ঘটনাটা তখনকার, যখন আমি কলেজে উঠেছি। মাথায় হালকা হেয়ারজেল, পকেটে ফোন (যেটা শুধু চার্জের জন্য থাকে), আর মুখে একপ্রকার “বড় ছেলে” ভাব। হঠাৎ একদিন মা বললেন, “আগামী শুক্রবার চাচার বাড়ি যাবে, একটু ভদ্র হয়ে থাকবে কিন্তু!”
ভদ্র? আমি?!
আমি তো সবসময়ই ভদ্র! শুধু খাওয়ার সময় প্লেট না ধুয়ে পালিয়ে যাই, আর মাঝে মাঝে ছোট ভাইয়ের চিপস চুরি করি—এই যা!
যাই হোক, শুক্রবার এল। আমি একদম ফিটফাট—পাঞ্জাবি পরেছি, চোখে চশমা (যেটা পাওয়ার নেই), আর মুখে একগাল বানানো হাসি। চাচার বাড়ি ঢুকেই বললাম,
"আসসালামু আলাইকুম চাচা! কেমন আছেন আপনি?"
চাচা অবাক! ভাবলেন, হয়ত ভুল বাড়িতে ঢুকেছে কেউ!
তারপর শুরু হলো ভদ্রতার চূড়ান্ত পর্ব। আমি ছোটদের চকলেট দিয়ে বললাম, "ভাই, পড়াশোনা ঠিকমতো করো!"
নিজেও জানি, ছোট ভাইয়ের খাতা খুললেই নাক দিয়ে রক্ত পড়ে!
এক পর্যায়ে চাচা আমাকে জিজ্ঞেস করলেন:
"তুমি কি এখন সিরিয়াসলি পড়াশোনা করছো?"
আমি বললাম, “জ্বি হ্যাঁ! সময়টা তো মূল্যবান, স্যাররা বলেন সময় গেলে সাধন হবে না।”
ভিতরে ভেতরে আমার Netflix অ্যাকাউন্ট হাসতে হাসতে লাফ দিচ্ছে!
চাচী খুশি হয়ে বললেন, “এমন ভালো ছেলে আমি আর দেখি নাই।”
অন্যদিকে ছোট ভাই পাশে ফিসফিস করে বলছে, “এই তো সেই ভাইয়া, যে গতকাল TikTok-এ মুরগির সাথে ডুয়েট করছিল!”
শেষে খাওয়ার সময় এল। আমি ভাবলাম এবার একটা কাজের ভদ্রতা দেখাই। বললাম,
"চাচী, আপনি বসুন, আমি নিজেই নেবো।”
প্লেট হাতে নিয়ে যখন উঠলাম, হঠাৎ পা পিছলে পড়ে গেলাম—পোলাও, মাংস, ডাল—সব একসাথে আমার গায়ে।
চাচা বললেন, "এইটা কি নতুন স্টাইল?"
আমি বললাম, “না চাচা, এইটা ফ্যাশনেবল ফুড ব্যাথ!” ?