তোমার মনের বারান্দায় যেখানে এ্যারোমেটিক জুঁইদের দখল সেখানে আমি নিতান্তই সাদামাটা সস্তা ঘাসফুল। আমাকে তুচ্ছ করার অধিকার তোমার বরাবরই ছিলো।
লাখ টাকার পাখির ডানায় ভর করে যেখানে তুমি কল্পনায় স্বপ্ন বুনতে বিভোর সেখানে আমি সংগ্রাম করে টিকে থাকা এক সাধারণ শালিক। আমাকে তুচ্ছ করার অধিকার তোমার বরাবরই ছিলো।
এস্থেটিক পিয়ানোর সুরে যখন নিজেকে তুমি হারিয়ে ফেলো মোহের জগতে তখন আমাকে ভাঙা বাঁশের বাঁশি বাজাতে গিয়েও বেশ ক'বার থামতে হয়। আমাকে তুচ্ছ করার অধিকার তোমার বরাবরই ছিলো।
ড্রোন নিয়ে আকাশে ছোটাছুটি করা দুরন্ত লক্ষ্যে যেখানে তুমি স্থির সেখানে আমি সুতো ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে যাওয়া এক ঘুড়ি। আমাকে তুচ্ছ করার অধিকার তোমার বরাবরই ছিলো।
তুমি যখন আয়েশ করে উপভোগ করো গুনগুনিয়ে ইলশেগুঁড়ি আমি তখন প্রখর রোদ থেকে বাঁচতে নিজেকে একটুখানি ছায়ায় আড়াল করি। আমাকে তুচ্ছ করার অধিকার তোমার বরাবরই ছিলো।
জোছনায় চোখ রেখে কফির মগ হাতে টেলিস্কোপে তারাদের রূপে তোমার বিভোরতা অথচ চাপকল চেপে এক গ্লাস পানি খেতে অমাবস্যায় আমার হয় জোনাকির সাথে দেখা। আমাকে তুচ্ছ করার অধিকার তোমার বরাবরই ছিলো।
যখন রং-রেরংয়ের বেহিসেবী চোখ ধাঁধানো আলোর মাঝে মত্ত তুমি তখন আমি অনিচ্ছাসত্ত্বেও সঞ্চয় করি একটুখানি মোমের আলো। আমাকে তুচ্ছ করার অধিকার তোমার বরাবরই ছিলো।
ভালোবাসায় সবার চোখের মধ্যমণি হয়ে থাকা তুমি কিভাবে বলো অনুধাবন করবে অবহেলায় ধুকে ধুকে বেঁচে থেকেও জীবন্মৃত কারো জীবনের গল্প। আমাকে তুচ্ছ করার অধিকার তোমার বরাবরই ছিলো।
বিলাসবহুল দালানে সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মানো তুমি কখনোই বুঝবে না জন্মের সময় সামান্য মধুটুকুনও না জোটা কুঁড়েঘরে কারো নিয়তি ঠিক কতটা নিষ্ঠুর হতে পারে! আমাকে তুচ্ছ করার অধিকার তোমার বরাবরই ছিল