আমরা ভালো কিছু অনুভব করি, তখন আমাদের হৃদয়ে এক ধরনের প্রশান্তি অনুভব হয়। আবার দুঃখ বা কষ্ট পেলে সেই অনুভূতিও হৃদয়েই যেন বেশি করে অনুভূত হয়।
আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে হৃদরোগের চিকিৎসায় অনেক উন্নতি হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে হৃদরোগ নির্ণয় করা যায় এবং ঔষধ, সার্জারি এমনকি কৃত্রিম হৃদযন্ত্রের মাধ্যমেও অনেক জটিল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে।