Md Nuruzzaman  Erstellt neuen Artikel
49 w ·übersetzen

অস্বীকারকারী | #আল কুরআন

অস্বীকারকারী

অস্বীকারকারী

কাফেরদেরকে লক্ষ্য করিয়া আল্লাহতায়ালা বলেন
2 w ·übersetzen

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
​আপনি তানজিমুল মাদারিস সিদ্দিকীয়া কওমিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। এটি বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসার একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা বোর্ড। নিচে এর বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো:
​তানজিমুল মাদারিস সিদ্দিকীয়া কওমিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড
​তানজিমুল মাদারিস সিদ্দিকীয়া কওমিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশের একটি স্বতন্ত্র এবং উল্লেখযোগ্য কওমি মাদ্রাসা বোর্ড। এটি দেশের বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসাকে এর অধিভুক্ত করে এবং তাদের শিক্ষা কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করে।
​১. প্রতিষ্ঠা ও উদ্দেশ্য:
​প্রতিষ্ঠা: তানজিমুল মাদারিস সিদ্দিকীয়া কওমিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড নির্দিষ্ট কিছু উলামায়ে কেরামের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য হলো কওমি মাদ্রাসার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা পদ্ধতিকে রক্ষা করা এবং শিক্ষার্থীদের ইসলামী জ্ঞানে সমৃদ্ধ করা।
​উদ্দেশ্য: এই বোর্ডের প্রধান উদ্দেশ্য হলো ইসলামিক জ্ঞান, বিশেষ করে কুরআন, হাদিস, ফিকহ এবং আরবি ভাষার গভীর জ্ঞান অর্জনে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করা। এটি কওমি মাদ্রাসার নিজস্ব স্বকীয়তা ও দারুল উলূম দেওবন্দের মূলনীতি অক্ষুণ্ণ রেখে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে।
​২. কার্যক্রম ও বৈশিষ্ট্য:
​পরীক্ষা পরিচালনা: তানজিমুল মাদারিস সিদ্দিকীয়া বোর্ডের আওতাধীন মাদ্রাসাগুলোতে নির্দিষ্ট স্তরের পরীক্ষা পরিচালনা করা হয়। এসব পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেধা ও জ্ঞান যাচাই করা হয়।
​সিলেবাস ও কারিকুলাম: এই বোর্ড ঐতিহ্যবাহী কওমি সিলেবাস অনুসরণ করে, যেখানে কুরআন, হাদিস, তাফসীর, ফিকহ, উসূলে ফিকহ, আরবি সাহিত্য ও ব্যাকরণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এছাড়াও, বাংলা, গণিত এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়ও পড়ানো হয়।
​মাদ্রাসা অধিভুক্তি: তানজিমুল মাদারিস সিদ্দিকীয়া বোর্ডের অধীনে বেশ কিছু কওমি মাদ্রাসা পরিচালিত হয়। এই বোর্ড সেসব মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রমের মান নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি করে।
​শিক্ষকদের মান উন্নয়ন: বোর্ড শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে, যাতে তারা আধুনিক এবং কার্যকর পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রদান করতে পারেন।
​৩. আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি'আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক:
তানজিমুল মাদারিস সিদ্দিকীয়া কওমিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড হলো আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি'আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ-এর আওতাভুক্ত ছয়টি মূল কওমি বোর্ডের মধ্যে অন্যতম। যেহেতু দাওরায়ে হাদিস (তাকমীল) পরীক্ষার সনদকে সরকার মাস্টার্স ডিগ্রির সমমান দিয়েছে এবং এই পরীক্ষা আল-হাইআতুল উলয়া কর্তৃক পরিচালিত হয়, তাই তানজিমুল মাদারিস সিদ্দিকীয়াও এই কেন্দ্রীয় বোর্ডের অংশীদার হিসেবে কাজ করে। এর অধীনে পরিচালিত দাওরায়ে হাদিস স্তরের শিক্ষার্থীরা আল-হাইআতুল উলয়ার অধীনে পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং সনদ লাভ করে।
​৪. প্রভাব ও অবদান:
তানজিমুল মাদারিস সিদ্দিকীয়া বাংলাদেশের ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এটি অসংখ্য আলেম ও দ্বীনী শিক্ষাবিদ তৈরিতে অবদান রাখছে, যারা সমাজে ধর্মীয় জ্ঞান ও নৈতিকতার প্রচারে কাজ করছেন।
​আশা করি, এই তথ্যগুলো আপনার উপকারে আসবে।

