তারা বলল, "আমাদের নিয়মিত কাজ ছিল, রাত গভীর হলে অল্প পরিমাণ সুড়ঙ্গ খনন করা এবং সাথে ঐ মাটিগুলো চামড়ার মজকে ভর্তি করে অতি সন্তর্পণে মদীনার বাইরে নিয়ে ফেলে আসা। আজ দীর্ঘ তিন বৎসর যাবত এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজে আমরা অনবরত ব্যস্ত আছি। যে সময় আমরা রওজা মোবারকের নিকট পৌছে গেলাম এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলাম যে, এক সপ্তাহের মধ্যে বিশ্বনবীর লাশ বের করে নিয়ে যাব, ঠিক সে সময় ধরে আমাদের মনে হল, আকাশ যেন ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে। জমীন যেন প্রচন্ড ভূমিকম্পে থরথর করে কাঁপছে। যেন সমগ্র পৃথিবী জুড়ে মহাপ্রলয় সংঘটিত হচ্ছে। অবস্থা এতাটাই শোচনীয় রূপ ধারণ করল, মনে হল সুড়ঙ্গের ভিতরেই যেন আমরা সমাধিস্থ হয়ে পড়ব। এ অবস্থা প্রত্যক্ষ করে ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে আমরা কাজ বন্ধ করে রেখেছি।"
তাদের বক্তব্যে সুলতানের নিকট সব কিছুই পরিস্কার হয়ে গেল। তাই তিনি লোক দুটোকে নযীর বিহীন শাস্তি দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন । যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর এমন দু:সাহস দেখাতে না পারে।
তিনি মসজিদ হতে অর্ধ মাইল দূরে একটি বিশাল ময়দানে বিশ তাহ উঁচু একটি কাঠের মঞ্চ তৈরী করলেন। সাথে সাথে সংবাদ পাঠিয়ে মদীনা ও মদীনার আশেপাশের লোকদেরকে উক্ত ময়দানে হাজির হওয়ার নির্দেশ প্রদান করলেন।
নির্ধারিত সময়ে লক্ষ লক্ষ লোক উক্ত মাঠে সমবেত হল। সুলতান নূরুদ্দীন জাঙ্কি (র অপরাধী লোক দুটোকে লৌহ শিকলে আবদ্ধ করে মঞ্চের উপর বসালেন । তারপর বিশাল জনসমুদ্রের মাঝে তাদের হীন চক্রান্ত ও ঘৃণ্য তৎপরতার কথা উল্লেখ করলেন।
সুলতান নূরুদ্দীন জাঙ্কি (র -এর বক্তব্য শ্রবণ করে লোকজন বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেল। তারা এ ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করল। সুলতান বললেন- হ্যাঁ, এদের শাস্তি দৃষ্টান্তমূলকই হবে।
তিনি লোকদেরকে বিপুল পরিমাণ লাকড়ী সংগ্রহের নির্দেশ দিলেন। তারপর লক্ষ জনতার সামনে সেই ইহুদী দুটোকে মঞ্চের নিম্নভাগে আগুন লাগিয়ে পুড়ে ভস্ম করে ফেলেন। কোন কোন বর্ণনায় আছে, সেই আগুন নাকি দীর্ঘ এগার দিন পর্যন্ত জ্বলছিল।
অত:পর তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে এক হাজার মন সিসা গলিয়ে রওজা শরীফের চতুষ্পার্শে মজবুত প্রাচীর নির্মাণ করে দেন। যেন ভবিষ্যতে আর কেউ প্রিয় নবীজির কবর পর্যন্ত পৌছাতে সক্ষম না হয়। তারপর তিনি কায়মনোবাক্যে আল্লাহ্পাকের শুকরিয়া আদায় করলেন এবং তাকে যে এত বড় খেদমতের জন্য কবুল করা হল সেজন্য সপ্তাহকাল ব্যাপী আনন্দাশ্রু বিসর্জন দিলেন। ইতিহাসের পাতা থেকে অবগত হওয়া যায় যে, নূরুদ্দীন জাঙ্কি (র ইন্তিকাল করলে অসীয়ত মোতাবেক তার লাশকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা মোবারকের অতি নিকটে দাফন করা হয়।
MD Masud Rana
Hapus Komentar
Apakah Anda yakin ingin menghapus komentar ini?
Munna Khan
Hapus Komentar
Apakah Anda yakin ingin menghapus komentar ini?