অনেক দূরের এক গ্রামে রাত হলেই লোকজন দরজা-জানালা বন্ধ করে বসে থাকত। কারণ তারা বিশ্বাস করত, ছায়া বাঘ নামে এক রহস্যময় বাঘ রাতের অন্ধকারে গ্রামে আসে।
এই বাঘ কাউকে খায় না, গর্জনও করে না—তবে যার ঘরের সামনে দাঁড়ায়, তার জীবনে নেমে আসে বিপদ। তাই মানুষ ভয়ে নামও নিতে চায় না।
একদিন, সেই গ্রামের এক সাহসী মেয়ে—নাম তার জুনা—ভালো করে লক্ষ্য করল, যাদের ঘরের সামনে ছায়া বাঘ দাঁড়ায়, তারা সবাই কোনো না কোনো অন্যায় করেছে—কেউ অসৎ, কেউ দুর্নীতিগ্রস্ত, কেউ মিথ্যাবাদী।
জুনা ভাবল, "তাহলে এই ছায়া বাঘ তো দানব নয়, সে তো ন্যায়ের প্রতিচ্ছবি!"
তখন থেকে জুনা শুরু করল তদন্ত। সে খুঁজে খুঁজে বের করতে লাগল অন্যায়কারী মানুষদের, আর রাতের আঁধারে গিয়ে বলত:
“তুমি যদি ভুল না করো, ছায়া বাঘ তোমার কাছে আসবে না।”
মানুষ প্রথমে হেসে উড়িয়ে দিল, কিন্তু একদিন গ্রামে এক গণ্যমান্য ব্যক্তি নিজের অপরাধ স্বীকার করল—“আমি স্বপ্নে ছায়া বাঘ দেখেছি, আমি ক্ষমা চাই।”
গ্রাম ধীরে ধীরে বদলে যেতে লাগল। অন্যায় কমে এল, মানুষ সততার পথে ফিরল।
আর একদিন সকালে, জুনা দেখতে পেল ছায়া বাঘ তার ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে আছে—কিন্তু এবার ভয় নয়, চোখে ছিল শান্তি।
বাঘ বলল না কিছু, শুধু চোখের ইশারায় জানিয়ে দিল—“তুমি আমার কাজ সহজ করেছ।”
তারপর সে মিলিয়ে গেল কুয়াশায়।
সেই থেকেই বলা হয়—ছায়া বাঘ আসে না আর, কারণ এখন সত্য বলার সাহসী একজন মানুষ আছে।