2 w ·übersetzen

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
​বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ (সংক্ষেপে বেফাক) বাংলাদেশের একটি বৃহৎ এবং প্রাচীন কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড। নিচে এই বোর্ড সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো:
​বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ (Befaqul Madarisil Arabia Bangladesh)
​১. প্রতিষ্ঠা ও পরিচিতি:
​প্রতিষ্ঠা: ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশের অন্যতম প্রবীণ আলেম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.)-এর পৃষ্ঠপোষকতা এবং অন্যান্য প্রবীণ উলামায়ে কেরামের নেতৃত্বে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
​পরিচিতি: এটি বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসাসমূহের একটি অন্যতম বৃহৎ ও প্রধান শিক্ষা বোর্ড। এটি দারুল উলূম দেওবন্দের মূলনীতি ও সিলেবাস অনুসরণ করে পরিচালিত হয়।
​২. উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য:
​কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার মানোন্নয়ন ও আধুনিকায়ন।
​মাদ্রাসাসমূহের মধ্যে একটি সুসংগঠিত শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা।
​কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ইসলামী জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করা।
​পরীক্ষা পরিচালনা, ফলাফল প্রকাশ এবং সনদ প্রদান করা।
​৩. কার্যক্রম ও বৈশিষ্ট্য:
​পরীক্ষা পরিচালনা: বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ প্রতি বছর বিভিন্ন স্তরের পরীক্ষা পরিচালনা করে থাকে, যেমন: ইবতেদায়ী (প্রাথমিক), মুতাওয়াসসিতাহ (নিম্ন মাধ্যমিক), সানাবিয়্যাহ আম্মাহ (মাধ্যমিক), সানাবিয়্যাহ খাসসাহ (উচ্চ মাধ্যমিক), ফযীলত (স্নাতক) এবং দাওরায়ে হাদিস (স্নাতকোত্তর)।
​সিলেবাস ও কারিকুলাম: এটি দারুল উলূম দেওবন্দের সিলেবাস ও কারিকুলাম অনুসরণ করে, যা কুরআন, হাদিস, ফিকহ, উসূলে ফিকহ, আরবি ভাষা ও সাহিত্য, ফার্সি, উর্দু, বাংলা, ইতিহাস, ভূগোল, গণিত এবং অন্যান্য আধুনিক বিজ্ঞান বিষয়ের সমন্বয়ে গঠিত।
​মাদ্রাসা অধিভুক্তি: বাংলাদেশের হাজার হাজার কওমি মাদ্রাসা বেফাকের অধীনে পরিচালিত হয়। এটি এসব মাদ্রাসার শিক্ষার মান পর্যবেক্ষণ করে এবং তাদের নিয়মিত তত্ত্বাবধান করে।
​শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ: বেফাক শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করে থাকে।
​প্রকাশনা: এটি ইসলামি বইপত্র, গবেষণা জার্নাল এবং সিলেবাস সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রকাশনা প্রকাশ করে।
​৪. আল-হাইআতুল উলয়া এর সাথে সম্পর্ক:
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি'আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের ছয়টি কওমি মাদ্রাসা বোর্ডের মধ্যে অন্যতম। দাওরায়ে হাদিসের (তাকমীল) পরীক্ষা আল-হাইআতুল উলয়া কর্তৃক পরিচালিত হলেও, বেফাক অন্যান্য স্তরের পরীক্ষা এবং মাদ্রাসার সামগ্রিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। আল-হাইআতুল উলয়া হলো কওমি মাদ্রাসাসমূহের দাওরায়ে হাদিসের সনদের সরকারি স্বীকৃতির জন্য গঠিত একটি সমন্বয়কারী বোর্ড, যেখানে বেফাক একটি মূল সদস্য হিসেবে কাজ করে।
​৫. বর্তমান অবস্থা:
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসার বৃহত্তম শিক্ষা বোর্ড হিসেবে এর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে এবং দেশের ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রসারে এবং হাজার হাজার আলেম তৈরির ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।

