পুরুষের বেলায় ‘অধিকার’, নারীর বেলায় ‘দায়িত্ব’

পুরুষেরা রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে যে মর্যাদা পায়, নারীরা তা পায় না। পায় না,কিন্তু পাওয়া উচিত। এটি নতুন কোনও কথা

পুরুষেরা রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে যে মর্যাদা পায়, নারীরা তা পায় না। পায় না,কিন্তু পাওয়া উচিত। এটি নতুন কোনও কথা নয়, সমতায় এবং সততায় বিশ্বাস করাশুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ বহুকাল ধরে বলছেন এ কথা। মুঠো মুঠো ইতিহাস তুলে, তত্ত্ব-তথ্য-দর্শন বর্ষণ করে তাঁরা দেখিয়েছেন একসময় নারীর অবস্থা কোথায় ছিল, বিবর্তনে কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং কতটা পথ এখনও বাকি আছে বুড়ি ছুঁতে।

মেয়েদের কি কেবল এই তৃতীয় বিশ্বই ঠকাচ্ছে! প্রথম বিশ্বেও শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে কোনও ধারণা ছিল না মেয়েরা মায়ের জাতের বাইরেও একটি জাত, সে জাতের নাম মানুষ-জাত। মেয়েরা চিরকালই নগণ্য হিসেবেই চিহ্নিত হয়েছে, নাগরিক হিসেবে নয়। নাগরিক শব্দটির উৎপত্তি নগর থেকে। একসময় এক একটি নগরই ছিল এক একটি রাষ্ট্র। ভূমধ্যসাগরের কিনারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পনেরোশ নগরই, প্ল্যাটো মজা করে বলতেন ‘পুকুরের চারধারে ব্যাঙের মতো’, ছিল সেকালের গ্রীস। গ্রীসে, আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে প্রথম যেখানে গণতন্ত্র চালু হয়েছিল, সেই গণতন্ত্রে নাগরিকের মর্যাদা পেত যারা সরকার চালাতো, রাজনীতির জ্ঞান ছড়াতো, তারাই, হাতে গোনা কিছু গণ্যমান্য লোক। নাগরিকত্ব পাওয়া থেকে বঞ্চিত থাকতো বাচ্চাকাচ্চা, নারী আর ক্রীতদাস-দাসী।

নাগরিকত্ব, নাগরিক অধিকার—এসব ধারণার ধীরে ধীরে উত্তরণ হতে থাকে। রোমান সাম্রাজ্যের বিস্তৃতির সঙ্গে সঙ্গে আরও বিস্তৃত হয়, আরও গভীর হয় নাগরিকত্বের বোধ। সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখার জন্য এটির প্রয়োজন ছিল। নাগরিক নীতিবোধ গড়ে তুলে রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষায় প্রতিশ্রুত হওয়া, স্ব স্ব কর্মে, শ্রমে, শৃঙ্খলায়, দেশাত্ববোধে-প্রেমে নিজেকে উৎসর্গ করা ছিল নাগরিক হওয়ার শর্ত। সাম্রাজ্যের সকলেই নাগরিকত্ব পেয়ে গেল। এটি কেবল মুখের কথা হয়ে রইল না, রীতিমত আইনী প্রতিষ্ঠা পেল। চমৎকার ব্যাপার। কিন্তু নাগরিক হওয়া থেকে বঞ্চিত এই রোমান সাম্রাজ্যেও রয়ে গেল দুটো জাত(!), নারীজাত আর নিচুজাত।

ষোড়শ শতাব্দী থেকে এক পক্ষের কাঁধের দায়িত্ব অপরপক্ষের কাঁধেও কিছু গড়িয়ে গেল। নাগরিককে একগাদা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পালন করার জন্য, কিন্তু নাগরিকের জন্য রাষ্ট্রের কি কোনও দায়িত্ব নেই ? নিশ্চয়ই থাকা উচিত, এখন থেকে রাষ্ট্রের দায়িত্ব হল নাগরিকের শারীরিক, পারিবারিক, বৈষয়িক নিরাপত্তা বিধান করা। রাষ্ট্রের দায় দায়িত্ব এবং নাগরিকের অধিকার বিষয়ে ফরাসি দার্শনিকদের চিন্তাভাবনা সাধারণ জনগোষ্ঠীতে এমনই প্রভাব ফেলেছিল যে ফরাসি বিপ্লবের মতো বিস্ময়কর ঘটনাও একদিন ঘটে গেল। লেখা হয়ে গেল মানুষের অধিকারের আইন। ওদিকে আমেরিকার মতো নতুন দেশেও পরিবর্তনের


Rx Munna

446 Blogg inlägg

Kommentarer