ইসলামের ইতিহাসে বিনয়, দানশীলতা ও ধৈর্যের প্রতীক হিসেবে যিনি চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন, তিনি হলেন হযরত উসমান (রাঃ)। তিনি ছিলেন ইসলামের তৃতীয় খলীফা এবং দু'বার রাসূল (সঃ)-এর জামাতা হওয়ায় তাঁকে “জুন-নূরাইন” (দুই নূরের অধিকারী) উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
---
? তাঁর ইসলাম গ্রহণ
উসমান (রাঃ) ছিলেন ধনী, সুশিক্ষিত ও সজ্জন। হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর দাওয়াতে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি ইসলাম গ্রহণের পর কুরাইশদের নির্মম অত্যাচার সহ্য করেও দ্বীন থেকে সরে যাননি।
---
? রাসূল (সঃ)-এর জামাতা
হযরত উসমান (রাঃ) প্রথমে রাসূল (সঃ)-এর কন্যা রুকাইয়াহ (রাঃ)-কে বিয়ে করেন। তাঁর ইন্তেকালের পর রাসূল (সঃ) তাঁর আরেক কন্যা উম্মে কুলসুম (রাঃ)-কে উসমান (রাঃ)-এর সাথে বিবাহ দেন। এমন সৌভাগ্য আর কারো হয়নি।
---
? দানশীলতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত
তাবুক যুদ্ধের সময় উসমান (রাঃ) একাই ৯৫০ উট, ৫০ ঘোড়া ও হাজারো স্বর্ণমুদ্রা দান করেন।
মদীনায় একটি কূপ ছিল যা এক ইহুদির মালিকানায় ছিল। উসমান (রাঃ) সেটি কিনে সকলের জন্য ফ্রি করে দেন।
রাসূল (সঃ) বলেছিলেন:
“উসমানের পরবর্তী কোনো কাজ তাঁর ক্ষতি করবে না।”
---
? কুরআনের সংকলন
তাঁর শাসনামলে বিভিন্ন অঞ্চলে কুরআনের উচ্চারণে বিভ্রান্তি দেখা দেয়। তখন তিনি সাহাবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে কুরআনের একটি মানিক কপি তৈরি করেন এবং তা বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠান। আজ আমরা যে কুরআন তেলাওয়াত করি, তা মূলত “মুসহাফ উসমান”।
---
? শহীদি মৃত্যু
শেষ জীবনে কিছু গোমরাহ মানুষ তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। তিনি যুদ্ধ করতে পারতেন, সাহাবীদের আহ্বান জানাতে পারতেন — কিন্তু রক্তপাতের ভয়ে তিনি তা করলেন না। কুরআন পড়তে পড়তেই বিদ্রোহীরা তাঁকে শহীদ করে। তাঁর রক্তের ফোঁটা ছিটে পড়ে খোলা কুরআনের আয়াতের উপর:
“অ্যাল্লাহ তোমার জন্য যথেষ্ট, তিনিই শ্রবণকারী, দ্রষ্টা।” (সূরা আল আনফাল ৮:৬৪)
---
?️ আমাদের শিক্ষা
বিনয় ও নম্রতা একজন মুসলিমের প্রধান গুণ।
আল্লাহর জন্য দান করলে, তা চিরস্থায়ী হয়।
সত্য ও ধৈর্য ধরে রাখলে, আল্লাহর কাছে মর্যাদা বাড়ে।