নারীর শরীর

যুগে পুরুষের কাছে নারীর আবেদন তার রহস্যময়তার। সেই রহস্যের আড়ালে যে রক্তমাংসের নারী সে আসলে

যুগে পুরুষের কাছে নারীর আবেদন তার রহস্যময়তার। সেই রহস্যের আড়ালে যে রক্তমাংসের নারী সে আসলে কেমন? কলকাতা থেকে প্রকাশিত ২৫ জানুয়ারি ১৯৯০ সংখ্যা সানন্দার প্রচ্ছদে একটি নারীমূর্তি এবং এই প্রশ্ন এইটুকু বুঝতে সাহায্য করে যে, রক্তমাংসের নারীকে যারা বর্ণনা করতে চায়, আর যাই হোক নারী নিয়ে তারা সস্তা রসিকতা করে না।

 

নারীর শরীর, শরীর নিয়ে নারীর উদ্বেগ-দুশ্চিন্তা, শরীর সমস্যার সমাধান–প্রচ্ছদ কাহিনিতে আলোচিত হয়েছে এই সব মৌলিক বিষয়। এই সংখ্যার নারী সম্পর্কিত প্রতিটি রচনাই শিক্ষামূলক ও অত্যন্ত মূল্যবান। এই সংখ্যায় কাব্যে, সমাজে মহিলা কবিদের স্থান কোথায় তাই নিয়ে আছে বিশেষ নিবন্ধ। আছে আর যা থাকে, ফ্যাশন, ধারাবাহিক, গল্প, বিতর্ক, খেলা, রান্নাবান্না, বাবুবিবি সংবাদ, সংস্কৃতি ইত্যাদি।

 

এই সানন্দা নারী সংখ্যাটি বাংলাদেশে ঢোকার অনুমতি পায়নি। কেনো এই সংখ্যাটি নিষিদ্ধ হয়েছে, কোন রচনায় অশ্লীলতার দোষ পড়েছে জানতে গিয়ে আমি যে কারনটি শুনেছি তা আমাকে অবাক করেছে। নারীর শরীর সম্পর্কিত ছবি ও আলোচনায় নাকি দেশের পত্র-পত্রিকার ভালো মন্দ লক্ষ্য রাখবার কর্তাব্যক্তিরা বড় নাখোশ হয়েছেন তাই এই পত্রিকাটি দেশে ঢোকার ছাড়পত্র পায়নি। যদিও এর আগে পুরুষ সংখ্যাটির ব্যাপারে কোনো বাধা ছিলো না।

 

নারীর শরীরের গঠন, শারিরীক বিকাশের প্রথম পর্যায়, প্রতিটি ধাপ বয়:সন্ধি রিতুস্রাব, যৌন প্রক্রিয়া গর্ভাধান,গর্ভধারণ, রজ:নিবৃত্তি, রজ:নিবৃত্তের পরে সমস্যা ও চিকিৎসা, বার্ধক্য, বার্ধক্যের বাহ্যিক চিহ্ন, মানসিক চাপ ইত্যাদির আলোচনা যদি নিষিদ্ধ হয়, তবে বিজ্ঞান নিষিদ্ধ হবে, চিকিৎসাশাস্ত্র নিষিদ্ধ হবে, নারীর জীবনযাপন নিষিদ্ধ হবে।

 

নারী নিয়ে নানা রস রচনা, ব্যংগ, কৌতুক, অশ্লীলতা যৌনসংগম এর নোংরা বর্ণনা সম্বলিত পত্র পত্রিকা এদেশে বড় জনপ্রিয়। কাতারে সাজিয়ে রাখা অভিসারিকা, জলসা, কামনা, বাসনা, যৌবন মধু, প্রেমতরংগ, রসের হালুয়া ইত্যাদি দেদার বিক্রি হচ্ছে। আমাদের শ্লীল-অশ্লীল যাচাইয়ের কর্তাব্যক্তিরা এ জাতীয় অসুস্থ জনপ্রিয়তার বিরুদ্ধে কোনও প্রতিবাদ করেন না।

 

তাঁরা প্রতিবাদ করেন সুস্থতা ও সুন্দরের বিরুদ্ধে, জ্ঞান ও রুচির বিরুদ্ধে, জীবন ও শিল্পের বিরুদ্ধে। নারী সম্পর্কে বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যাপারে সকলে সচেতন হয়ে উঠলে সম্ভবত আমাদের কর্তাব্যক্তিদের সমুহ ক্ষতি। এখনও যারা বিশ্বাস করে নারী শরীর অস্তিমজ্জায় দুর্বল, তারা আবার মানসিক দিকে সবল না হয়ে উঠে, কিভাবে ডিম্বাণুর ক্রোমোজোম শুক্রকীটের এক্স ক্রমোজম এর সংগে মিলিত হয়ে নারী ভ্রুণ এবং ওয়াই ক্রোমোজোম এর সাথে মিলিত হয়ে পুরুষ ভ্রুণ গঠন করে তা জেনে বুঝে বন্ধ্যাত্বের এবং নারী পুরুষ সন্তান জন্মানোর দায় দায়িত্ব যদি নারী তার কাঁধে না নেয় তবে কি হাল হবে কুসংস্কারের, অসম্মানের ও নির্যাতনের?সন্তান এবং পুরুষ সন্তানের উদ্দ্যেশে শাহজালাল থেকে খাজা মইনুদ্দিন পর্যন্ত দৌড়ঝাঁপ যদি না করতে হয় তবে দেশ সুদ্ধ গজিয়ে উঠা সহস্র মাজার ব্যবসারই বা কি গতি হবে?তাবিজ, মাদুলি,পানি-পরা,যদি নাই প্রয়োজন হয় তবে রাজনৈতিক পীর ব্যবসাই বা কোথায় দাঁড়াবে?

 

অধিকাংশ নারী যারা মনে করে রজ:নিবৃত্তি যৌনমিলনের অন্তরায়, তারা যদি জেনে ফেলে রজ:নিবৃত্তির পর একজন নারীর শুধু বন্ধ্যাত্বই আসে,যৌনক্ষমতা লোপ পায় না তবে তারা প্রচন্ড মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাবে; যে সমাজে নারীর শারিরীক মুক্তি নেই, সেই সমাজ কেন দিবে নারীকে মানসিক মুক্তি?

 

যৌন-প্রক্রিয়ায় এমন অনেকেই


Rx Munna

446 Blog posting

Komentar