রহস্য ময় ঘটধা

দেবাশিস ব্যানার্জী, একজন প্রসিদ্ধ জামাকাপড় ব্যবসায়ী, তার পরিবারের সাথে কলকাতায় তাদের নতুন বাড়ির দিকে যাচ্ছ?

সঞ্জয় তার ব্যস্ততার কারণে এদেশে খুব একটা আসার সময় পায় না। যদিও তারা তাদের মেয়ে অর্পিতাকে মিস করছেন, দেবাশিস ব্যানার্জী এবং সুমনা তাদের নতুন বাড়ির মালিকানা উপভোগ করেছিলেন। অনেকক্ষণ গাড়ি চালানোর পর তারা তাদের গন্তব্যে পৌঁছে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। সুমনা আশেপাশের এলাকা আর সেই এলাকায় থাকা লোকেদের সাথে আলাপ জমাবার চেষ্টা করতে লাগল। তারা তাদের বাড়ির কাজের মেয়ে বেনীকে তাদের নতুন বাসাটা পুরোপুরি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে বলে দিলেন। সুমনা যখন বেনীকে বাড়ির সকল কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছিল, তখনই “টিং টং” শব্দে দরজার বেল বেজে উঠল। বেনী দরজা খুলে দেখল যে পাড়ার প্রতিবেশীরা তাদের মালিক-মালকিনের সাথে পরিচয় করার জন্য এসেছে। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন মুখার্জী পরিবার, পেশাগতভাবে ব্রাক্ষ্মণ আর মন্দিরের পূজারি, সাথে একজন জ্যোতিষী যারা তাদের বাড়ির সামনে থাকেন। আরেকজন হলেন বড়ুয়া পরিবার যারা তাদের বাড়ির ডানদিকে থাকেন আর পেশায় স্কুলশিক্ষক। তারপর শকুন্তলা চৌধুরী যিনি একজন শাড়ি বিক্রেতা, তিনি তাদের বাড়ির বাঁদিকে থাকেন। দরজা খুলতেই ওরা সবাই মিলে ভেতরে ঢুকে এলেন সুমনা আর দেবাশিসবাবুর সাথে আলাপ করার জন্য। “ভৌভৌ, ভৌভৌ”………..তাদের পোষা কুকুর মাতিন নতুন প্রতিবেশীদের দেখে ঘেউ ঘেউ করে ওঠে। আতঙ্কিত প্রতিবেশীরা চলে যেতে যাচ্ছিল কিন্তু যাই হোক, বেনী মাতিনকে ম্যানেজ করে ভিতরে নিয়ে চলে গেল। দেবাশিসবাবু আর তার স্ত্রী সুমনা তাদের প্রতিবেশীদের সাথে ভাল সময় কাটালেন। সুমনা নতুন প্রতিবেশীদের সাথে মিশে খুব খুশি কারণ সে গল্প করার জন্য পাড়ার মহিলাদের পেয়ে গিয়েছিল। বেনী মেঝে পরিষ্কার করার ভান করে চুপচাপ তাদের কথাবার্তা আড়ালে শুনছিল। সুমনা তাকে লক্ষ্য করে আর প্রতিবেশীরা চলে যাওয়ার পরে তাকে আরও কাজ দেয়। বেনী বিড়বিড় করে বলল- “ঈশ্বর তোমাকে কখনো ক্ষমা করবেন না কারণ তিনি সব দেখছেন। ”পরদিন সকালে বেনী দোকানের দিকে রওনা দেয় কারণ তার সুমনাদের বাড়িতে থাকার জন্য আরও কিছু কাপড় আনতে হবে। দেবাশিস ব্যানার্জীকে তার ব্যবসায়িক কাজের জন্য দিল্লী যেতে হল। তিনি চেয়েছিলেন যে সুমনা তার ব্যবসায়িক কাজে তার সাথে দিল্লীতে থাকুক কিন্তু বিমানের সমস্ত টিকিট বিক্রি হয়ে যাওয়ায় সুমনাকে বাড়িতে একাই রেখে আসতে হয়েছিল। দেবাশিসবাবুর একজন কর্মচারী আর পোষ্য কুকুর মাতিন মিলে উনাকে বিমানবন্দরে নিয়ে গেল। ফ্লাইটে চড়ার