ধিয়াসের জয়

জয় আছে বলেই সবকিছু জয় হয় এমনটা নয়,,,কখনো কখনো সফলতার শেষ চুড়ায় গিয়েও ফিরে আসতে হয়

গ্রামের নাম ধিয়াস—ছোট্ট, সবুজে মোড়া এক স্বপ্নপুরী। মাঠঘাট, পুকুর, তালগাছের ছায়া, আর সন্ধ্যাবেলার পাখির ডাক—সব মিলিয়ে যেন এক কবিতা। এই গ্রামেই জন্ম নিয়েছিল এক ছেলে, নাম জয়।

 

জয়ের বাবা ছিলেন একজন মাটির মানুষ, দিনভর হালচাষ করে সংসার চালাতেন। মা হাতে আঁকা আলপনা আর লেপ-তোষক বানিয়ে যা পেতেন, তা-ই সঞ্চয় করতেন। কিন্তু তারা ছেলের চোখে যে আলো দেখতেন, তা ছিল অন্য রকম।

 

জয় ছোট থেকেই শান্ত, কিন্তু প্রশ্নভরা। সে জানতো, ধিয়াস শুধু একটি গ্রাম নয়—এটি তার হৃদয়ের অংশ। পড়ালেখার প্রতি ছিল তার অসম্ভব ভালোবাসা। গ্রামে ভালো স্কুল না থাকলেও, সে বাঁশের চৌকিতে বসে কুপি জ্বেলে রাতভর পড়ত।

 

একদিন মেলায় গিয়ে জয় প্রথমবার দেখল একটা কম্পিউটার—মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে গেল। ফিরে এসে প্রতিজ্ঞা করল, সে একদিন ধিয়াসে স্কুল তৈরি করবে, যাতে গ্রামের অন্য শিশুরাও জানে বাইরের দুনিয়ায় কত কিছু আছে শেখার।

 

বছরের পর বছর কষ্ট করে জয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলো। পরিবার একবেলা না খেয়ে তার খরচ চালাল, কিন্তু কারো মুখে অনুযোগ নেই—কারণ তারা জানত, জয় একদিন "ধিয়াসের গর্ব" হবে।

 

বহু বছর পর, জয় ফিরল নিজের গ্রামে। সে এখন বড় এক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে, কিন্তু মাথা উঁচু করে বলল,

“আমার আসল পরিচয়? আমি ধিয়াস গ্রামের জয়!”

 

জয় নিজের জমি বিক্রি করে গড়ে তুলল “ধিয়াস শিক্ষালয়”—কম্পিউটার, লাইব্রেরি, খেলার মাঠসহ এক আধুনিক স্কুল।

গ্রামের মানুষ এখন বলে,

“আমরা গরিব হতে পারি, কিন্তু আমাদের জয় ধিয়াসকে জিতিয়ে দিয়েছে!”


Ferdaus Rahman Joy

11 Блог сообщений

Комментарии