10 u ·Prevedi

সাত রকমের কুয়ো

উত্তর হরিপুর গ্রামে ছিল এক আশ্চর্য কুয়োঘাট। সেখানে একসঙ্গে ছিল সাতটি কুয়ো, সার দিয়ে সাজানো, যেন কেউ পরিকল্পনা করে বানিয়েছে। প্রত্যেকটা কুয়ো থেকে উঠত একেক রকম জল—কোনটা ঠান্ডা বরফের মতো, কোনটা গরম, কোনটা নীলচে, আবার কোনটা ধোঁয়াটে।

লোকেরা বলত, এই কুয়োগুলো সাত ভাইয়ের তৈরি, যারা একসঙ্গে ছিল, কিন্তু কারও বিশ্বাসঘাতকতায় সবাই মারা যায়। মারা যাওয়ার আগে তারা প্রতিটি কুয়োয় নিজেদের “চিহ্ন” রেখে যায়—কেউ গ্লানি, কেউ রাগ, কেউ ভালোবাসা, কেউ প্রতারণা।

গ্রামের নিয়ম ছিল, সন্ধ্যার পরে কেউ ওই কুয়োঘাটে যেত না। কারণ গুজব ছিল, যদি ভুল কুয়ো থেকে জল তোলা হয়, তবে কেউ না কেউ হারিয়ে যায়, কিংবা তাদের মন পাল্টে যায় একেবারে।

একবার গ্রামেরই এক তরুণ, রণ, রাত দশটার সময় চুপিচুপি যায় ওই ঘাটে। কারণ তার মা অসুস্থ, সে ভেবেছিল—"এই কুয়োর জলে হয়ত কিছু গুণ আছে।" সে তুলে আনে ধোঁয়াটে কুয়োর জল। মাকে খাওয়ায়।

রাতের মধ্যে মায়ের জ্বর কমে যায়, কিন্তু সকালবেলা রণ আর নিজের ভাষায় কথা বলে না। সে এক অদ্ভুত ভাষায় কথা বলে, কেউ বোঝে না। এক ওঝা বলে, “ওর কণ্ঠে অন্য কিছুর ছায়া ঢুকে গেছে।”

তখন থেকেই গ্রামের নিয়ম জারি হয়—দিনে কুয়ো, রাতে নয়।

লোকজন আজও বলে, সেই সাত ভাইয়ের আত্মা ঘোরে কুয়োর নিচে। ভুল জল তুললে, তারা ভুল মানুষকে তুলে নেয়।

#sifat10