10 C ·Traduzir

রক্তরঙা কাগজ

পূর্বমল্লিকাদের ভগ্নপ্রায় পাঠশালায় হঠাৎ একদিন সন্ধ্যায় ঢুকে পড়ে গ্রামের তরুণ শুভ। তার ইচ্ছে ছিল ভাঙাচোরা জায়গাগুলো ছবি তুলে নেবে, পুরোনো ইতিহাসের গল্প তৈরি করবে। সে ক্যামেরা নিয়ে ঘোরার সময় পুরনো আলমারির ভেতরে খুঁজে পায় একটা মোটা খাতা—মলাট ছেঁড়া, কিন্তু ভেতরের কাগজ লালচে।

প্রথমে ভাবে, হয়তো পুরোনো হয়ে গিয়ে কাগজ এমন হয়েছে। কিন্তু একসময় খেয়াল করে—লেখাগুলো যেন হালকা আঁচড়ে লেখা, কালি নয়, আর কাগজের লাল রঙটা যেন ধীরে ধীরে গাঢ় হচ্ছে।

সেই রাতে সে খাতাটা নিয়ে ঘুমায়। মাঝরাতে চোখ খুলে দেখে, খাতাটা বিছানার ওপর নিজে থেকেই খুলে গেছে। পাতায় লেখা হচ্ছে নতুন কিছু—অদ্ভুত অক্ষরে, যেন কেউ অদৃশ্য হাতে লিখছে। শুভ পড়তে না পারলেও শব্দগুলো কানে বাজে—নরম, অথচ হিমশীতল।

পরদিন সকালে খাতাটা পুড়িয়ে ফেলতে চায় সে। কিন্তু খাতাটা পুড়েও যায় না—অলপ আলো, অলপ ধোঁয়া, কিন্তু পাতাগুলো অক্ষত থেকে যায়। তখন থেকেই শুভর চারপাশে দেখা যায় ছায়াময় কিছু চলাচল। আর প্রতিদিন সেই খাতায় একটি নতুন নাম লেখা হয়—প্রথমে অচেনা, পরে পরিচিত।

একদিন লেখা হয়—"শুভ মালিক, আজ তোমার পালা।"

সে রাতেই শুভ নিখোঁজ। খাতাটা পাওয়া যায় পাঠশালার দরজায়, খোলা পাতায় রক্তরঙা অক্ষরে লেখা—"লেখা শেষ নয়, কেবল শুরু।"

গ্রামে আজও কেউ পাঠশালার আলমারিতে হাত দেয় না। বলে, "যে কাগজে নাম ওঠে, সে হারিয়ে যায় গল্পের পাতায়।"

#sifat10