বাড়িতে আমার এক মামাতো ভাই

বাড়িতে আমার এক মামাতো ভাই বেড়াতে আসে। রতন। আমার সমবয়সী। বন্ধুর

বাড়িতে আমার এক মামাতো ভাই বেড়াতে আসে। রতন। আমার সমবয়সী। বন্ধুর মত।

 

–কীরে খুব সংসার করছিস! তুই সেদিনের মেয়ে, এত সংসারি হলি কি করে? ঘরবাড়ি ঘুরে ফিরে দেখতে দেখতে রতন বলে।

 

–মেয়েরা সংসারি না হলে আর হবে কী! আমার বিষণ্ণ উত্তর। রতনের সঙ্গে ছোটবেলার গল্প করি। একবার পেয়ারা গাছে আমার জন্য পেয়ারা পাড়তে উঠেছিল। পড়ে পা ভেঙে গিয়েছিল ওর।–আহা তোর জন্য সে কী কেঁদেছিলাম আমি। আচ্ছা, তোর মনে আছে টুটুলের কথা? কী ধরাটা খেয়েছিল! মামা কী এখনও রাতে রাতে ভূত দেখে চমকে ওঠে? আমার চোখের তারায় থিরথির করে নষ্টালজিয়া কাঁপে।

 

রতন চটপটে ছেলে। ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। দুটো তিনটে মেয়ের সঙ্গে তার আলাপ পরিচয় হয়েছে, ওদের কী করে প্রেমে পড়ানো যায়, সেই ফন্দি করে। এ নিয়ে আমরা তুমুল হাসি। রতন ঠোঁট উল্টে বলে–আসলে জানিস হীরা, একটু খরচ করতে পারলে মেয়েদের পটানো যায়।

 

–কী রকম খরচ?

 

–ধর, কেন্টিনে চা সিঙারা খাওয়ালাম। চায়নিজে নিয়ে গেলাম। কিছু গিফট করলাম।

 

–আরে না, মেয়েরা এইসব পেলে খুশি হবে কেন? ওরা এত লোভী নাকি!

 

–তুই মেয়েদের চিনিসই না, ওরা খুব পাজি হয়।

 

–পাজিই যদি হয়, তবে আর প্রেম করতে চাও কেন?

 

–চাই। প্রেম তো করতেই হবে।

 

–পাজিদের সঙ্গে প্রেম করতে হবে?

 

–এছাড়া উপায় কী!

 

–ওদের ছাড়া তাহলে তোমার উপায়ও নেই।

 

রতন চলে যেতে চায়। আমি আটকে রাখি, বলি–খেয়ে যাও।

 

দুপুরে এক সঙ্গে খাই। রতন বলে–তুই খুব সুখে আছিস।

 

–সুখ করে নাম? বাড়ি গাড়ি, ভাল খাওয়া দাওয়া, টেলিভিশন, ভি. সি. আর, ডিশ এন্টেনা……এসবেই বুঝি খুব সুখ থাকে?

 

–তা তো থাকেই, যা চাচ্ছিস, পাচ্ছিস।

 

–অনেক জিনিসপত্র এ বাড়িতে হয়ত আছে। কিন্তু যা চাচ্ছি তা পাচ্ছি, এটা ঠিক নয়।

 

–বলে না সুখে থাকলে ভূতে কিলায়, তার হয়েছে সেই রোগ। রতন রাগ করে বলে। সে চায় তার বোনটি সুখে আছে, সুখে থাক। এই সুখের মধ্যে কখনও কোনও অসুখ যেন বাসা না বাঁধে। রতন দুপুরের খাবার খেয়ে চা টা খায়। বলে–দুলাভাইয়ের সঙ্গে দেখা করে যেতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু বিকেলে জরুরি একটা কাজ আছে রে। চলে যেতে হবে। তুই দুলাভাইকে নিয়ে বেড়াতে আসিস। বাড়িতে তোদের কথা খুব হয়, তোদের মানিয়েছে খুব এই সব। সময় নিয়ে যাস, কেমন? আলতাফ ঘরে ফিরলে রতনের কথা বলি। ও এসেছিল, দুপুরে খেয়ে গেছে এইসব। আলতাফ ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে–কোন রতন?

 

–ওই যে এনায়েত মামার ছেলে। চেনো না? তোমাকে না সেদিন শার্ট প্রেজেন্ট করল।

 

–ও। ও কী বলল?


Rx Munna

446 Blog Beiträge

Kommentare

📲 Download our app for a better experience!