2 w ·übersetzen

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
​হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) ছিলেন ইসলামের এক মহান সাহাবী, যিনি তাঁর জ্ঞান, ইবাদত এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি গভীর ভালোবাসার জন্য সুপরিচিত। তাঁর জীবন ছিল ইসলামের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
​সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
​নাম: আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ।
​উপাধি/কুনিয়াত: আবু আব্দুর রহমান।
​বংশ: বনু হুজাইল।
​ইসলাম গ্রহণ: প্রথম দিকের ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে অন্যতম।
​বিশেষত্ব: তিনি ছিলেন কুরআনের হাফেজ এবং শ্রেষ্ঠ কারীদের মধ্যে একজন।
​ইসলাম গ্রহণ ও প্রাথমিক জীবন
​আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) মক্কার একজন রাখাল ছিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নবুওয়াত প্রাপ্তির প্রথম দিকেই ইসলাম গ্রহণ করেন। তাঁর ইসলাম গ্রহণের ঘটনাটি খুবই শিক্ষণীয়। একদিন তিনি মক্কায় উট চরাচ্ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) ও আবু বকর (রা.) তাঁর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তারা ইবনে মাসউদকে দুধের জন্য একটি বকরির কথা বলেন। ইবনে মাসউদ (রা.) বললেন যে, এটি তার মালিকের সম্পত্তি। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) একটি ছোট বকরি চেয়ে নিলেন যা তখনও দুধ দিতে শেখেনি। রাসূলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর নামে সেটির ওলানে হাত বুলাতেই সেটি দুধে ভরে গেল। এই অলৌকিক ঘটনা দেখে ইবনে মাসউদ (রা.) তাৎক্ষণিকভাবে ইসলাম গ্রহণ করেন।
​রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সান্নিধ্য ও সেবা
​আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর খুবই ঘনিষ্ঠ সাহাবী ছিলেন। তিনি রাসূল (সা.)-এর খেদমতে অধিকাংশ সময় কাটাতেন। রাসূল (সা.) যখন সফরে যেতেন, ইবনে মাসউদ (রা.) তাঁর বিছানা, মেসওয়াক, জুতা ইত্যাদি বহন করতেন। এমনকি তাঁকে 'সাহিবুল নালাইন' (জুতাবাহী) উপাধিতে ডাকা হতো। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে তাঁর পরিবারের একজন সদস্য হিসেবেই দেখতেন এবং তাঁকে নিজের ঘরে প্রবেশ করার অনুমতি দিয়েছিলেন।
​কুরআন ও হাদিসের জ্ঞান
​ইবনে মাসউদ (রা.) ছিলেন কুরআনের একজন শ্রেষ্ঠ ক্বারী ও জ্ঞানী। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে নিজে কুরআন শিক্ষা দিয়েছিলেন। তিনি সরাসরি রাসূল (সা.)-এর মুখ থেকে ৭০টিরও বেশি সূরা মুখস্থ করেছিলেন। রাসূল (সা.) একবার বলেছিলেন, "যে ব্যক্তি কুরআনকে তাজা অবস্থায় পড়তে চায়, সে যেন ইবনে উম্মে আবদ (ইবনে মাসউদ)-এর কিরাত অনুযায়ী পড়ে।" তিনি অসংখ্য হাদিসের বর্ণনাকারীও ছিলেন এবং ফিকাহ শাস্ত্রেও তাঁর গভীর জ্ঞান ছিল।
​ইবাদত ও বিনয়
​আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) অত্যন্ত বিনয়ী ও পরহেজগার ছিলেন। তিনি দিনের বেলায় রোজা রাখতেন এবং রাতের বেলায় নামাজে দাঁড়িয়ে কাটাতেন। তাঁর বিনয় এতটাই ছিল যে, তিনি নিজেকে একজন সাধারণ মুসলিমের চেয়ে বেশি মনে করতেন না।
​জিহাদে অংশগ্রহণ
​তিনি বদর, উহুদ, খন্দক সহ প্রায় সকল যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে অংশগ্রহণ করেন। বদর যুদ্ধে তিনি আবু জাহেলকে হত্যা করে ইসলামের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
​মৃত্যু
​হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) ৩৩ হিজরীতে মদিনায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর জানাজার নামাজ হযরত উসমান (রা.) পড়িয়েছিলেন এবং তাঁকে জান্নাতুল বাকীতে দাফন করা হয়।
​আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) তাঁর জ্ঞান, ইবাদত, বিনয় এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। তাঁর জীবন মুসলিম উম্মাহর জন্য এক অনুপ্রেরণার উৎস।

