এরপর সেখানে গম বীজ বুনলো। সবাই তার চাষাবাদ করা ও পরিশ্রম করা দেখে তাকে পাগল ভাবতে শুরু করলাম। কেননা অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও প্রচন্ড খরাতে কোনভাবেই ফসল ফুলতে পারে না তাই। কিন্তু বুদ্ধিমান কৃষকটি বীজ বপন করার পর প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন। তার মনে প্রাণে বিশ্বাস ছিল আল্লাহ নিশ্চয়ই একদিন বৃষ্টি দিবেন আর সেখান থেকে তার ফসল ফলবে।
তার গম বীজ বোনার কয়েকদিন পরেই বৃষ্টি হলো। তার প্রত্যেকটি গম বীজ থেকে চারা গজালো এবং তরতর করে বড় হওয়া শুরু করলো। কৃষকটি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করলেন। অন্য সবাই তার দিকে দেখে অবাক হয়ে গেল। কেননা সে সময় বীজ বপন করার সময় পেরিয়ে গিয়েছিল।
গল্প থেকে শিক্ষাঃ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও ভরসা রাখুন কখনো নিজে হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন না। যদি হাত গুটিয়ে বসে থাকেন সে ক্ষেত্রে ব্যর্থ ও ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন পরিশ্রম করুন। পরিশ্রম করলে নিশ্চয়ই আল্লাহ সেখানে ভালো ফলাফল দেবেন। হাত গুটিয়ে বসে থাকলে বাকি কৃষকের মত আপনাকেও পরে পস্তাতে হবে।
ইসলামিক শিক্ষনীয় ছোটগল্প ।। ধৈর্যের উপহার।।
এক যুবক অনেক লেখাপড়া করেছে কিন্তু কোন চাকরি পাচ্ছে না। চাকরির অভাবে দীর্ঘদিন বেকার থেকেছে। কিন্তু যুবকটির ইচ্ছে ছিল সে অনেক সম্পদশালী হবে, অনেক অর্থবান হবে। কিন্তু কিভাবে হবে তার কোন চাকরি নেই, কিভাবে রোজগার করবেন কোথা থেকে টাকা ইনকাম করবে। যুবকটি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তো এবং আল্লাহকে মনে মনে বিশ্বাস করতো।
আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন যাতে আল্লাহ তাকে প্রচুর টাকা উপহার হিসেবে দেন। কিন্তু তার ধৈর্য্যে কিছু কমতি ছিল। তিনি ওর ধৈর্য ছিলেন মাঝে মাঝে ধৈর্য হারিয়েও ফেলতেন নিশ্চয়ই তিনি কখনো আয় রোজগার করতে পারবেন না, তার স্বপ্নগুলো পূর্ণ হবে না। মাঝে মাঝে সে মনে মনে আল্লাহর উপর রাগও করতেন। কিন্তু তিনি আল্লাহর ইবাদত করে যেতেন।
এভাবে বেশ কিছু বছর যাওয়ার পর তার কোন ভাবে চাকরি হচ্ছিল না। জীবিকা নির্বাহের সন্ধানে তাকে নিশ্চয়ই কিছু করতে হবে। একদিন সে মনে মনে ভাবলো সে একটি দোকানে কাজ করবে হোক সেটা যে কোন দোকান। কিন্তু তার মনে অনেকটাই লজ্জাবোধ হচ্ছিল। কেননা সে এতগুলো লেখাপড়া করার পর অন্যের দোকানে কাজ করবে বিষয়টা কেমন দেখাবে।
কিন্তু জীবিকা নির্বাহের সন্ধানে অবশ্যই তাকে পরিশ্রম করতে হবে। তাই সে একদিন এক কাপড়ের দোকানে কাজের সন্ধান করছিল, এরপর সে কাজ পেয়েও গেল। কাপড়ের দোকানের লোকটি ছিল বৃদ্ধ, সে লোকটিকে সে চাচা বলে ডাকতো। এভাবে বেশ কয়েক বছর কেটে গেল। যুবকটি তার দোকানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো সে ছিল সৎ, পরিশ্রমী, নামাজী।
কয়েক বছর পর বৃদ্ধ ব্যক্তিটি অসুস্থ হয়ে গেল বৃদ্ধ ব্যক্তিটি যুবককে ডেকে বলল আমার কোন ছেলে সন্তান নেই, আমার স্ত্রী মারা গেছে, শুধু আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। তুমি দীর্ঘদিন আমার দোকানে কাজ করেছ, তোমার সততায় আমি মুগ্ধ আমি চাই তুমি আমার মেয়েকে বিয়ে কর। যুবকটি কখনো ভাবতে পারেনি সে এমন একটা পরিবারে বিয়ে করতে পারবে।