ভয়ংকর ফুলের গল্প

বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকার ফুল রয়েছে। এদের মধ্যে কিছু ভয়ংকর বিষাক্ত ফুল রয়েছে।

ফুল পছন্দ করে না, এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। ফুলের সৌন্দর্য যাকে বিমোহিত করে না, তার নাকি মনই নেই। কিন্তু চোখজোড়ানো স্নিগ্ধ ফুলই যদি হয় প্রাণ নাশের কারণ, তখন সেটা হয় ভয়ংকর সুন্দর!

 

ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে যদি সেই ফুলের ঘ্রাণ নেওয়া অথবা কোনো অংশ স্পর্শ বা খাওয়া হয়, তাতে হতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। এমনকি কোনো পশুপাখিও যদি গাছের পাতা বা ফুল খেয়ে ফেলে, তাতেও বিষক্রিয়ায় মারা যাবার আশংকা থাকে। এসব বিষাক্ত ফুল মানুষ, পশুপাখি সবার জন্যই হুমকিস্বরূপ।

 

(POISON HEMLOCK)

বিষ হেমলক কুখ্যাতি অর্জন করে বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী সক্রেটিসের মৃত্যুর পর। সক্রেটিসের মৃত্যু হয়েছিল এক পেয়ালা হেমলকের রস পান করে। ‘Devil’s bread’ বা ‘শয়তানের পাউরুটি’ নামে হেমলক আইরিশদের কাছে পরিচিত। 

হেমলক উদ্ভিদ দেখতে ঘন সবুজ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Conium maculatum। গুল্মজাতীয় এই উদ্ভিদটি সর্বোচ্চ ৪ ফুট লম্বা হয়ে থাকে। দেখতে প্রায় একইরকম বলে হেমলককে প্রায় সময়ই বন্য গাজরের গাছের সাথে গুলিয়ে ফেলা হয়।

 

হেমলকের বৃদ্ধির সময় মূলত বসন্তকাল। বসন্তকালে এই উদ্ভিদ বৃদ্ধি পায় এবং ওই সময়েই হেমলক ফুল ফুটে থাকে। হেমলক ফুল দেখতে ছোট ছোট, সাদা বর্ণের। ফুলগুলো অনেকটা জালের মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে গাছে।

হেমলক গাছের পাতা, ফুলসহ সব অংশই মারাত্মক বিষাক্ত। এমনকি গাছটা মারা গেলেও অনেকদিন পর্যন্ত বিষ সক্রিয় থাকে। উদ্ভিদে বিষের পরিমাণ এলাকাভিত্তিক হয়ে থাকে। রৌদ্রময় এলাকায় উদ্ভিদে বিষের পরিমাণ সবথেকে বেশি থাকে। হেমলকের গাছের পাতা-ফুল-আঠা তীব্র বিষাক্ত। এতটাই বিষাক্ত যে এদের খালি হাতে স্পর্শ করা যায় না। অবশ্যই হাতে গ্লাভস, মুখে মাস্ক পরে নিতে হয়।

 

প্রাণী বা মানুষের শরীরে হেমলক বিষ প্রবেশের ২০ মিনিটের মধ্যে বিষক্রিয়ার উপসর্গ দেখা দেয় এবং ৩ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হতে পারে।

হেমলক দ্বারা আক্রান্ত মানুষের উপসর্গের মধ্যে মূলত দেখা যায়- হার্টবিট কমে যাওয়া, শ্বাস নিতে কষ্ট, পেশী দুর্বল বা প্যারালাইজড হয়ে যাওয়া এবং কখনো কখনো মৃত্যুও হতে পারে।

প্রাণীর ক্ষেত্রে উপসর্গের মধ্যে দেখা যায়- দ্রুত পেশী অচল হয়ে যাওয়া, শ্বাস নিতে কষ্ট, বিপাকীয় কাজের বিঘ্ন ঘটা, প্যারালাইজড হওয়া এবং মৃত্যুও। 


Tanvir Tanvir Farhan

86 Blog indlæg

Kommentarer