2 w ·übersetzen

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
​হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) ছিলেন ইসলামের এক মহান সাহাবী, যিনি তাঁর জ্ঞান, ইবাদত এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি গভীর ভালোবাসার জন্য সুপরিচিত। তাঁর জীবন ছিল ইসলামের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
​সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
​নাম: আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ।
​উপাধি/কুনিয়াত: আবু আব্দুর রহমান।
​বংশ: বনু হুজাইল।
​ইসলাম গ্রহণ: প্রথম দিকের ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে অন্যতম।
​বিশেষত্ব: তিনি ছিলেন কুরআনের হাফেজ এবং শ্রেষ্ঠ কারীদের মধ্যে একজন।
​ইসলাম গ্রহণ ও প্রাথমিক জীবন
​আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) মক্কার একজন রাখাল ছিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নবুওয়াত প্রাপ্তির প্রথম দিকেই ইসলাম গ্রহণ করেন। তাঁর ইসলাম গ্রহণের ঘটনাটি খুবই শিক্ষণীয়। একদিন তিনি মক্কায় উট চরাচ্ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) ও আবু বকর (রা.) তাঁর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তারা ইবনে মাসউদকে দুধের জন্য একটি বকরির কথা বলেন। ইবনে মাসউদ (রা.) বললেন যে, এটি তার মালিকের সম্পত্তি। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) একটি ছোট বকরি চেয়ে নিলেন যা তখনও দুধ দিতে শেখেনি। রাসূলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর নামে সেটির ওলানে হাত বুলাতেই সেটি দুধে ভরে গেল। এই অলৌকিক ঘটনা দেখে ইবনে মাসউদ (রা.) তাৎক্ষণিকভাবে ইসলাম গ্রহণ করেন।
​রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সান্নিধ্য ও সেবা
​আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর খুবই ঘনিষ্ঠ সাহাবী ছিলেন। তিনি রাসূল (সা.)-এর খেদমতে অধিকাংশ সময় কাটাতেন। রাসূল (সা.) যখন সফরে যেতেন, ইবনে মাসউদ (রা.) তাঁর বিছানা, মেসওয়াক, জুতা ইত্যাদি বহন করতেন। এমনকি তাঁকে 'সাহিবুল নালাইন' (জুতাবাহী) উপাধিতে ডাকা হতো। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে তাঁর পরিবারের একজন সদস্য হিসেবেই দেখতেন এবং তাঁকে নিজের ঘরে প্রবেশ করার অনুমতি দিয়েছিলেন।
​কুরআন ও হাদিসের জ্ঞান
​ইবনে মাসউদ (রা.) ছিলেন কুরআনের একজন শ্রেষ্ঠ ক্বারী ও জ্ঞানী। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে নিজে কুরআন শিক্ষা দিয়েছিলেন। তিনি সরাসরি রাসূল (সা.)-এর মুখ থেকে ৭০টিরও বেশি সূরা মুখস্থ করেছিলেন। রাসূল (সা.) একবার বলেছিলেন, "যে ব্যক্তি কুরআনকে তাজা অবস্থায় পড়তে চায়, সে যেন ইবনে উম্মে আবদ (ইবনে মাসউদ)-এর কিরাত অনুযায়ী পড়ে।" তিনি অসংখ্য হাদিসের বর্ণনাকারীও ছিলেন এবং ফিকাহ শাস্ত্রেও তাঁর গভীর জ্ঞান ছিল।
​ইবাদত ও বিনয়
​আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) অত্যন্ত বিনয়ী ও পরহেজগার ছিলেন। তিনি দিনের বেলায় রোজা রাখতেন এবং রাতের বেলায় নামাজে দাঁড়িয়ে কাটাতেন। তাঁর বিনয় এতটাই ছিল যে, তিনি নিজেকে একজন সাধারণ মুসলিমের চেয়ে বেশি মনে করতেন না।
​জিহাদে অংশগ্রহণ
​তিনি বদর, উহুদ, খন্দক সহ প্রায় সকল যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে অংশগ্রহণ করেন। বদর যুদ্ধে তিনি আবু জাহেলকে হত্যা করে ইসলামের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
​মৃত্যু
​হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) ৩৩ হিজরীতে মদিনায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর জানাজার নামাজ হযরত উসমান (রা.) পড়িয়েছিলেন এবং তাঁকে জান্নাতুল বাকীতে দাফন করা হয়।
​আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) তাঁর জ্ঞান, ইবাদত, বিনয় এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। তাঁর জীবন মুসলিম উম্মাহর জন্য এক অনুপ্রেরণার উৎস।

3 w ·übersetzen

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
​হযরত উসমান (রাঃ) ইসলামের তৃতীয় খলিফা এবং একজন প্রখ্যাত সাহাবী। তিনি ইসলামের ইতিহাসে 'যুন-নুরাইন' (দুই নূরের অধিকারী) এবং 'গনী' (ধনী) উপাধি লাভ করেছিলেন। এখানে তাঁর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো:
​প্রাথমিক জীবন ও ইসলাম গ্রহণ
​হযরত উসমান (রাঃ) ৫৭৯ খ্রিস্টাব্দে মক্কার কুরাইশ বংশের বনু উমাইয়া গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন কুরাইশদের অন্যতম ধনী এবং প্রভাবশালী ব্যবসায়ী। তাঁর সততা, বিশ্বস্ততা এবং শালীনতার জন্য তিনি ইসলাম গ্রহণের পূর্বেই সমাজে অত্যন্ত সম্মানিত ছিলেন। হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর দাওয়াতে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন এবং প্রথম দিকের ইসলাম গ্রহণকারীদের (আস-সাবিকুনাল আওয়ালুন) মধ্যে অন্যতম ছিলেন।
​তিনি নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর দুই কন্যা রুকাইয়া (রাঃ) এবং উম্মে কুলসুম (রাঃ)-কে বিবাহ করেছিলেন। এ কারণেই তাঁকে "যুন-নুরাইন" বা দুই নূরের অধিকারী বলা হয়।
​খিলাফত ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান
​হযরত উমর (রাঃ)-এর শাহাদাতের পর ৬৪৪ খ্রিস্টাব্দে একটি ছয় সদস্যের কমিটির মাধ্যমে হযরত উসমান (রাঃ) খলিফা নির্বাচিত হন। তাঁর খিলাফতকাল ছিল প্রায় ১২ বছর। এই সময়ে তিনি ইসলামের বিস্তারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
​কুরআন সংকলন: এটি ছিল তাঁর খিলাফতের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ। বিভিন্ন অঞ্চলে কুরআনের ভিন্ন ভিন্ন পাঠভঙ্গির কারণে মুসলিমদের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিতে শুরু করলে তিনি হযরত হাফসা (রাঃ)-এর কাছে সংরক্ষিত মূল কপি থেকে একাধিক প্রামাণ্য কপি তৈরি করান এবং সেগুলো বিভিন্ন প্রদেশে প্রেরণ করেন। আজ আমরা যে কুরআনের সংস্করণ ব্যবহার করি, তা মূলত তাঁর তত্ত্বাবধানে সংকলিত হয়েছে।
​নৌবাহিনী গঠন: তাঁর সময়ে মুসলিম সাম্রাজ্যের সুরক্ষার জন্য প্রথমবারের মতো একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী গঠন করা হয়। এই নৌবাহিনী ভূমধ্যসাগরে বাইজেন্টাইনদের বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করে এবং সাইপ্রাস ও রোডস দ্বীপ জয় করে।
​সাম্রাজ্যের বিস্তার: তাঁর সময়ে ইসলামি সাম্রাজ্য উত্তর আফ্রিকা, আর্মেনিয়া এবং পারস্যের বিভিন্ন অঞ্চলে বিস্তৃত হয়।
​শাহাদাত
​হযরত উসমান (রাঃ)-এর খিলাফতের শেষ দিকে কিছু ষড়যন্ত্রকারীর কারণে মুসলিমদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। কিছু লোক তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে এবং বিদ্রোহ শুরু করে। এই বিদ্রোহ একসময় চরম আকার ধারণ করে। ৩৫ হিজরীর ১৮ই জিলহজ, বিদ্রোহীদের একটি দল তাঁর বাড়ি ঘেরাও করে। তিনি শান্ত থাকতে এবং রক্তপাত এড়াতে চেয়েছিলেন, তাই প্রতিরোধ করতে নিষেধ করেন। অবশেষে, রোজা অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত করার সময় বিদ্রোহীরা তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তাঁর শাহাদাত ছিল ইসলামের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা, যা পরবর্তীকালে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে মতভেদের সূচনা করে।

