চা বা Tea

চা সুস্বাদু পানীয়। আজকাল আমাদের দেশে গাঁয়ে-গঞ্জে, শহরে-বন্দরে সব জায়গায় চায়ের প্রচলন খুব বেশি।

চা

 

ভুমিকা : চা সুস্বাদু পানীয়। আজকাল আমাদের দেশে গাঁয়ে-গঞ্জে, শহরে-বন্দরে সব জায়গায় চায়ের প্রচলন খুব বেশি।

উৎপত্তিস্থান : চা-এর আদি উৎপত্তিস্থান চীন দেশ। চীনাদের কাছ থেকে চা-এর ব্যবহার সারা দুনিয়াতে ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানকালে ভারত ও শ্রীলংকার চা পৃথিবী বিখ্যাত। ভারতের দার্জিলিং-এ অত্যন্ত উন্নতমানের চা উৎপান্ন হয়। আমাদের দেশের পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া ও ফটিকছড়ি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় কিছু কিছু চা উৎপাদন হয়। তা ছাড়া উত্তরবঙ্গের চা উৎপন্ন হয়। বাংলাদেশে মোট ১৫৬টি চা-বাগান রয়েছে। বাংলাদেশের চা পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যে বেশ জনপ্রিয়।

প্রকারভেদ : চা নানা জাতের হয়ে থাকে। যথা- পিকো, মাউকা, কম্পু ও কিনাংস। এর মধ্যে কিনাংস সবচেয়ে উন্নতমানের। তা ছাড়া গুঁড়া চা ও পাতা চা- দুরকমের চাপাতা রয়েছে। আমাদের দেশে সবুজ চায়ের কদর খুব বেশি।

চাষের নিয়ম : চায়ের চাষ খুব সহজ নয়। সাধারণত বৃষ্টিবহুল ঢালু পাহাড়ি অঞ্চলে চায়ের চাষ হয়। চা-এর চারাগাছগুলোকে অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে ফাঁক ফাঁক করে লাগাতে হয়। চাগাছ আট-দশ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়ে থাকে। তবে গাছগুলোকে অত বাড়তে দেওয়া হয় না। তিন-চার ফুটের একটু বেশি হলেই চা-গাছ ছেঁটে দিতে হয়। চা-গাছের গোড়া এবং আশপাশের জাগয়া খুব পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। চা-বাগানে কিছুদূর পরপর ’ছায়াতরু’ লাগানো হয়। চা-চাষের জন্য প্রচুর যত্ন নিতে হয়। চায়ের অপর নাম ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’। চায়ের কোমল সবুজ পাতাগুলো ছিঁড়ে নেওয়া হয়। তারপর সেগুলোকে নানা বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় শুকিয়ে নানা ধরনের চা তৈরি করা হয়।

চা তৈরির নিয়ম : চা-তৈরি করতে হলে একটি পাত্রে পানি ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হয়। ফুটন্ত পানিতে পরিমাণমতো চা-পাতা ঢেলে দিয়ে মিনিট পাঁচেক সিদ্ধ করে নামিয়ে নিতে হয়। তারপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিয়ে চায়ের কাপে চা ঢালতে হয়। চিনি ও দুধ যার যার রুচি অনুযায়ী পরিমাণ মতো নিতে হয়। চীন ও পাশ্চাত্য দেশের লোকেরা দুধ-চিনিমিশ্রিত চা খায় না বললেই চলে। তারা শুধু সুঘ্রাণযুক্ত লিকার খেতে পছন্দ করে। চীনারা ও জাপানিরা সুন্দর চা তৈরি করতে জানে। লেবুর রস মেশানো চা-কে ’লেমন চা’ বলে। তা ছাড়া অনেকে আদা, দারুচিনি ও লং মিশিয়ে চা খেতে ভালোবাসে।

উপকারিতা : চা বেশ উপকারী পানীয়। চা-পানে শরীরের অলসতা ও জড়তা দূর হয়, কাজ করতে ভালো লাগে। সর্দি, কাশি ও গলাব্যথায় চা খেলে আরাম পাওয়া যায়। আমাদের দেশে অতিথি মেহমানদের আপ্যায়নের জন্য এর চেয়ে সস্তা আর কিছুই নেই। আমরা চা রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করি।

উপসংহার : দুঃখজনক হলেও সত্য যে দীর্ঘদিনের সংস্কারের অভাবে আমাদের দেশের অনেকগুলো চা-বাগানের উৎপাদন দিন দিন এতই কমে যাচ্ছে যে, অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হয়তো একদিন আমাদের চা আমদানি করতে হবে। তবে আশার কথা যে দিন ‍দিন চায়ের দাম বাড়ছে এবং এতে চা-উৎপাদনকারীরা লাভবান হচ্ছে।


ALEX SAJJAD

82 Blog mga post

Mga komento