নিশ্চয়ই, হাশর বা পুনরুত্থান দিবস সম্পর্কে কুরআন ও হাদীসে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এসেছে। হাশরের ময়দান হবে কিয়ামতের পরের একটি বিশাল ঘটনা, যেখানে সমস্ত মানুষ তাদের কবর থেকে পুনরুত্থিত হয়ে আল্লাহর সামনে জমায়েত হবে। নিচে হাশর সম্পর্কে কিছু উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরা হলো:
---
১. হাশরের বর্ণনা:
আল্লাহ তাআলা বলেন:
"সেদিন মানুষ দলবদ্ধভাবে তাদের প্রভুর দিকে ফিরে আসবে, এবং তাদেরকে তাদের আমলের হিসাব দেখানো হবে।"
— সূরা ইনশিকাক (৮৪): ৬-৭
"সেদিন পৃথিবী তার সমস্ত খবর জানাবে, কারণ তোমার প্রভু তাকে নির্দেশ দিবেন।"
— সূরা যিলযাল (৯৯): ৪-৫
---
২. মানুষের অবস্থা:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
"হাশরের দিনে মানুষকে নাঙ্গা, খালি পায়ে, এবং খৎনা না করেই উঠানো হবে।"
— সহীহ মুসলিম: ২৮৬০
তখন মানুষ এত আতঙ্কিত থাকবে যে, কেউ কারো খেয়াল রাখবে না—even মা তার সন্তানকে ভুলে যাবে (সূরা আবাসা: ৩৪-৩৭)।
---
৩. সূর্য নিকটে আসবে:
হাদীসে এসেছে:
"কিয়ামতের দিনে সূর্যকে মানুষের খুব কাছে নিয়ে আসা হবে। তখন মানুষের ঘাম তাদের কৃতকর্ম অনুযায়ী তাদেরকে ঢেকে ফেলবে..."
— সহীহ মুসলিম: ২৮৬৪
---
৪. আরশের ছায়া:
রাসূল (সা.) বলেন:
"সাত শ্রেণির মানুষকে আল্লাহ তা'আলা হাশরের দিনে তাঁর আরশের ছায়ায় স্থান দেবেন, যেদিন আর কোনো ছায়া থাকবে না।"
(এর মধ্যে আছে ন্যায়পরায়ণ শাসক, আল্লাহর ভয়ে চোখে অশ্রু ঝরানো ব্যক্তি, মসজিদে মন লেগে থাকা ইত্যাদি)
— সহীহ বুখারী ও মুসলিম
---
৫. আমলনামা ও মীযান (তুলাদণ্ড):
সেদিন প্রত্যেক ব্যক্তির আমলনামা (কর্মফল) তার হাতে তুলে দেয়া হবে:
ডান হাতে পেলে — জান্নাতের সুখবর।
বাম হাতে পেলে — জাহান্নামের সতর্কবার্তা।
— সূরা আল-হাক্কাহ (৬৯): ১৯-৩১
"যার পাল্লা ভারী হবে (নেক আমল), সে সফল হবে।"
— সূরা আল-আ'রাফ (৭): ৮
---
৬. শাফাআত (সুপারিশ):
রাসূলুল্লাহ (সা.) কিয়ামতের দিন শাফাআত করবেন।
তাঁর এই মহাশাফাআতের মাধ্যমে অনেক উম্মত নাজাত পাবে।
— সহীহ মুসলিম: ১৯৩
---