3 w ·übersetzen

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
​আবু বকর (রা.)-এর জীবনের বিস্তারিত তথ্য জানতে আপনি চেয়েছেন। আমি আপনার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।
আবু বকর সিদ্দীক (রা.) ছিলেন ইসলামের প্রথম খলিফা এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সাহাবী। তাঁর জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক নিচে তুলে ধরা হলো:
​জন্ম ও প্রাথমিক জীবন:
​আবু বকর (রা.) ৫৭৩ খ্রিস্টাব্দে মক্কার বিখ্যাত কুরাইশ বংশের বনু তাইম গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন।
​তাঁর আসল নাম ছিল আব্দুল্লাহ, তবে তিনি 'আবু বকর' নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন।
​তাঁর পিতার নাম ছিল আবু কুহাফা (উসমান) এবং মাতার নাম ছিল উম্মুল খায়ের সালমা।
​ইসলাম গ্রহণের আগে থেকেই তিনি একজন সৎ, অতিথি পরায়ণ এবং বিচক্ষণ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি কখনোই মূর্তিপূজা বা মদ পান করেননি।
​ইসলাম গ্রহণ:
​প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে তিনিই প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন।
​রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন ইসলামের দাওয়াত দেন, তখন তিনি কোনো দ্বিধা ছাড়াই তা গ্রহণ করেন। এ কারণে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁকে 'সিদ্দীক' বা 'সত্যবাদী' উপাধি প্রদান করেন।
​তাঁর ইসলাম গ্রহণ অনেককে অনুপ্রাণিত করে, এবং তাঁর প্রচেষ্টায় আরও অনেক সাহাবী ইসলাম গ্রহণ করেন।
​রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে সম্পর্ক:
​তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আজীবন বন্ধু ও সঙ্গী ছিলেন।
​হিজরতের সময় তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর একমাত্র সঙ্গী ছিলেন এবং সাওর গুহায় তাঁর সাথে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
​রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অসুস্থতার সময় তিনি তাঁর নির্দেশে মসজিদে নববীতে ইমামতি করেন।
​খিলাফত:
​রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওফাতের পর মুসলিম উম্মাহর নেতৃত্ব নিয়ে যখন মতপার্থক্য দেখা দেয়, তখন তিনি প্রথম খলিফা হিসেবে নির্বাচিত হন।
​তাঁর খিলাফতের সময়কালে তিনি বেশ কিছু কঠিন সমস্যার মোকাবিলা করেন, যেমন— ধর্মত্যাগী (মুরতাদ) গোষ্ঠীর বিদ্রোহ দমন, যাকাত দিতে অস্বীকারকারী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং মিথ্যা নবুওয়াতের দাবিদারদের মোকাবিলা।
​তাঁর শাসনামলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হলো বিক্ষিপ্তভাবে থাকা কুরআনের আয়াতগুলোকে একত্রিত করে সংকলন করা।
​মৃত্যু:
​আবু বকর (রা.) দুই বছর তিন মাস দশ দিন খিলাফতের দায়িত্ব পালন করেন।
​৬৩৪ খ্রিস্টাব্দের ২৩ আগস্ট (১৩ হিজরি, ২২ জমাদিউস সানি) তিনি ইন্তেকাল করেন এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কবরের পাশেই তাঁকে দাফন করা হয়।

