তালপাতার মানিক
গোপালপুরের রামু রাখাল ছিল একেবারে সাদাসিধে লোক। দিনভর মাঠে গরু চরিয়ে, রাতে খড়ের উপর ঘুমাত। এক বর্ষার দিনে, সে একটি ঝড়ে উপড়ে পড়া তালগাছের গোড়ায় খুঁজে পেল একটা মোটা তালপাতা দিয়ে মোড়া কৌটো। খুলে দেখে চোখ ছানাবড়া—ভেতরে ছোট্ট একখানি মানিক, লালচে দীপ্তি ছড়ায়, যেন নিজের আলোয় জ্বলে।
সে ভেবেছিল পাথর, কিন্তু সেদিন রাতে ঘরে রেখে দেয়ার পর থেকেই অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে থাকে। অন্ধকার ঘর নিজে থেকেই আলোকিত হয়ে ওঠে, বাতাসে গন্ধ ছড়ায় শেওলার মতো, আর ঘুমের সময় রামু স্বপ্নে দেখতে পায় এক ফকির, যে বলে—“এই মানিক রক্ষা কর, কিন্তু নিজের লোভে ব্যবহার কোরো না।”
পরের সপ্তাহে গ্রামের জমিদার, মহাজন—সবাই জানতে পারে রামুর মানিকের কথা। কেউ চায় কিনে নিতে, কেউ ভয় দেখায়, কেউ আবার বলল, “ওটা অপদেবতার খেলা।” কিন্তু রামু কাউকে দেয় না।
এক রাতে হঠাৎ করে তার ঘরে আগুন লাগে। সবাই মিলে পানি এনে আগুন নেভায়, কিন্তু ঘর ছাই হয়ে যায়। ভোরবেলা ধ্বংসস্তূপে কেবল মানিকটা অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়, একেবারে জ্বলন্ত ছাইয়ের মধ্যে পড়ে থাকা।
সেদিন থেকে রামু মানিকটা নদীতে ফেলে দেয়। বলে—"যে জিনিস আলো দেয়, তার তাপে পুড়তেও হয়। আমি আলো নয়, শান্তি চাই।"
গ্রামে আজও একটা কথা প্রচলিত—“তালপাতায় মোড়া জিনিস সবসময় আশীর্বাদ নয়, কখনও তা অভিশাপও হতে পারে।”
#sifat10
Md Osman Goni
Eliminar comentario
¿ Seguro que deseas eliminar esté comentario ?