জুলাই, রবিবার
এ ঘরের দরজাটিতে ঝর বাড়ির দরজার মত বাইরে থেকে তালা লাগাতে হয় না। ঘরের বাইরে যদিও আমার বেরোতে মানা, ঘরটি ভেতর থেকে বন্ধ করে বসে থাকলেই হয়। বাড়ির কাজের মানুষেরা নিচতলায় রান্নাঘরে ব্যস্ত থাকে। ওপর তলায় শোবার ঘর। ওপরতলায় ঞ আর ঞর স্ত্রী সারাক্ষণই আছেন, তাঁদের নাকের ডগায় কোনও কাজের মানুষ এ ঘরে উঁকি দিয়ে কোনও নিষিদ্ধ মুখ দেখবে, সে আশঙ্কা নেই। সকালে ট্রেতে করে নাস্তা নিয়ে এলেন ঞর স্ত্রী। দুপুরেও তিনি খাবার এনে দিলেন, রাতেও। ভাল খাবার। ভাত, মাছ, শাক সবজি। চেটেপুটে খাই। জন্মের ক্ষিধে ছিল পেটে। ঞ আর ঞর স্ত্রী অনেকক্ষণ ধরে গল্প করে গেছেন আমার সঙ্গে। দেশের অবস্থার কথা বলে দুজনই খুব দুঃখ করেছেন। ঞ দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফেলে বলেছেন, ‘দেশে যে মৌলবাদীরা এমন শক্তি অর্জন করেছে তলে তলে, কোনওদিন বুঝিনি।’ বলেছেন আমার জন্য তাঁর খুব ভাবনা হয়। প্রগতিশীল সকলের জন্যই এখন ভাবনা হয়। মৌলবাদ যদি ঠেকানো না যায় তবে সকলের সর্বনাশ হবে, দেশটি মৌলবাদীদের পুরো দখলে চলে যাবে। এ দেশটি তখন আর মুক্তবুদ্ধির কোনও মানুষের বাসযোগ্য দেশ হবে না।
বাসযোগ্য যে হবে না সে বুঝি। পত্রিকায় পাতায় বিশাল বিশাল মিছিলের ছবি। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের পত্রিকাগৃুলো যদিও মৌলবাদীদের বিশাল সভা মিছিলের কোনও খবর ছাপছে না, ভাব করছে যেন আন্দোলনে মৌলবাদবিরোধী শক্তিরই জয় হচ্ছে। কিন্তু মৌলবাদীদের পত্রিকা দেখলেই আঁতকে উঠতে হয়। ভয়াবহ সব কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলছে তারা। কেবল খবর না ছাপলেই তো মৌলবাদ মরে যায় না। আছে। তারাই এখন রাজত্ব করছে সর্বত্র। আজকের পত্রিকায় ছাপা হয়েছে গতকাল লণ্ডন টাইমসে ছাপা হওয়া সম্পাদকীয়। সম্পাদকীয়টির শিরোনাম আবার বাংলাদেশ। বাংলাদেশে শস্য উৎপাদন বাড়ছে। খাদ্যাভাব নেই দেশটিতে। কিন্তু এই যে উন্নতি ঘটছে দেশে, তা এখন হুমকির সম্মুখীন। উগ্র মৌলবাদীদের সহিংস আন্দোলন এ দেশ বিপদ নিয়ে আসছে। অসাবধানতায় একটি অগ্নিকাণ্ড শুরু হতে পারে দেশে। বাংলাদেশ সরকারের দুর্বলতার কারণে ইসলামী উগ্রবাদীদের আন্দোলনের মুখে