জন্য দেবাশিসবাবুকে বিমানবন্দরে ছেড়ে দেওয়ার পর উনার এক কর্মচারী আবীর তাদের পোষ্য কুকুর মাতিনকে নিয়ে পুরো কলকাতা শহর ঘুরে দেখার জন্য এক লম্বা ড্রাইভে চলে যায় কারণ সুমনা বাড়িতে একা থাকায় বিরক্ত হয়ে পড়ছিল। দেবাশিসবাবুদের নতুন বাড়িতে ২টো বেডরুম (একটা ছোট আর একটা বড় বেডরুম যার প্রত্যেকটার ভিতরে ওয়াশরুম এবং বাথটব রয়েছে), বড় হল এবং রান্নাঘর যা সামনের বাগানের দিকে খোলা যেখানে ফুলের বাগিচা সহ সুন্দরভাবে সাজানো একটা বাগান রয়েছে। গতকাল বেনী বড় বেডরুমটা পরিষ্কার করতে পারে নি কারণ ওটা বাইরে থেকে বন্ধ করা ছিল। যাইহোক, অনেক চেষ্টার পর সুমনা সেই বড় বেডরুমের তালা খুলে ভেতরে ঢুকে দেখে যে অন্যান্য রুমগুলোর চেয়ে সেই বড় বেডরুমটা অনেক বেশী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। ভেতরের আসবাবপত্রগুলো একদম নতুন আর সুষ্ঠভাবে সাজানো। সুমনা আরও দেখতে পায় যে বাথরুমটা তাদের ছোট বেডরুমের চেয়ে অনেক বেশী জায়গা নিয়ে তৈরী করা। সে যখন সেই বাথরুমে প্রবেশ করে, বাথরুমের দরজাটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। সুমনা ভাবল যে বাথরুমের ভিতরে অটোলক সিস্টেম করা থাকতে পারে কিন্তু তার ভাবনা যে কত ভুল, সেটা সে আর কিছুক্ষণ পরেই টের পেল। বাথরুমের প্রবেশ করার পর হঠাৎ একটা আওয়াজ শুনতে পেল সুমনা- ”শ…শ….শ। “ সে ঘুরে দাঁড়াল কিন্তু কাউকে দেখতে না পেয়ে মনে মনে নিজেকেই গালাগাল দিতে লাগল। তারপর সে যেই না জলের কল খুলল, সেখান থেকে জলের বদলে রক্তের স্রোত বেরিয়ে এল। এই দৃশ্য দেখে সুমনা খুব ভয় পেয়ে গেলে আর অবিলম্বে কলটা বন্ধ করে দিল। সুমনার মনে হল যে দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হওয়ার কারণে সে এসব ভুলভাল দেখছে কারণ তার বয়স এখন প্রায় ৪৫। তাই সে স্নানে চলে গেল কিন্তু শাওয়ার চালু করতেই আবার সে লক্ষ্য করল সেখান থেকে রক্তের ধারা বেরিয়ে আসছে। একটা বাচ্চা মেয়ের ধূমায়মান অবয়ব সেখানে হাজির হয়ে তাকে বলল- “আমাকে আমার মা-বাবার কাছে নিয়ে চলো না প্লিজ। আমি তাদের অনেকদিন হয়ে গেল দেখতে পাই না। আমি আমার মা-বাবাকে দেখতে চাই আর কাকার আসল ঘৃণ্য় রূপ প্রকাশ করতে চাই। ”সুমনা ভয়ে চিৎকার করে বলল- “তুমি কে আর আমার থেকে কি চাও? তোমার মাকে তো আমি চিনিও না। তাহলে কিভাবে আমি তোমাকে তোমার মায়ের কাছে নিয়ে যাব? " কিন্তু উত্তর না পাওয়ায় আতঙ্কে পালানোর জন্য সুমনা ভিতর থেকে তালাবন্ধ বাথরুমটা খুলতে চেষ্টা করল কিন্তু রুমটা না খোলায় সে আপাদমস্তক ঘামতে লাগল, তার হাত-পা থরথর করে কাঁপছিল। সুমনা অজ্ঞান হয়ে বাথরুমের মধ্যেই পড়ে গেল। অন্যদিকে আবীর আর মাতিন কলকাতার দর্শনীয় স্থানগুলো উপভোগ করছিল। তারা আনন্দিত এই