জুলাই, শনিবার
আজ দুটো ভাল খবরের দিকে চোখ পড়ল সকালবেলাতেই। আজ থেকে বামফ্রণ্টের প্রতিরোধ পক্ষ শুরু হচ্ছে। দাবিগুলো হচ্ছে, ঘাতক দালাল যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের বিচার, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ, নারী অধিকার, শিক্ষাস্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কর্মসূচী, মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে মৌলবাদী ফতোয়াবাজদের আক্রমণ প্রতিরোধ, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এর খবরদারি বন্ধ, গ্যাট চুক্তি, কালো আইন কালো টাকার দৌরাত্ম্য বন্ধ, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি বন্ধ, শিল্প কৃষি রক্ষা, শ্রমিক কৃষকসহ শ্রেণী পেশার ন্যায্য দাবি আদায় এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন। এক এক দিন, বামফ্রন্ট ঘোষণা দিয়েছে, এক এক জায়গায় সভা করবে। বেশ ভাল।
দ্বিতীয় খবরটি নিউইয়র্ক টাইমসএর সম্পাদকীয়। মৌলবাদীদের কাছে বাংলাদেশ সরকারের আত্মসমর্পণ লজ্জার কথা। সম্পাদকীয়টির শিরোনাম মৃত্যুর মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা। লেখা হয়েছে, তসলিমা নাসরিনের লজ্জা এবং সম্প্রতি একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে তার কথিত অবমাননাকর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সে দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তি ফুঁসে ওঠে। ঐ শক্তি লেখিকার ফাঁসি দাবি করে। এমনকি একজন ধর্মীয় নেতা তাঁর খণ্ডিত মুণ্ডুর জন্য আড়াই হাজার মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে। উগ্রপন্থী ধর্মান্ধ গোষ্ঠী তসলিমা নাসরিনের নারীবাদী মতামতকে ইসলাম ধর্মের সরাসরি অবমাননা বলে মন্তব্য করে। সরকার সাম্প্রদায়িক শক্তির দাবি অনুযায়ী তাঁর লজ্জা উপন্যাস নিষিদ্ধ করে। সম্প্রতি একটি আদালত লেখিকার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার ফলে লেখিকা আত্মগোপন করেন।
আমার ঘটনার সঙ্গে সালমান রুশদির ঘটনার তুলনা করা হয়েছে নিউইয়র্ক টাইমসে। সালমান রুশদির ঘটনাটি ফতোয়ার ঘটনা ছিল, একটি বই ছিল সে ঘটনার মূলে। পশ্চিমা সাংবাদিকরা এখানেও একই দৃশ্য দেখতে চাইছেন। কিন্তু দৃশ্য এক নয়। লজ্জা বইটির ঘটনা অনেক আগেই ঘটে গেছে। সরকার সে বই নিষিদ্ধ করেছে মাত্র। লজ্জার সঙ্গে আমার মাথার মূল্য ধার্য করা বা আমার ওপর ফতোয়া জারির ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই। আর এখন দেশ জুড়ে যে তাণ্ডব চলছে, এর সঙ্গে লজ্জা বা ফতোয়ারও কোনও সম্পর্ক নেই। একটি ঘটনা আরেকটি ঘটনা ঘটাতে ইন্ধন যুগিয়েছে বলা যায়, কিন্তু কোনও কারণ যোগায়নি। নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয় মন্তব্যে বলা হয়, ‘আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্যই বিশেষ মুহূর্তে মুক্ত চিন্তা চেতনা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে নির্বাক করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইরানের তৎকালীন ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি সে সময় ইসলামী বিপ্লবোত্তর নেতৃত্বকে শক্তিশালী করার অস্ত্র হিসেবে দি স্যাটানিক ভার্সেসকে ব্যবহার করেন।’ মিশরের একজন মানবাধিকার কর্মীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘মিশরে শিল্পী ও লেখকদের মৌলবাদীরাই শুধু নাস্তিক বলে না, সাংসদরাও এই উগ্রপন্থীদের সঙ্গে সুর মেলায়।’ সম্পাদকীয়তে সাম্প্রদায়িক