10 i ·Översätt

খেজুরতলায় ছায়া

পুরাতনপাড়া গ্রামের শেষপ্রান্তে একটা খেজুরবাগান ছিল, যার নিচে সন্ধ্যার পর কেউই যেতে চাইত না। গ্রামের লোকজন বলত, খেজুরতলায় বসলে ছায়া দেখা যায়—কিন্তু নিজের নয়। অনেকেই বলেছে, চাঁদের আলোয় বসে থাকলে দেখবে দুটো ছায়া—একটা নিজের, আর একটা অন্য কারও, যাকে চেনা যায় না।

একবার এক চঞ্চল ছেলে, নাম রাজীব, সাহস করে সন্ধ্যার পরে গিয়ে বসে। সঙ্গে ছিল লণ্ঠন আর একখানি আয়না। প্রথম কিছুক্ষণ কিছুই হয়নি, কিন্তু কিছু সময় পর হাওয়ার ঝাপটায় লণ্ঠন নিভে যায়। হঠাৎ সে টের পায়—পায়ের পাশে ছায়া পড়েছে, কিন্তু একটাই নয়। নিজের ছায়া একটু ছোট, আরেকটা দীর্ঘ, স্থির, মুখহীন।

সে পালিয়ে আসে। পরে বলে, “ছায়াটা নড়েনি, কিন্তু আমি যেদিকেই গেছি, সেটা আমার সঙ্গে ছিল।”

গ্রামের এক বৃদ্ধ বলেন, বহু বছর আগে সেই বাগানে এক গৃহবধূ হারিয়ে গিয়েছিল। তার নাম ছিল কুন্তলা। কাউকে কিছু না বলে একদিন বিকেলে বাগানে গিয়েছিল, আর ফেরেনি। কেউ বলে, সে স্বামীহারা হয়ে নিজের অস্তিত্ব ভুলে গিয়েছিল, আর সেই আত্মভোলা অস্তিত্বই আজ ছায়া হয়ে ফিরে ফিরে আসে।

লোকেরা বলে, কুন্তলা আজও খোঁজে তার নিজের ছায়া। কারও ছায়া একটু দুঃখী হলে বা কেউ একা থাকলে, তার পাশে সে দাঁড়িয়ে পড়ে—নীরবে, অচেনা হয়ে।

তবে কেউ তার দিকে না তাকালেই সে চলে যায়।

#sifat10