ভেবে যে তাদের কেউ একবারের জন্যও বিরক্ত করেনি। রাতের দিকে দেবাশিসবাবুর ফোন পাওয়ার পর, আবীর আর মাতিন উনাকে নিতে বিমানবন্দরে চলে যায়। যখন তারা বাড়িতে পৌঁছাল, তারা দেখল যে বাড়ির দরজা বন্ধ। দেবাশিসবাবু সুমনাকে কলিং বেল বাজিয়ে ডাকতে লাগলেন কিন্তু অনেকক্ষণ সাড়াশব্দ না পেয়ে তিনি একটু অবাক হয়ে গেলেন। তার কাছে বাড়ির ডুপ্লিকেট চাবি থাকায় তিনি তালা খুলে ঘরে ঢুকলেন আর সুমনার নাম ধরে ডাকতে লাগলেন কিন্তু সুমনার কোনও সাড়া নে পেয়ে পুরো বাড়ি জুড়ে তাকে খুঁজতে লাগলেন। অনেক খোঁজার পরেও তিনি কোথাও সুমনাকে দেখতে পেলেন না। এখন তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে সারাদিন তিনি সুমনার থেকে একটা ফোনও কেন পান নি। তিনি তাকে প্রায় সর্বত্র খুঁজলেন, তারপর সেই বড় বেডরুমের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে সেখানে গিয়ে ঢুকলেন যার বাথরুমটা ভিতর থেকে আটকানো ছিল। দেবাশিসবাবু ভেবেছিলেন যে হয়তো সুমনা সারাদিনের কাজের পরে ফ্রেশ হচ্ছে, তাই তিনি তাকে আর বিরক্ত করলেন না। এক ঘন্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও যখন সুমনা বাথরুম থেকে বের হল না, তখন তার একটু সন্দেহ হতে লাগল যে কি জানি সুমনার সাথে কিছু হয়েছে কিনা। তাই তিনি তাকে ডাক দিলেন- “সুমি, তুমি ঠিক আছ তো? আজ সারাদিন আমাকে কল করনি। তুমি কি আজ খুব ব্যস্ত ছিলে? "কিন্তু সুমনার কাছ থেকে কোন উত্তর না পাওয়ায় দেবাশিসবাবু এবার সত্যিই ভয় পেয়ে গেলেন। তিনি নীচ থেকে আবীরকে ডেকে বাথরুমের দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে দেখতে পেলেন যে সুমনা অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে আর থরথর করে প্রচণ্ড জ্বরে কাঁপছে। সুমনাকে সঙ্গে সঙ্গে বিছানায় শুয়ে দিয়ে ডাক্তার ডাকা হয়। প্রতিবেশীরা এই খবর পেয়ে সবাই তাদের বাড়িতে জড়ো হয়। তাকে পরীক্ষা করে ডাক্তাররা সেরকম বিশেষ কিছু দেখতে না পেয়ে বললেন- “হয় তো ভীতিকর কিছু দেখে তার মস্তিষ্কে প্রভাব পড়েছে। তাই, তিনি অজ্ঞান হয়ে গেছেন। কয়েকদিন বিশ্রাম নিলে সব ঠিক হয়ে যাবে। “কিন্তু বেশ কয়েকদিন কেটে যাওয়ার পরেও সুমনা সুস্থ হতে পারল না। চিকিত্সকরা কিছুতেই তার রোগ নিরাময় করতে পারছিলেন না। যত দিন যায়, দেবাশিস ব্যানার্জী অস্থির হয়ে পড়েন এবং তার আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন কারণ সুমনা দিনকে দিন আরও দুর্বল হয়ে পড়ছিল। তিনি তাদের মেয়ে অর্পিতাকে ফোন করে যা ঘটেছিল সে সম্পর্কে তাকে জানালেন। এদিকে আবীর, কাজের মেয়ে বেনী আর মাতিন তাদের স্বাধীনতা উপভোগ করেছিল কারণ তাদের দিকে নজর দেওয়ার মতন তখন কেউ ছিল না। একদিন মাতিন যখন ঘোরাঘুরি