হেথা নয়, হেথা নয়, অন্য কোথা অন্য কোন্ খানে!’

হেথা নয়, হেথা নয়, অন্য কোথা অন্য কোন্ খানে!’

শেষ অবধি ভারত আমাকে ত্যাগ করতেই হল

হেথা নয়, হেথা নয়, অন্য কোথা অন্য কোন্ খানে!’

 

শেষ অবধি ভারত আমাকে ত্যাগ করতেই হল। সিদ্ধান্তটি আমি নিজেই নিই। নিতে হয়। এ ছাড়া, সত্যি বলতে কী, আমার উপায় ছিল না। আমার রক্তচাপ উদ্বাহু নৃত্য করে যাচ্ছে। মুহূর্তে কমছে, মুহূর্তে বাড়ছে। দুশ্চিন্তার ওপরও কিছু আর নির্ভর করছে না। রক্তচাপ কমানোর ওষুধ, আর যার রক্তচাপই কমাক, আমার রক্তচাপ কমাতে পারছে না। কিডনি আর চোখ পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন ডাক্তার। চোখের ডাক্তারের কাছে আমাকে নিয়ে যাওয়া হল। পরীক্ষা করে ডাক্তার বলে দিলেন, রেটিনোপ্যাথি ধরেছে চোখে। তার মানে চোখ আমার নষ্ট হওয়ার পথে।

 

রক্তচাপ যতবারই পরীক্ষা করছি, ততবারই অদ্ভুত সব রক্তচাপ দেখতে পাচ্ছি। আর যাকেই বিশ্বাস করা যায়, এই চাপকে করা যায় না। অন্য যে কোনো লোক কবেই মরে যেতো এই চাপে। আমি কী করে বেঁচে থাকি জানি না। রক্তচাপ দাবিয়ে রাখার ব্যবস্থা হয় বটে, তবে বছর পার হওয়ার পর যে ভয়ংকর সংবাদটি আমাকে নিউইয়র্কের রক্তচাপ বিশেষজ্ঞরা দিয়েছেন, তা হল, আমার রক্তচাপের চরিত্র এখন এমনই দাঁড়িয়ে গেছে, সে কখনও কোনো ওষুধে বশ মানবে না, সে তার নিজের খুশি মতো, যখন ইচ্ছে আকাশে উঠবে, যখন ইচ্ছে পাতালে ঝাঁপ দেবে। এমন রক্তচাপ নিয়েই আমাকে বাঁচতে হবে, যতদিন বাঁচি। নৃত্য যদি রক্ত একবার শিখে যায়, সে নৃত্য তার থামে না কিছুতেই। আমার রক্ত নৃত্য শিখেছে নিরাপদ বাড়ির চাপে আর তিন তিনটে ভুল ওষুধে।

 

পৃথিবীতে দুটো বাড়িকেই আমি বাড়ি বলে মনে করি, অথবা আমার বাড়ি বলে ভাবতে পারি। এক ঢাকায় শান্তিনগরের বাড়ি। দুই কলকাতার বাড়ি। যদিও কলকাতার বাড়িটি ভাড়া বাড়ি, কিন্তু বাড়িটির ভাড়া আমি দিয়েছি, অন্য কেউ নয়। আমার সব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সব ওখানেই। আর ওই দুটো বাড়িতেই আমার প্রবেশ নিষেধ। আমি শুধু ঢাকা বা কলকাতা শহরের আমার বাড়িতে নয়, যে দেশে ওই শহরগুলো, সেই দেশগুলোতেও যেতে পারবো না, আমি নিষিদ্ধ। পশ্চিমের দেশে আমার নির্বাসন জীবন শুরু হয়। এই নির্বাসন সারা জীবনের, নাকি ক্ষণিকের, কিছুই আমার জানা নেই। অনিশ্চয়তার কাঁধে ভর দিয়ে আমাকে হাঁটতে হয়। কতদূর হাঁটতে পারবো, তাও আমার জানা নেই। দেশে দেশে ঘুরি ফিরি।

 

ভারত সরকার বিজনেস ক্লাস টিকিট দিয়েছে সুইডেনে যাওয়ার। ওয়ান ওয়ে টিকিট। পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজস্থান যাওয়ার টিকিট দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ওই টিকিটও ছিল ওয়ান ওয়ে টিকিট। কলকাতা টু জয়পুর। ভারত সরকার থেকেও দেওয়া হল, দিল্লি টুস্টকহোম। তবে ভারত সরকার থেকে বিদেয়টা অনেকটা ঘটা করেই হয়েছে। অনেকটা বাড়ির অতিথিকে পোলাও মাংস খাইয়ে বিদেয় জানানোর মতো। অথবা অনেকটা ফাঁসির আসামীকে যেমন ফাঁসির আগে যা চাওয়া হয়, তাই দেওয়া হয়, তেমন। যাওয়ার দিন বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হবে, এ কথা শুনে কলকাতা থেকে বন্ধুরা এসেছিল দেখা করতে। রীতিমত পাঁচ তারা হোটেলে ওদের সঙ্গে দেখা করানোর


Rx Munna

446 Blog Mensajes

Comentarios

📲 Download our app for a better experience!