10 w ·Translate

ভগ্নপুরানের ডাক

শহরের এক প্রাচীন বাজারের শেষপ্রান্তে একটি ভগ্নপ্রায় বাড়ি ছিল, যেখানে বহু বছর ধরে কেউ বাস করত না। বাড়িটির এক কোণে একটা ছোট্ট ঘর, যেটার দরজা সবসময় খোলা থাকত। লোকমুখে শোনা যেত, ওই ঘর থেকে মাঝে মাঝে ভঙ্গুর পুরোনো কোনো ডাকে শোনা যায়—যা শুনলেই অদ্ভুত এক থরথরানি শরীর ছুঁয়ে যায়।

রহিম, তরুণ একজন ছাত্র, ওই ভয়ংকর গল্প শুনে কৌতূহলবশত রাতে সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। সন্ধ্যার পর সে বাজারের গোধূলির আলোর মাঝেই সেই বাড়ির কাছে পৌঁছল। বাড়িটা দেখতে পুরনো, দেয়ালে ছোপ ছোপ কালো ছোপ, আর ভেতর থেকে গন্ধ উঠছিল মাটির মিশ্রিত ধুলোয়ের।

রহিম ধীরে ধীরে সেই ঘরের ভেতরে ঢুকল। ঘরটা অন্ধকার, কিন্তু দেয়ালে ঝলমলে একটি মোটা বই রাখা ছিল। বই খুলতেই ধুলো উঠল আর এক অদ্ভুত গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ল। বইয়ের পাতায় কিছু লেখা ছিল, কিন্তু সেটা বোধগম্য নয়, যেন কোনো প্রাচীন ভাষায় লেখা।

রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘরের তাপমাত্রা হঠাৎ কমতে লাগল। হঠাৎ একটি ফিসফিসানি শব্দ কানে এল, “আসো… অপেক্ষা করছি…” রহিমের হৃদস্পন্দন বেড়ে গেল। সে ঘর থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করল, কিন্তু দরজাটা যেন নিজেরাই বন্ধ হয়ে গেল।

ঘরের ভেতর এক একটা বাতাসের ঝাপটা এল, যা যেন তাকে টেনে নিচ্ছে, কোনো অদৃশ্য শক্তি। সে হিমশীতল অনুভব করল, হাত-পা কাঁপতে লাগল। ধীরে ধীরে সে বুঝতে পারল, সে শুধু বাড়ির নয়, সময়ের বেষ্টনীতে আটকে গেছে।

রাত পার হয়ে সকালে রহিমের কোনো সন্ধান পাওয়া গেল না। কিন্তু বাড়ির দরজার কাছে তার নাম লেখা ছিল, যেন কেউ তাকে অপেক্ষা করছে ফিরবার জন্য।

গ্রামের কেউ জানত না সে কীভাবে হারিয়ে গেল, কিন্তু এই গল্প শোনার পর কেউই আর ওই বাড়ির কাছাকাছি যায়নি।

#sifat10

image