গল্পের নাম: অপ্রকাশিত
পর্ব ৫: সব অনুভব সম্পর্ক নয়
বইমেলার সেই দেখা ছিল সংক্ষিপ্ত, অথচ গভীর।
রুদ্র আর আয়েশা কয়েক মিনিট হাঁটল একসাথে, বইয়ের গন্ধ, ভিড়ের আওয়াজ আর মাঝেমধ্যে দুজনের মাঝে জমে থাকা নীরবতা নিয়ে।
“এই দু’বছরে তুই অনেক বদলে গেছিস,” রুদ্র বলল হঠাৎ।
আয়েশা ম্লান হেসে বলল, “সবাই বদলায়। সময়টা বদলে দেয়। তোকে ছাড়া সময়টা আমি একা পেরিয়েছি।”
রুদ্র মাথা নিচু করল। কিছু বলার ছিল, কিন্তু সে জানে—কথা বলে সময় ফেরানো যায় না।
“তুই কি এখনও…” রুদ্র বলতে গিয়েও থেমে গেল।
আয়েশা তাকাল সরাসরি তার চোখে, বলল, “ভালোবাসি না—এমন না। কিন্তু আমরা এখন একে অপরকে ঠিক বুঝিও না আর বিশ্বাসও করি না আগের মতো। সেই রিদয়, সেই ভরসা… ওগুলো তখনকার ছিল। এখন আমরা দুজন আলাদা মানুষ।”
রুদ্র হাসল, একটু বিষণ্নভাবে। “তাহলে কি আমরা শেষ?”
“শেষ হইনি। কিন্তু আবার শুরুও না। হয়তো এইটুকুই ঠিক ছিল আমাদের জন্য—একটা অসম্পূর্ণ গল্প, যা খুব সুন্দর ছিল, কিন্তু সম্পর্ক হওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল না।”
রুদ্র মাথা নেড়ে বলল, “আমরা ভুল সময়ের মানুষ ছিলাম, আয়েশা।”
আয়েশা হাত বাড়িয়ে তার কাঁধে আলতো স্পর্শ করল। “তবুও তুই আমার জীবনের সবচেয়ে সত্য অনুভব।”
দুজনে আবার নিজের পথ ধরল।
চোখে একরাশ স্মৃতি, মনে একটুকরো অপ্রকাশিত অনুভব—যা কোনো সম্পর্কের নাম পায় না, শুধু রয়ে যায়, জীবনের পাতায় হালকা ছাপ হয়ে।