3 w ·übersetzen

আমরা কেন পৃথিবীতে এসেছি?
​কুরআন ও হাদিসের আলোকে, মানুষের পৃথিবীতে আসার মূল উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর ইবাদত বা উপাসনা করা। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন, “আমি জিন ও মানুষকে শুধু আমার ইবাদত করার জন্যই সৃষ্টি করেছি।” (সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত ৫৬)।
​এই ইবাদতের অর্থ শুধু নামাজ, রোজা, হজ বা যাকাতের মতো আনুষ্ঠানিক ইবাদত নয়। বরং জীবনের প্রতিটি কাজ যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করা হয়, তাহলে তা ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়। যেমন—সৎ পথে জীবিকা উপার্জন, বাবা-মায়ের সেবা করা, প্রতিবেশীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা, জ্ঞান অর্জন, এমনকি ঘুমও যদি আল্লাহর ওপর ভরসা করে হয়, তবে তা ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত।
​এই জীবন মূলত একটি পরীক্ষা। আল্লাহ আমাদের পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন এই পরীক্ষা নেওয়ার জন্য যে, আমরা তার আদেশ-নিষেধ মেনে চলছি কি না। এর ওপর ভিত্তি করেই আমাদের পরকালের জীবন নির্ধারিত হবে।
​পৃথিবীতে এসে আমরা কী করছি?
​একজন মুসলিম হিসেবে পৃথিবীতে আমাদের প্রধান কাজগুলো হলো:
​আল্লাহর আনুগত্য করা: জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর আদেশ মেনে চলা এবং তার প্রেরিত নবী-রাসূলদের দেখানো পথে চলা।
​সৎ কাজ করা: নেক আমল বা ভালো কাজ করা, যেমন—যাকাত দেওয়া, গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করা, সত্য কথা বলা এবং মানুষের প্রতি দয়া করা।
​অসৎ কাজ থেকে দূরে থাকা: শিরক (আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করা), মিথ্যা কথা বলা, চুরি, সুদ, ঘুষ এবং অন্যান্য গুনাহের কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা।
​দ্বীনের দাওয়াত: নিজে ভালো কাজ করার পাশাপাশি অন্যকেও ইসলামের পথে আহ্বান করা।
​পরিবার ও সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালন: পরিবারের সদস্যদের প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং সমাজের শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সাহায্য করা।
​জ্ঞান অর্জন: ইসলামে জ্ঞান অর্জনের ওপর অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এটি ফরজ ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত।
​মৃত্যুর পর আমরা কোথায় যাব?
​ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী, মৃত্যুর পর আমরা অন্য একটি জগতে প্রবেশ করব, যাকে বারযাখ বলা হয়। এই বারযাখ হলো দুনিয়া ও আখিরাতের মাঝখানের একটি অন্তর্বর্তীকালীন জীবন।
​কিয়ামতের দিন: বারযাখের জীবন শেষ হওয়ার পর এক মহাপ্রলয়ের মাধ্যমে কিয়ামত সংঘটিত হবে। এরপর আল্লাহ সবাইকে আবার জীবিত করবেন।
​হিসাব-নিকাশ: কিয়ামতের ময়দানে সবার ভালো-মন্দ কাজের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব নেওয়া হবে। আমাদের প্রতিটি কাজের সাক্ষী থাকবে আমাদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, পৃথিবী এবং ফেরেশতারা।
​জান্নাত ও জাহান্নাম: এই হিসাব-নিকাশের পর যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করবে, তাদের জন্য নির্ধারিত হবে জান্নাত। এটি হলো চিরস্থায়ী সুখ ও শান্তির জায়গা। আর যারা আল্লাহর অবাধ্য হবে, তাদের জন্য নির্ধারিত হবে জাহান্নাম, যা হলো কঠিন শাস্তি ও কষ্টের জায়গা। জান্নাত এবং জাহান্নামের জীবন হবে অনন্তকালের।
​সংক্ষেপে, ইসলাম আমাদের শেখায় যে এই দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী। আমাদের আসল ঠিকানা হলো পরকাল। তাই আমাদের উচিত এই সংক্ষিপ্ত জীবনকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা।

