তোমাতে শুরু, তোমাতে শেষ
পর্ব ২: সকাল ভোরের প্রথম জানালা
রাত কেটে গেছে, কিন্তু ঘুম যেন এসেছিল শুধু শরীরের ওপর। মনের ভেতর যে উত্তেজনা, ভালোবাসা, আর এক নতুন জীবনের হালকা ভয়—তা দুজনেই টের পেয়েছিল।
ভোরের আলো জানালার ফাঁক গলে ঘরে ঢুকেছে। বাইরে থেকে ভেসে আসছে পাখির ডাক আর দূরের আজানের ধ্বনি। বিছানায় রিফাত এখনো ঘুমিয়ে, এক হাত নীলার হাত ধরে রেখেছে।
নীলা উঠে বসে। বিছানার পাশে রাখা আয়নায় নিজের মুখ দেখে। চোখে হালকা ক্লান্তি, কিন্তু ঠোঁটে এক অনভ্যস্ত প্রশান্তির ছাপ। শাড়ির ভাঁজ সামলে সে ধীরে ধীরে উঠে জানালার পর্দা সরায়।
বাইরের আকাশটা তখন মেঘলা-রোদের খেলা।
হঠাৎ পিছন থেকে রিফাতের গলা,
— “এই রোদটা তো তোমার মতই... কোমল আর আলতো।”
নীলা লজ্জায় চুপ করে থাকে।
রিফাত উঠে এসে পেছন থেকে তার কাঁধে হাত রাখে।
— “ভয় লাগছে এখনো?”
— “একটু। সবকিছু এত নতুন… যেন আমি নিজের ঘরেই নতুন কেউ হয়ে এসেছি।”
রিফাত হেসে বলে,
— “তুমি তো এখন এই ঘরের রানী। নতুন কেউ না, তুমি তো আমার জীবন।”
নীলা চোখ নামিয়ে রাখে, কিন্তু মনে মনে এক অদ্ভুত সাহস অনুভব করে।
সে ধীরে ধীরে বলে,
— “আপনার পাশে থাকলে ভয় কেটে যায়।”
রিফাত এবার একটু গম্ভীর হয়ে বলল,
— “তুমি জানো, বিয়ে মানেই দায়িত্ব। আমি শুধু ভালোবাসবো না, তোমার পাশে দাঁড়াবো, তোমার স্বপ্নগুলোকে বাঁচিয়ে রাখবো।”
নীলা কিছুক্ষণ চুপ থেকে জিজ্ঞেস করল,
— “তাহলে আমি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারি?”
রিফাত অবাক হয় না, বরং হাসিমুখে বলে,
— “তুমি ডাক্তার হতে চেয়েছিলে, তাই না? এখন থেকো আমার বউ, কাল থেকে থেকো একজন স্বপ্নবাজ ছাত্রী। আমি থাকবো তোমার পাশে, ঠিক যেমনটা থাকি তোমার হাত ধরে।”
এই কথাগুলো শুনে নীলার চোখে জল চলে আসে। তবে সেটা ভয় বা কষ্টের না—এটা ছিল একেবারে নির্ভেজাল ভালোবাসার স্বস্তির অশ্রু।
ওরা দুজন তখন আবার জানালার পাশে দাঁড়িয়ে, একসাথে সূর্য ওঠা দেখছে।
রিফাত বলে,
— “ভোরের আলোটা আজ অনেক বেশি সুন্দর, কারণ আজকের সকালটা তোমাকে নিয়ে শুরু হয়েছে।”
নীলা মৃদু হাসে। এবার ভয় নয়, তার চোখে ভরসা।
next part?
Shefaliakter
Deletar comentário
Deletar comentário ?
hanif ahmed Romeo
Deletar comentário
Deletar comentário ?