করছিল, তখন সে কিছু একটা শব্দ পেয়ে বড় বেডরুমে চলে যায় কারণ তার মনে হয়েছিল যে এর ভিতরে এমন কিছু আছে যা দেখে সুমনা সেইদিন খুব ভয় পেয়েছিল। অনেকক্ষণ বাথরুমে যাওয়ার পর মাতিন আর ফিরে এল না, তখন দেবাশিসবাবু, বেনী আর আবীর মিলে মাতিনকে খুঁজতে লাগল। অনেকক্ষণ ধরে খোঁজার পর শেষ পর্যন্ত তারা মাতিনকে সেই বাথরুমে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। এই ঘটনা সবাইকে আতঙ্কে ফেলে দেয়। আশেপাশের প্রতিবেশীরা আলোচনা করতে লাগে- “ওই বাড়িটা খুবই বিপজ্জনক। এটা ভুতুড়ে, সেই ধর্ষিতা মেয়েটার আত্মা এখনও সেই বাড়িতেই আছে। সে কাউকে শান্তিতে থাকতে দেবে না। ” দেবাশিস ব্যানার্জী তাদের কথাবার্তা শুনে তাদের কাছে এই ধর্ষিতা মেয়েটার সম্পর্কে বিস্তারিত জিজ্ঞাসা করলেন কিন্তু কেউই তাকে এই ব্যাপারে কিছু জানাল না পাছে তাদের পরিবারের কোনও ক্ষতি হয় এই ভয়ে। অর্পিতা তার স্বামী সঞ্জয়ের সাথে তার মাকে দেখতে চলে আসে কলকাতায়। অর্পিতাকে দেখার পর ওর মা সুমনা কোন প্রতিক্রিয়া না জানিয়ে ওর দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল। অর্পিতা কেঁদে বলল- “মা, আমি জানি তুমি আমার উপর রাগ করেছ। আমি দুঃখিত, সঞ্জয় তার নতুন প্রজেক্ট নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকায় একদম আসতে পারিনি। তবে এখন চিন্তা করবে না কারণ আমি তোমার যত্ন নিতে এসেছি। তুমি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোথাও যাব না। " দেবাশিসবাবু তার মেয়েকে জড়িয়ে ধরে বললেন- "তোমার মা আমাদের কথা শুনতে পাচ্ছে কিন্তু কথা বলতে পারবে না। আমি তাকে সম্ভাব্য সেরা চিকিৎসক দেখিয়েছিলাম কিন্তু কোনও ডাক্তার তাকে সুস্থ করতে পারেনি। ” সঞ্জয় নীরবে তাদের কথা শুনছিল- মনে হচ্ছিল সে কিছুটা টেনশনে ছিল। পরদিন প্রতিবেশীরা সুমনার সাথে দেখা করতে আসে। তাদের মধ্যে একজন সঞ্জয়কে চিনতে পারে কারণ কয়েক দশক আগে তার ভাইয়ের পরিবারের সাথে এই বাড়িতেই সে থাকত যখন সে তার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ছিল। অর্পিতা এবং তার পরিবার এই সম্পর্কে কিছু জানত না। তাই তারা এই কথা শুনে অবাক হয়েছিল। সেই রাতে সঞ্জয় এবং অর্পিতার মধ্যে তর্ক হল যখন সঞ্জয় বলল যে সে লণ্ডনে ফিরে যেতে চায় কারণ সে তার কাজ থেকে বেশীদিন দূরে থাকতে পারবে না। অর্পিতা তাকে বলেছিল যে সে এখানে আসার সময় তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে তার মা সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সে তাদের সাথে থাকবে। অর্পিতা বলল- "সঞ্জয়, তুমি আমাকে তোমার দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভুলে যাচ্ছ। " সঞ্জয় উত্তর দিল- "আমি অফিস থেকে কল