কমিয়ে ফেলুন পেটের মেদ ৫টি খাবারের সাহায্যে

একটা নির্দিষ্ট সময় পর আমাদের দেহে মেদ জমতে আরম্ভ করে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে মুটিয়ে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। তবে ?

কমিয়ে ফেলুন পেটের মেদ খাবারের সাহায্যে 

পেটের মেদ কমানোর জন্য আমরা কোমর বেঁধে নেমে পড়ি। না বুঝেই ডায়েট করা শুরু করে দেই। কিংবা শুরু করে দেই ব্যায়াম করা। আমরা প্রত্যেকেই চাই খুব দ্রুত মুটিয়ে যাওয়া পেটটি কমিয়ে ফেলতে। তবে একটা জিনিস মাথায় রাখা দরকার। পেটটি একদিনে বড় হয়ে যায় নি। তাই একদিনেই কমিয়ে ফেলা সম্ভব না। সঠিক সময়, সঠিক ব্যায়াম ও সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে মুটিয়ে যাওয়া পেট কমিয়ে ফেলা সম্ভব। তবে আগে জানতে হবে শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় পেট কেন বেড়ে যায়। তাহলে জেনে নিন পেটের মেদ বাড়ার কারণ এবং কমিয়ে ফেলুন পেটের মেদ কার্যকরী খাবারের সাহায্যে।

 

পেটের মেদ বাড়ার কারণ

বিভিন্ন কারণেই পেটের মেদ বৃদ্ধি পায়। এডিপোজ টিস্যুই (Adipose tissue) মূলত মেদ বাড়ার প্রধান কারণ। এডিপোজ টিস্যু তৈরি হয় এডিপোজ কোষ দিয়ে যা দেহের মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে। এডিপোজ টিস্যু দেহের অভ্যন্তরীণ সব দূষিত চর্বিগুলোকে জমা করে ফেলে। জীনগত কারণে এসব চর্বি তলপেটে জমা হয়। ফলে পেট মুটিয়ে যায়।

এডিপোজ টিস্যু - shajgoj.com

তাছাড়া সময়মতো না খেলে দেহে অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায় যা মেদের সৃষ্টি করে। অতিরিক্ত তেলযুক্ত, ভাঁজা পোড়া ও চিনিযুক্ত খাদ্য গ্রহণের জন্যও পেট মুটিয়ে যায়। আবার অনেকক্ষণ বসে থাকার ফলে পেট ও এর আশেপাশে মেদ জমতে শুরু করে। পুরুষদের ক্ষেত্রে কায়িক পরিশ্রম না করলে কিংবা নিয়মিত ব্যায়াম না করলে পেট বেড়ে যায়।

পেটে মেদ জমে যাওয়ার ক্ষতিকর দিক

পেটে মেদ জমলে কেবল দেখতেই অসুন্দর লাগে না বরং নানা রকম রোগও বৃদ্ধি করে ফেলে। পেটের দূষিত চর্বি ও অতিরিক্ত মেদ স্ট্রোক, হৃদরোগ ও কিডনি নষ্টের মতো রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দেহের অতিরিক্ত চর্বি স্বাস্থ্য ঝুঁকির অন্যতম একটি কারণ। তবে পরিমিত খাদ্যগ্রহণ ও নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে খুব সহজেই দেহের এই অতিরিক্ত চর্বি দূর করে ফেলা সম্ভব। দৈনিক খাদ্য তালিকায় সহজলভ্য কিছু উপাদান রাখলে আপনি খুব সহজেই পেটের মেদ কমাতে সফল হবেন। তাহলে চলুন জেনে নেই এমন পাঁচটি খাবার সম্পর্কে যা আপনাকে পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে।

১) বাদাম

ক্ষুধা নিবারণের অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে বাদাম। রোজ বাদাম খেলে আপনার ঘন ঘন ক্ষুধা লাগবে না। তাছাড়া বাদাম স্থুলতা, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও ক্যান্সারের মতো রোগ প্রতিরোধে বেশ কার্যকরী। বিভিন্নভাবে বাদাম খাওয়া যেতে পারে। আপনি রোজকার সালাদে কিংবা ফলের সাথে বাদাম মিশিয়ে খেতে পারেন। কিংবা সামান্য একটু বাটারে বা ঘি-তে ভেঁজে নিয়েও বাদাম খেতে পারেন। ঘনঘন বাদাম খেলে ক্ষুদা লাগার প্রবণতা অনেকাংশেই কমে যাবে।

২) সবুজ শাক-সবজি

স্থুলতা কমাতে সবুজ শাক-সবজির কোন প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। সবুজ শাক-সবজিতে ক্যালোরি কম থাকে ও হাই ফাইবার বেশি থাকে যা আপনাকে দ্রুত হজম করতে সহায়তা করবে। তাছাড়া সবুজ শাক-সবজি খুব দ্রুত ওজন হ্রাস করতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যে প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাক-সবজি রাখা উচিত।

৩) ডিম

ডিম পেশী শক্ত করতে ও মেদ কমাতে কার্যকরী। ডিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে যা দেহে শক্তির সঞ্চয় করে ও দূষিত মেদ বের করে দেয়। প্রতিদিনের ওজন হ্রাসের তালিকায় ডিম একটি অপরিহার্য উপাদান। প্রতিদিন ডিম খেলে পেটের মেদ দ্রুত গতিতে কমতে থাকে।

৪) পিনাট বাটার

রোজকার খাদ্যতালিকায় পিনাট বাটার অনেকেরই পছন্দের একটি খাবার। পিনাট বাটার খুব সহজেই ঘরে তৈরি করা যায়। এতে কোলেস্টেরল কম থাকায় এটি দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই পেটের মেদ কমাতে কিংবা শরীরের অন্যান্য অংশের মেদ কমাতে পিনাট বাটার বেশ কার্যকরী একটি উপাদান।

৫) প্রোটিন 

প্রোটিন পেশী তৈরিতে ও মেদ পোড়াতে সাহায্য করে। প্রতিটি ডায়েট চার্টে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিনযুক্ত খাবার যেমন ডাল, বীজ জাতীয় খাবার, ডিম, সামুদ্রিক মাছ ও মুরগী রাখা উচিত। এতে দেহে শক্তির সঞ্চয় হবে এবং অতিরিক্ত মেদ কমে আসবে।

পেটের মেদ দেহের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। এটি বিভিন্ন রোগের কারণও বটে। তাই প্রতিদিন উপরোক্ত খাদ্যগুলো খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত এবং এর পাশাপাশি সামান্য পরিশ্রম বা ব্যায়াম করা উচিত। এতে করে আপনার পেটের মেদ খুব দ্রুত কমে আসবে। তাই দেরি না করে আজই পরিবর্তন আনুন নিজের খাদ্যতালিকায় এবং নিজের শরীরকে বানিয়ে ফেলুন ঝরঝরে ও মেদহীন।


Md Ashaduzzaman

67 Blogg inlägg

Kommentarer

📲 Download our app for a better experience!