জীবনগুলো

জীবন আমার দুটো শহরে ভাগ হয়ে যায়। ময়মনসিংহে বাড়ি, আত্মীয় স্বজন, চাকরি। ঢাকায় সাহিত্য,

জীবন আমার দুটো শহরে ভাগ হয়ে যায়। ময়মনসিংহে বাড়ি, আত্মীয় স্বজন, চাকরি। ঢাকায় সাহিত্য, সংস্কৃতি, বন্ধুবান্ধব। ঢাকা আমাকে টানে খুব। হাতে টাকা হলেই বাসে নয়ত ট্রেনে চড়ি। ঢাকা যাওয়ার আরও একটি নতুন কারণ হল সুহৃদ। সুহৃদ এখন ঢাকায়। সুহদকে ঢাকা নিয়ে যাওয়া খুব সহজ ব্যপার ছিল না। ছোটদা এসে ওকে ধরে বেঁধে কাঁদিয়ে ভাসিয়ে নিয়ে গেলেন একবার, ঢাকার ইশকুলে ভর্তি করাবেন বলে। মাও বলেছিলেন, তিনি আর কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। এরপর মা নিজেই ঢাকায় গিয়ে ছোটদা আর গীতার হাতে পায়ে ধরে ঘরের ছেলেকে ঘরে নিয়ে এলেন, অবশ্য হাতে পায়ে ধরার দরকার ছিল না, গীতা এমনিতেই ছেলেকে বিদেয় করতে পারলে বাঁচে। ওর আচরণ দেখে গীতা আকাশ থেকে পড়ে। এ ছেলে তার নিজের, এ ছেলেকে সে গর্ভে ধারণ করেছে দীর্ঘ নমাস, তার গর্ভ থেকেই গড়িয়ে নেমেছে ছেলে, নাড়ির বন্ধন যদি থাকে কারও সঙ্গে, তা তার সঙ্গেই আছে, কিন্তু সে ডাকলে ছেলে কাছে আসবে, ঝাঁপিয়ে পড়বে তার কোলে, তা নয়ত দৌড়ে পালায়। চলে যায় ওর দাদুর কোলে নয়ত ফুপুদের কাছে। এত সাহস এই ছেলে পেল কোত্থেকে, গীতা বুঝে পায় না। রেগে গা আগুন করে বসে থাকে, গা থেকে ধোঁয়া বেরোয়। সেই ধোঁয়ার ভেতর থেকে গীতা চিৎকার করতে থাকে, ‘তোমার গুষ্ঠির মধ্যে পইড়া আমার ছেলে নষ্ট হইয়া গেছে। তাগর যদি এত ছেলে দরকার থাকে, তাইলে তারা বিয়াইয়া লউক একটা। গীতার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ছোটদা বলতে থাকেন, গীতা ও গীতা, আমি তোমার ছেলেকে তোমার কাছে যেমনেই হোক আইন্যা দিতাছি।’ এরকম শপথে গীতার মন ভরে না, ছোটদা তার মন ভরানোর জন্য বলেন যে সব দোষ তাঁর, তাঁর দোষেই আজ গীতাকে কষ্ট পেতে হচ্ছে, তাঁর উচিত ছিল না ছেলেকে জন্মের পর অবকাশে পাঠানো, তাঁর দোষেই আজ গীতার নিজের ছেলে আজ গীতার কাছ ঘেঁসতে চায় না। তাঁকে আরও বলতে হয় যে তাঁর মা আর তাঁর দু বোনের কারণে সুহৃদ নষ্ট হয়ে গেছে, ওকে মানুষ করতে হলে এখন গীতা ছাড়া গতি নেই। গীতা শোনে। চিৎকার আপাতত থামিয়ে সে ওঠে, ঢকঢক করে এক গেলাস জল খেয়ে সে ছোটদাকে ঘর থেকে বের করে শব্দ করে শোবার ঘরের দরজা বন্ধ করে টাকা পয়সা গয়নাগাটি আর শাড়িতে ঠাসা আলমারি খুলে ইস্ত্রি করা সুতির শাড়িগুলোর কিনার দিয়ে হাত ঢুকিয়ে সুহৃদের ছবির অ্যালবাম বের করে অবকাশে আমাাদের সঙ্গে তোলা ওর সব ছবি ছিঁড়ে টুকরো করে, আস্ত রাখে কেবল তার সঙ্গে সুহৃদের ছবিগুলো।

 

সুহৃদকে নিয়ে অবকাশে আমাদের আবেগ আর উচ্ছঅ!সের শেষ নেই। কদিন পর পরই ওর ছবি তোলা হয়, ইয়াসমিন তার এক বান্ধবীর


Rx Munna

446 Blog Postagens

Comentários