পাচ্ছি, ফিরে যেতে হবে, এটা জরুরি, বোঝার চেষ্টা করো প্লিজ। " দেবাশিসবাবু বাইরে থেকে তাদের কথা শুনছিলেন, তিনি বুঝতে পারছিলেন যে সঞ্জয়ের অর্পিতার প্রতি আচরণে বিরক্তিভাব প্রকাশ পাচ্ছে আর সঞ্জয়ের হাবভাব তার কাছে বড় অদ্ভুত ঠেকল। একদিন সকালে সঞ্জয় যখন বিমানবন্দরে যাচ্ছিল, হঠাৎ সেই রাস্তায় অনেকগুলো বিশাল গাছ পড়ে যাওয়ায় পুলিশ সেই রাস্তা বন্ধ করে দেয়। প্রচুর যানজট ও অন্যান্য সমস্যার কারণে পুরো এলাকা জুড়ে কার্ফু জারী করা হয়েছিল। তাই তাকে বিফলমনোরথ হয়ে বাড়িতেই ফিরতে হলো। তাকে ফিরতে দেখে অর্পিতা খুব খুশি হল কিন্তু দেবাশিসবাবু কিছুটা বিব্রত বোধ করলেন। তিনি গোপনে অর্পিতাকে একা ডেকে বললেন- "মাম্পি, তুই কি তোর বিয়েতে খুশি? তুই সঞ্জয় আর তার পরিবার সম্পর্কে কতদূর জানিস? "অর্পিতা- "বাবা, আমি গত দুই বছর ধরে সঞ্জয়কে চিনি। সে খুব ভালো লোক, আমাকে অনেক যত্ন করে। কয়েক মাস আমরা রিলেশনশিপে ছিলাম আর এই বছরের গোড়ার দিকে বিয়ে করেছি…এতটাই। এর বেশী কিছু জানি না। “দেবাশিসবাবু তার মুখে হাসি দিয়ে বলেন- “হ্যাঁ, আমিও মনে করি সে একজন ভালো লোক, আমাদের সবার যত্ন নেয়। ” সেই রাতে অর্পিতা স্নান করবার জন্য গিয়েছিল সেই বাথরুমে কিন্তু কাজের মেয়ে বেনী তাকে বাধা দিল- “দিদি, ওই বাথরুমটা ব্যবহার করবেন না। আমি লোকেদের বলতে শুনেছি যে এটা ভুতুড়ে। সেই ধর্ষিতা মেয়েটার আত্মা আজও এখানেই আছে। “অর্পিতা বেনীর কথা হেসে উড়িয়ে দিল কারণ সে এই সব জিনিসে বিশ্বাস করে না। দু’ঘন্টা পার হয়ে গেলেও অর্পিতা বাইরে এলো না দেখে বেনী ভয় পেয়ে সবাইকে ডাকল কিন্তু অর্পিতাকে ঠিকঠাক বেরিয়ে আসতে দেখে তারা সবাই অবাক হয়ে গেল। অনেক রাত হয়ে গেছে বলে তারা সবাই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ল। আজ রাতে অর্পিতা এবং সঞ্জয় সেই বড় বেডরুমে ঘুমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সারাদিনের ক্লান্তিতে সঞ্জয় একেবারে ঘুমিয়ে পড়েছিল। আচমকা অর্পিতা সঞ্জয়ের কানের কাছে অদ্ভুত শব্দে বলতে লাগল- “সঞ্জয় কাকু, কেমন আছো? এতদিন পর দেখা হচ্ছে। " সঞ্জয় চিৎকার করে উঠল- "অর্পিতা, তুমি কি করছ এসব? তোমার কি হয়েছে? পাগল হয়ে গিয়েছ নাকি? ”অর্পিতা (অদ্ভুত শব্দে)- “শ….শ….শ। “সঞ্জয় এই দৃশ্য দেখে পালানোর জন্য দরজার দিকে দৌড়ে গেল কিন্তু দরজাটা খুলল না। কয়েক বছর আগে এই বাথরুমেই ধর্ষণ এবং নির্মমভাবে হত্যা করা একটা ছোট মেয়ের অবয়ব সেখানে উপস্থিত হল। সে বলছিল- ”সঞ্জয় কাকু, আশা করি তুমি আমাকে চিনতে পারছ। আমি তোমার চিকু যাকে তুমি নিজের মেয়ের মত দেখতে। ”সঞ্জয় চিৎকার করে বলল- “চিকু, তুমি এখানে কি করছ? তুমি কিভাবে


MD SOHAG KHAN

107 blog posts

Reacties