স্বপ্ন ছায়া।।
আমি তোমাকে এত বেশি স্বপ্নে দেখেছি,
যেন তুমি বাস্তবতা নও,
অনেকটা আলো আঁধারির গোধূলির মতো—
যা আসে কিন্তু স্পর্শ হতে দেয় না,
যা আলো, অথচ আলো না—
তুমি যেন আমার মধ্যরাত্রির নিঃশ্বাসে ভেসে থাকা স্মৃতি চিহ্ন,
যার মানে খুঁজতে খুঁজতে আমি স্বপ্নের মধ্যেই নিঃশেষ হই।
তুমি কি জানো—
তোমার ওষ্ঠে আমি কতবার চুমু দিয়েছি ঘুমের ভেতর?
তোমার নাম উচ্চারণ করেছি বাতাসে,
যেন তা এক বৃষ্টির ডাক হয়ে ফিরে আসে
আমার বুকের গভীর পাথরে।
আমি এখন ঘুমিয়ে থাকি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে,
ঘুমিয়ে থাকি আলোয়,
ঘুমিয়ে থাকি তোমার প্রতিধ্বনিতে,
যেখানে তুমি আসো—ছায়া হয়ে, নিঃশব্দে।
তুমি এত বেশি স্বপ্নে এসেছো,
তোমার চোখ এখন দুটো কালো চাদরের মতো
যার গভীরতা ছুঁতে গিয়েই হারিয়ে ফেলেছি দিগন্ত।
তুমি বলেছিলে—
"একদিন বাস্তবে ফিরে এসে কথা বলবে",
আমি শুধু হেসেছিলাম,
কারণ বাস্তবতা তো কখন ফিকে হয়ে গেছে,
আমার একমাত্র সত্যি এখন আলো-আঁধারির তুমি।
তোমার ভ্রু, তোমার ওষ্ঠ,
তোমার হাতের কাঁপন—
সবই আমার নিকট এক চিরন্তন সন্ধ্যার মতো,
যা ছুঁয়ে গেলে অন্ধকার হয়ে যায়
তবু এক ধরণের আলো দেয় হৃদয়ে।
আমি তো হেঁটেছি বহু দূর তোমার ছায়ার সাথে,
হাতে হাত রেখে, নদীর ধার ঘেঁষে,
আমি তো বসেছি তোমার পাশে—
যদিও পাশে তুমি ছিলে না,
ছিলো কেবল সেই কালো চাদরের ফাঁকে ঢুকে পড়া চাঁদ,
ছিলো বাতাসের গন্ধে মিশে থাকা কল্পনায় তোমার নাম।
তুমি কি জানো—
তোমার শরীরের পাঁজরের পাশে
আমার নিঃশ্বাস কতবার আশ্রয় খুঁজেছে?
তুমি কি এটাও জানো—
তোমাকে স্বপনে দেখতাম বলেই,
বাস্তবে কখনো ডাকিনি তোমার নাম ধরে?
আমি হয়তো জাগতে ভুলে গেছি,
জেগে থেকেও ঘুমিয়ে থাকি তোমার অনুপস্থিতিতে।
তবু একটিবার—
শুধু একটিবারও যদি তুমি সত্য হয়ে আসো,
তোমার চোখে চোখ রেখে,
তোমার হাতে হাত রেখে —
বলবো,
আমার সমস্ত জেগে থাকা ঘুম তোমার নামে,
আর ঘুমিয়ে থাকা স্বপ্নগুলোও তোমার নামে।