প্রোসটেটনামা

প্রোসটেট নামে পুরুষের শরীরে একপ্রকার গ্ল্যান্ড থাকে। পঞ্চাশের অধিক বয়স বিশেষত ষাট সত্তর বছর বয়সে পুরুষের প্?

প্রোসটেট নামে পুরুষের শরীরে একপ্রকার গ্ল্যান্ড থাকে। পঞ্চাশের অধিক বয়স বিশেষত ষাট সত্তর বছর বয়সে পুরুষের প্রোসটেট গ্ল্যান্ড আকারে বড় হয়। প্রোসটেট গ্ল্যান্ড, দুটো হরমোনের গতিবিধি পরিচালনা করে। একটি এন্ড্রোজেন, অপরটি এস্ট্রোজেন। বয়স বাড়বার সঙ্গে সঙ্গে এন্ড্রোজেন হরমোন ক্রমশ কমে আসে কিন্তু এস্ট্রোজেন একই অনুপাতে কমে না। এস্ট্রোজেন হরমোনের আধিক্যে প্রোসটেট গ্ল্যান্ড বড় হয়ে যায়, মোদ্দা কথা এন্ড্রোজেন এবং এস্ট্রোজেন হরমোন দুটোর পরিমাণগত অসামঞ্জস্যই প্রোসটেট বড় হওয়ার মূল কারণ। এই রোগের প্রধান উপসর্গ ঘন ঘন পস্রাবের বেগ, প্রথমে রাতে, এরপর রাত এবং দিন উভয় সময়ে। পুনঃ পুনঃ এবং দু’তিন ফোঁটা পস্রাবের অস্বস্তি, তার উপর পস্রাব করার সময় বিষম জ্বালাপোড়াও অনুভূত হয়। নিজ ইচ্ছায় পস্রাবের আরম্ভ, গতি ও সমাপ্তি ঘটানো সম্ভব হয় না। ধীরে ধীরে কিডনি আক্রান্ত হলে পস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। পস্রাব শুরু ও শেষ হওয়ার সময় কিছু রক্ত যাওয়াও এসময় বিচিত্র কিছু নয়।

 

প্রোসটেট বড় হওয়ার প্রথম দিকে পুরুষের যৌন উত্তেজনা হঠাৎ বৃদ্ধি পায় যদিও শেষদিকে পুরুষত্বহীনতাই স্থায়ী হয়। মজার ব্যপার হচ্ছে, বুড়ো কুকুরের মধ্যেও প্রোসটেট বড় হওয়ার লক্ষন খুব দেখা দেয়। প্রোসটেট উপরের দিকে ঠেলে বড় হওয়ার কারণে কুকুরের মলনালী সঙ্কুচিত হয়। এর ফলে মলনালী সারাক্ষণ ভরা ভরা ঠেকে এবং মলত্যাগের যে চেষ্টা বুড়ো কুকুরেরা করে যায় তা অর্থহীন এবং যন্ত্রণাদায়ক।

 

প্রোসটেটের পরিবর্ধন এবং প্রতিকার আমার বিষয় নয়। আমার বিষয় প্রোসটেট হঠাৎ রোগাক্রান্ত হওয়ার কারণে ষাট-সত্তর বয়সের সেইসব বুড়ো পুরুষ, যারা কামোদ্দীপনা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিয়ে করার জন্য অস্থির হয়ে উঠে। অনেকে এই বিয়েকে ন্যায়সঙ্গত করার জন্য নানারকম যুক্তি তৈরি করেন। যেমন বুড়ো বয়সে যত্ন করবার কেও নেই অথবা আমাদের রসুলুল্লাহ নবী, দৃষ্টান্ত দিয়ে গেছেন-ইত্যাদি।

 

শারীরিক অসুস্থতার কারণে সাময়িক যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়, তাই তারা কোনও বয়স্ক মহিলা নয়, কিশোরী থেকে যুবতী পর্যন্ত মেয়েদের বিয়ে করবার আগ্রহ প্রকাশ করে। পৃথিবীর যত বুড়ো রোগী এই অবস্থায় বিয়ে করে, সাময়িক কামোত্তেজনা নির্বাপিত হলেই তারা পুরুষত্বহীনতায় ভোগে। তখন সেইসব বালিকা, কিশোরী এবং যুবতীর জীবনে যে দুর্ভোগ নেমে আসে তা এমন কেউ নেই যে না জানে।

 

এমন কে আছে যে জানে না একটি দরিদ্র পরিবারের মেয়েকে সচ্ছলতার কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়, শেষ অবধি সেই মেয়ে জীবনের দায়ভার অদৃষ্টের হাতে ছেড়ে দিয়ে কেবল দুটো ভাত-কাপড়ের জন্য কি নির্মম ভাবে বেঁচে থাকে!

 

আমাদের দেশে পীরের প্রকোপ খুব বেশি। পীর একটি ফরাসি শব্দ, যে শব্দটার আবিধানিক অর্থ বৃদ্ধলোক। এদেশে নানা জাতের অসাধু পুরুষ আছে, এদের মধ্যে পীর অন্যতম। একাত্তরে স্বাধীনতাবিরোধী কাজ আমার জানা মতে এমন কোনও পীর নেই যে করেনি। দেশের আনাচে কানাচে হঠাৎ গজিয়ে উঠা ‘পীর’ নামে পরিচিত মানুষগুলোর মূল পেশা অসাধুতা, লম্বা চুল-দাড়ি-জোব্বার আড়ালে অর্থ ও নারী লিপ্সাই পীর চরিত্রের প্রধান দিক।

 

পাবনার পীর খাজাবাবারে নিয়ে বছর কয়েক আগে দেশসুদ্ধ বড়রকম হইচই হয়ে গেল। নারী সংক্রান্ত তার অশ্লীলতার খবর সকলেই জানে। শুনেছি সেই খাজাবাবা নাকি জেল থেকে ছাড়া পেয়ে পুরনো পীর ব্যবসায় আবার ফিরে যাচ্ছে।


Rx Munna

446 Blogg inlägg

Kommentarer

📲 Download our app for a better experience!