অসভ্যতা

কদিন পর পর আজগুবি আর উদ্ভট সব কাণ্ড ঘটায় মুসলমান উগ্রপন্থীরা । সকলে হাঁ হয়ে দেখে এসব।

মুসলমান উগ্রপন্থীরা । সকলে হাঁ হয়ে দেখে এসব। বোমা মেরে এটা সেটা উড়িয়ে দেওয়া, ত্রাস সৃষ্টি করা — এসব তো আছেই, এসব হয়তো যে কোনও সন্ত্রাসী দলই করে বা করতে পারে, ধর্ম তাদের যা-ই হোক না কেন। কিন্তু কদিন পর পরই মেয়েদের নিয়ে ‘ছেলেখেলা’ খেলে পুরো ভারতবাসীকে চমকে দেওয়ার কাজ ওরাই করছে। দেখে মনে হয় একরকম দায়িত্বই ওরা নিয়েছে এ-কাজের। আমি বলতে চাইছি না অমুসলমান মেয়েদের নিয়ে ‘ছেলেখেলা’ হয় না, বলছি না যে তারা অফুরন্ত স্বাধীনতা ভোগ করছে। মোটেও তা নয়। ভারতবর্ষের মেয়েরা সর্বত্রই কম বেশি দাসত্বের শৃঙ্খলে বন্দি। তবে অমুসলমান মেয়েদের ওপর যে অসভ্যতা চলে, সেসব অসভ্যতার একটা সীমা আছে। কিন্তু মুসলমান মেয়ের ওপর অসভ্যতা প্রায়ই সীমা ছাড়িয়ে যায়। মেয়েরা যে কেবলই পুরুষের যৌনইচ্ছে মেটাবার খেলনা, কেবলই যে পুরুষের সুখভোগের বস্তু, কেবলই যে পুরুষের দাসী বা ক্রীতদাসী — তা এত তীব্র করে অন্য কেউ বোঝায় না, যত বোঝায় মুসলমান পুরুষেরা। শ্বশুর ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণ পুরুষমাত্রই হয় মনে মনে নয় শরীরে শরীরে করে — পুরুষাঙ্গে তাদের মুসলমানি বা খৎনা নামের ঘটনা ঘটুক বা না ঘটুক। কিন্তু তাই বলে ধর্ষককে স্বামী বলে মানতে হবে! এরকম ফতোয়া জগতের সেরা অসভ্যরাও কোনওকালে দিয়েছে বলে শুনিনি। মুসলমান-মৌলবাদীদের অসভ্যতার অবশ্য দেশকালপাত্র ভেদ নেই। ধর্ষক-শ্বশুর স্বামী বনে যাবে, নিজের স্বামী বনে যাবে নিজের ছেলে – এসব কি লোক হাসানো ছাড়া আর কিছু? যদি ঠাকুরদা ধর্ষক হয় তিন বছরের শিশুর? তবে কি শিশুটিকে হতে হবে ঠাকুরদার স্ত্রী? শিশুটির বাবা হবে শিশুটির ছেলে? শিশুটির মাকে হতে হবে শিশুটির পুত্রবধূ? এই তো মনে হচ্ছে ওদের বিচার!

 

এসব শুনলে গা হাত পা ঠাত্তা হয়ে আসে। গুড়িয়াকে নিয়েও ‘ছেলেখেলা’ চলেছিল। ‘এই স্বামীর সঙ্গে বাস করা চলবে না, ওই স্বামীর সঙ্গে বাস কর।’ গুড়িয়ার ইচ্ছে অনিচ্ছের কোনও মূল্য কেউ দেয়নি। তা দেবে কেন! মেয়েরা তো মাংসপিণ্ড ছাড়া কিছু নয়, মেয়েদের তো ‘মস্তিস্ক নেই, মগজ নেই, মাথা নেই’। তাদের আবার ইচ্ছে কী, অনিচ্ছে কী! ইমরানার বেলাতেও তাই। ইমরানার ইচ্ছে অনিচ্ছের ধার ধারার জন্য কেউ বসে নেই কোথাও। তাকে ধর্ষক-শ্বশুরের অবাধ কামের, পত্তায়েতের অশ্লীল অন্যায়ের আর মুসলিম ল বোর্ডের অবিশ্বাস্য অসভ্যতার শিকার হতে হয়। ধর্মতন্ত্রে এবং পুরুষতন্ত্রে বুঁদ হয়ে তাকে নিয়ে ‘ছেলেখেলা’ খেলেই চলেছে মানুষ। ‘ছেলেখেলা’ না বলে একে এখন ‘পুরুষখেলা’ই বলা ভালো। ছেলেখেলা এত ভয়ঙ্কর হয় না, যত ভয়ঙ্কর হয় ‘পুরুষখেলা’। ‘ছেলেখেলা’য় উদ্দেশ্য এত কুৎসিত থাকে না, যত কুৎসিত থাকে পুরুষখেলায়। পুরুষ যখন খেলে, নারীকে চিরকালই পায়ের তলায় পিষে মারতে পারার ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার জন্য খেলে। ‘আজ খেলে জিতে গেলাম, হিপ হিপ হুররে’ – অমন ‘ছেলেখেলা’ হয়তো তারা ছেলেবয়সে খেলতো, পুরুষবয়সে আর খেলে না। পুরুষবয়সে ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত’ করে। চিরকালই খেলতে পারার বন্দোবস্ত। নিজেদের চিরস্থায়ী আরামের আমোদের আয়েশের বন্দোবস্ত। পুরুষের হাতের মুঠোয় ধর্ম, হাতের মুঠোয় সমাজ, হাতের মুঠোয় রাজনীতি অর্থনীতি। এগুলো যেন সহজে পুরুষের মুঠোবন্দি হয়, তার জন্য নারী কম ত্যাগ, কম তিতিক্ষা এ যাবৎ করেনি। নারী যদি নিজেকে নিঃস্ব ক’রে পুরুষকে শক্তিমান, শৌর্যবান না করে, তবে সে আর নারী কিসে! এই বিশ্বাসে ভর করে পুরুষের সংত্তা মেনে চমৎকার আদর্শ নারী হয়ে উঠেছে নারীকুল। এই নিঃস্ব রিক্ত নারীকে কথায় কথায় পুরুষেরা


Rx Munna

446 ব্লগ পোস্ট

মন্তব্য