10 w ·Vertalen

চন্দ্রমণির হার

চন্দ্রমণি ছিল ব্রাহ্মণপল্লির নিঃসন্তান বিধবা। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে সে নিজের উঠোনে ফুল ফলিয়ে, দেবতা পুজো করে দিন কাটাত। কেউ বলত সে ‘ভাগ্যহারা’, কেউ বলত ‘জ্বীন ধরেছে’। কিন্তু চন্দ্রমণির একটা আলাদা শক্তি ছিল—সে পূর্ণিমার রাতে চাঁদের আলোয় একা একা নাচত। কেউ তাকে সরাসরি দেখেনি, কিন্তু উঠোনের মাটিতে নাচের ছাপ পাওয়া যেত। কেউ কেউ বলত, এই নাচ কোনও মানুষী নাচ নয়, এর পেছনে কিছু অলৌকিক ব্যাপার আছে।

এক রাতে পূর্ণিমার পরদিন সকালের গল্প—চন্দ্রমণি আর নেই। তার ঘরের দরজা খোলা, রান্না করা খিচুড়ি গরম ছিল, কিন্তু সে নিজে উধাও। উঠোনে শুধু পড়ে ছিল তার সেই সোনালি পাথরের হার—যেটা সে কখনও খোলে না। সবাই জড়ো হলো, গ্রামপাল, ওঝা, এমনকি থানা পর্যন্ত খবর গেল। কিন্তু কেউ তার হদিস পেল না।

কিন্তু কাহিনি সেখানেই থামে না। যেদিন পূর্ণিমা আসে, সেই রাতের দ্বিতীয় প্রহরে উঠোনে ছায়ার মতো এক নারীকে দেখা যায়, সে নাচে—চুপচাপ, ধীরে ধীরে। কেউ কাছে গেলে ছায়া মিলিয়ে যায়। অনেকে বিশ্বাস করে, চন্দ্রমণি চাঁদের আলোয় ধরা পড়ে আজও সেই হার খুঁজে ফেরে—যেটা সে নিজ হাতে রেখে গিয়েছিল। কেউ আবার বলে, সে চাঁদের প্রেমে পড়েছিল, আর সেই প্রেমে আত্মসমর্পণ করেই হারিয়ে গেছে জোছনার জগতে।

#sifat10