কবিতা: খালি থলি নিয়ে ফিরা
✍️ আজিজুর রহমান
মালিকের নিকট চাহিয়া পেলাম এক মুঠো সময়,
বলেছিলেন—
"যাও, এ দুনিয়ায় করো কিছু সদায় সঞ্চয়।
রেখো আমার নাম স্মরণে,
চলো আমার দেখানো পথেই নিরবধি প্রশমনেতে।"
আমি এলাম এ রঙিন বাজারে,
পকেটে ছিলো কিছু হায়াত, হৃদয়ে আশা ভরে।
প্রথমে খুঁজতাম সদায়,
তবুও রঙিন দোকানগুলো
ডেকে নিলো আমায় মোহের মোড়কে।
এক দোকানে স্বপ্নের দাম কম,
আরেকটায় সুখের ছদ্মবেশে ছিলো নিঃস্বতা জমজম।
প্রলোভনের সুরে হারিয়ে ফেলি দৃষ্টি,
ভুলে যাই, কেন এসেছি—কোথা ছিল মূল দৃষ্টি।
রঙের খেলায় মত্ত হয়ে গেলো মন,
স্মৃতি হয়ে রইল মালিকের অনুপ্রেরণার ধ্বনন।
দুনিয়ার মেলায় বসে শুধু খেললাম চাওয়া-পাওয়া,
ভুলে গেলাম থলির ভেতর কিছু রাখার কায়দা।
হায়, সময় গড়িয়ে গেলো নিঃশব্দে,
বাজার যখন ভাঙল সন্ধ্যা ঘনায়ে,
তখন ফিরার বেলায় দেহে ক্লান্তি, মনে ভয়—
খুঁজে দেখি, থলিতে সদায় নাই একটিও আমল বটে।
মুখ তুলে চাই মালিকের দিকে,
যিনি প্রশ্ন করবেন—"কি আনিলে তুমি আমার দরবারে?"
আমি কাঁদবো, কিন্তু থলি থাকবে খালি,
আমলহীন বুক নিয়ে দাঁড়াবো বেহায়া হয়ে।
হায়, এ থলি তো আমি নিজেই বুনেছি,
যার তল ফাঁকা ছিল লোভের ধার কেটে;
আর সময়—সেতো একবার গেলে ফেরে না অনুশোচনাতে,
সে তো আমার হাত থেকে খসে গেছে চিরতরে।
? কবিতার মুলভাব:
এই কবিতা মানুষের জীবন, দুনিয়ার মোহ, আল্লাহর মানুষকে সৃষ্টির উদ্দেশ্য ও হায়াতের সঠিক ব্যবহারের বার্তা দেয়।
থলির উপমা দিয়ে বোঝানো হয়েছে আত্মার পাথেয় – আমল, যা দুনিয়ায় থেকে উপার্জন করে পরপারে ফিরতে হয়।