3 w ·übersetzen

আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি ও সফলতা অর্জনের জন্য এই ছোট্ট জীবনকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা খুবই জরুরি। এর জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচে দেওয়া হলো:
​জীবনের উদ্দেশ্য বোঝা
​আমাদের জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো আল্লাহ তা'আলার ইবাদত করা এবং তার সন্তুষ্টি অর্জন করা। যখন আমরা এই উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করে জীবন পরিচালনা করি, তখন প্রতিটি কাজ ইবাদতে পরিণত হয়। নামাজ, রোজা, যাকাত, হজ - এই ফরয ইবাদতগুলো নিয়মিত ও আন্তরিকতার সাথে আদায় করতে হবে।
​সময়ের সঠিক ব্যবহার
​সময় খুব মূল্যবান। আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কোরআনে সময়ের কসম খেয়েছেন। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা এবং আল্লাহকে স্মরণ করা, জ্ঞান অর্জন করা, এবং ভালো কাজে সময় ব্যয় করা উচিত।
​নেক আমল বৃদ্ধি করা
​ফরয ইবাদতের পাশাপাশি বেশি বেশি নফল ইবাদত করা, যেমন - তাহাজ্জুদ নামাজ, কুরআন তেলাওয়াত, জিকির, এবং সাদকা করা। এগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলার নৈকট্য লাভ করা যায়।
​মানুষের সেবা করা
​ইসলামে মানুষের সেবা করাকে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অসহায়, দরিদ্র, এবং অভাবী মানুষের পাশে দাঁড়ানো, তাদের সাহায্য করা, এবং তাদের প্রতি দয়া ও ভালোবাসা দেখানো আল্লাহ তা'আলার কাছে অনেক প্রিয়।
​গুনাহ থেকে দূরে থাকা
​ছোট্ট হোক বা বড়, সব ধরনের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হবে। যদি কোনো গুনাহ হয়ে যায়, তবে সাথে সাথে আন্তরিকভাবে তওবা করা এবং ভবিষ্যতে সেই গুনাহ আর না করার দৃঢ় সংকল্প করা।
​জ্ঞান অর্জন
​ইসলামী জ্ঞান অর্জন করা প্রতিটি মুসলমানের জন্য ফরয। কুরআন, হাদিস, এবং ইসলামী ফিকাহ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করলে সঠিক পথে চলা সহজ হয়।
​এভাবে এই ছোট্ট জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গ করে আমরা দুনিয়া ও আখিরাতে কামিয়াবি হাসিল করতে পারি।

3 w ·übersetzen

আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি ও সফলতা অর্জনের জন্য এই ছোট্ট জীবনকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা খুবই জরুরি। এর জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচে দেওয়া হলো:
​জীবনের উদ্দেশ্য বোঝা
​আমাদের জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো আল্লাহ তা'আলার ইবাদত করা এবং তার সন্তুষ্টি অর্জন করা। যখন আমরা এই উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করে জীবন পরিচালনা করি, তখন প্রতিটি কাজ ইবাদতে পরিণত হয়। নামাজ, রোজা, যাকাত, হজ - এই ফরয ইবাদতগুলো নিয়মিত ও আন্তরিকতার সাথে আদায় করতে হবে।
​সময়ের সঠিক ব্যবহার
​সময় খুব মূল্যবান। আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কোরআনে সময়ের কসম খেয়েছেন। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা এবং আল্লাহকে স্মরণ করা, জ্ঞান অর্জন করা, এবং ভালো কাজে সময় ব্যয় করা উচিত।
​নেক আমল বৃদ্ধি করা
​ফরয ইবাদতের পাশাপাশি বেশি বেশি নফল ইবাদত করা, যেমন - তাহাজ্জুদ নামাজ, কুরআন তেলাওয়াত, জিকির, এবং সাদকা করা। এগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলার নৈকট্য লাভ করা যায়।
​মানুষের সেবা করা
​ইসলামে মানুষের সেবা করাকে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অসহায়, দরিদ্র, এবং অভাবী মানুষের পাশে দাঁড়ানো, তাদের সাহায্য করা, এবং তাদের প্রতি দয়া ও ভালোবাসা দেখানো আল্লাহ তা'আলার কাছে অনেক প্রিয়।
​গুনাহ থেকে দূরে থাকা
​ছোট্ট হোক বা বড়, সব ধরনের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হবে। যদি কোনো গুনাহ হয়ে যায়, তবে সাথে সাথে আন্তরিকভাবে তওবা করা এবং ভবিষ্যতে সেই গুনাহ আর না করার দৃঢ় সংকল্প করা।
​জ্ঞান অর্জন
​ইসলামী জ্ঞান অর্জন করা প্রতিটি মুসলমানের জন্য ফরয। কুরআন, হাদিস, এবং ইসলামী ফিকাহ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করলে সঠিক পথে চলা সহজ হয়।
​এভাবে এই ছোট্ট জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গ করে আমরা দুনিয়া ও আখিরাতে কামিয়াবি হাসিল করতে পারি।

4 w ·übersetzen

মূলপাতা
সকল সংখ্যা
বিভাগ
লেখকবৃন্দ
আপনার জিজ্ঞাসা
পরিচিতি
যোগাযোগ
বর্ষ: ০৮, সংখ্যা: ০২
রবিউল আওয়াল-১৪৩৩ || ফেব্রুয়ারি-২০১২
দুরূদ ও সালাম : ফায়েদা ও ফযীলত
মাওলানা মুহাম্মাদ ইমদাদুল্লাহ


