পারমাণবিক বোমার ব্যবহার কতটা নিষ্ঠুর ও ভয়ংকর হতে পারে তা প্রথম প্রমাণিত হয় ১৯৪৫ সালে ২য় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে। যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে এ বোমা ব্যবহারের পরিণতি ছিল খুবই ভয়াবহ ও হৃদয় বিদারক। ১৯৩৯ সালে শুরু হয়ে ২য় বিশ্বযুদ্ধের ব্যপ্তি ছিল ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত। সেই যুদ্ধে জার্মান-জাপান-ইতালি ছিল ফ্যাসিবাদী অক্ষশক্তি। পারমাণবিক বোমার আবিষ্কারক ওপেন হেইমারের পরিকল্পনা ছিল তৎকালীন নাৎসি বাহিনীর প্রধান হিটলারের বর্বরতা ও অত্যাচার থেকে জার্মান তথা মানবজাতিকে মুক্ত করার জন্য ঐ বোমা ব্যবহার করা হবে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সে সময় জাপানকেই সবচেয়ে বড় শত্রু মনে করেছিল। যার ফলে চূড়ান্ত আক্রমণের জন্য তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হেনরি ট্রূম্যান জাপানকেই চিহ্নিত করেন। অবশেষে ১৯৪৫ সালের ৬ আগষ্ট বোমারু বিমানের মাধ্যমে মার্কিন বাহিনী জাপানের হিরোশিমা শহরে একটি ২০,০০০ টন টি.এন.টি শক্তিসম্পন্ন পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এর ফলে শহরের বিশাল অঞ্চল সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হয়ে যায়। প্রায় পুরো শহরজুড়ে তৈরি হয় ধ্বংসের মহাস্তুপ। বোমার বিস্ফোরণে মারা যায় প্রায় ৬৬ হাজার মানুষ এবং আহত হয় আরো ৬৯ হাজার। অথচ ঐ শহরের অধিবাসী ছিল প্রায় ৩,৪৩,০০০ জন। হিরোশিমা ধ্বংসযজ্ঞের রেশ কাটতে না কাটতেই একই মাসের ৯ তারিখ আবারো পারমাণবিক বোমা বিক্ষেপ করা হয় জাপানের নাগাসাকি শহরে। এতে মারা যায় প্রায় ৩৯ হাজার লোক এবং আহত হয় আরো ২৫ হাজার। পারমাণবিক বোমার আঘাতে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় প্রায় ৬০ হাজার ঘর বাড়ি। ১৯৪৫ সালের পর বোমার ব্যবহার তেমন প্রসারিত না হলেও বিশ্বের শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে পারমাণবিক বোমা ও অস্ত্র ব্যবহার করার প্রবণতা এখনো দেখা যায়।
Ridoy miah
supprimer les commentaires
Etes-vous sûr que vous voulez supprimer ce commentaire ?