আমাদের নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তাআলার আখেরী রাসূল। তিনি গোটা মানবজাতির জন্য আল্লাহ তাআলার সর্বশেষ দূত। তাই তাঁর প্রতি বিশ্বাস ও আনুগত্য ছাড়া আল্লাহতে বিশ্বাস ও আল্লাহর আনুগত্যের দাবি অর্থহীন। কুরআন মজীদের বিভিন্ন জায়গায় এ বিষয়টি ঘোষিত হয়েছে।

আল্লাহকে পাওয়ার একমাত্র পথ খাতামুন্নাবিয়ীন হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুসরণ। তাই তাঁর জন্য হৃদয়ের গভীরে মহববত ও ভালবাসা পোষণ করা এবং তাঁর জন্য আল্লাহর দরবারে কায়মনোবাক্যে দুআ করা প্রত্যেক উম্মতির ঈমানী কর্তব্য।

কুরআন মজীদে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য দরূদ পাঠের তথা আল্লাহর দরবারে তাঁর জন্য দুআ করার আদেশ করেছেন। এটা একদিকে যেমন আল্লাহর কাছে তাঁর রাসূলের মর্যাদার প্রমাণ অন্যদিকে মুমিন বান্দার রহমত ও বরকত লাভের অন্যতম উপায়।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, (তরজমা) নিশ্চয়ই আল্লাহ নবীর উপর রহমত নাযিল করেন এবং ফেরেশতারা তাঁর জন্য রহমতের দুআ করেন। সুতরাং হে মুমিনগণ! তোমরাও তাঁর প্রতি দরূদ পড় এবং অধিক পরিমাণে সালাম পাঠাও। (সূরা আহযাব : ৫৬)

এখানে কিছু ফযীলত উল্লেখ করা হল। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এই সহজ ও মূল্যবান আমলটি বেশি বেশি করার তাওফীক দিন।

১. রহমত, মাগফিরাত ও দরজা বুলন্দির আমল

আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আছ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন-

من صلى علي صلاة صلى الله عليه بها عشراً



যে আমার উপর একবার দরূদ পড়বে, বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা তার উপর দশটি রহমত নাযিল করবেন।-সহীহ মুসলিম ১/১৬৬; জামে তিরমিযী ১/১০১

অন্য হাদীসে আছে, হযরত আনাস রা. বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

من صلى علي صلاة واحدة صلى الله عليه عشر صلوات، وحطت عنه عشر خطيئات، ورفعت له عشر درجات.

যে আমার উপর একবার দরূদ পড়বে আল্লাহ তার উপর দশটি রহমত নাযিল করবেন, তার দশটি গুনাহ ক্ষমা করা হবে এবং দশটি দরজা বুলন্দ হবে।-সুনানে নাসায়ী ১/১৪৫; মুসনাদে আহমদ ৩/১০২; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ২/৪৩

অন্য বর্ণনায়, আবু বুরদা রা. থেকে বর্ণিত আছে, তার আমলনামায় দশটি নেকী লেখা হবে।-আলমুজামুল কাবীর, তবারানী ২২/৫১৩

আবু হুরায়রা রা. থেকেও দরূদের এই ফযীলত বর্ণিত হয়েছে।-মুসনাদে আহমদ ২/২৬২, হাদীস : ৭৫৬১

২. ফেরেশতারা মাগফিরাতের দুআ করেন

হযরত আমের ইবনে রবীআহ রা. বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খুতবার মধ্যে বলতে শুনেছি-

من صلى علي صلاة، لم تزل الملائكة تصلي عليه ما صلى علي، فليقل عبد من ذلك أو ليكثر. (قال السخاوي في القول البديع، ص : 25 : حسّن شيخنا هذا الحديث. وقال الشيخ شعيب الأرناؤوط : حديث حسن. اه)



আমার উপর দরূদ পাঠকারী যতক্ষণ দরূদ পড়ে ফেরেশতারা তার জন্য দুআ করতে থাকে। সুতরাং বান্দার ইচ্ছা, সে দরূদ বেশি পড়বে না কম।-মুসনাদে আহমদ ৩/৪৪৫; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৬/৪০; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৯০৭

৩. দরূদ পাঠকারীর জন্য শাফাআত অবধারিত

রুওয়াইফি ইবনে ছাবিত আলআনসারী রা. বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি এ দরূদ পাঠ করবে তার জন্য আমার সুপারিশ অবধারিত হয়ে যাবে।

اللهم صل على محمد وأنزله المقعد المقرب عندك يوم القيامة. (قال الهيثمي في مجمع الزوائد : رواه البزار والطبراني في الأوسط والكبير، وأسانيدهم حسنة. اه)

-আলমুজামুল কাবীর, তবারানী ৫/৪৪৮১; মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/২৫৪

৪. কিয়ামতের দিন নবীজীর সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে

আবদুললাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

أولى الناس بي يوم القيامة أكثرهم علي صلاة

কিয়ামতের দিন ঐ ব্যক্তি আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে, যে আমার উপর সবচেয়ে বেশি দরূদ পড়েছে।

(رواه الترمذي وقال : هذا حديث حسن غريب)

-জামে তিরমিযী ১/১১০