শফি মোল্লার বেগুনের ফাঁদ
শফি মোল্লা ছিল একরোখা মানুষ — তার উঠোনের সবজিগাছ ছিল প্রাণের চেয়েও প্রিয়। বিশেষ করে বেগুনগাছ। প্রতিদিন সকালে গিয়ে বেগুনের গায়ে হাত বুলিয়ে বলত, “তুই আমার কপালের তিল!”
কিন্তু সমস্যা একটাই — পাড়ার ছেলেপুলে রাতের বেলা চুপচাপ এসে গাছ থেকে বেগুন ছিঁড়ে নিয়ে যেত। মোল্লার শান্তি একেবারে ভণ্ডুল।
একদিন রেগে আগুন হয়ে প্ল্যান করল — প্রতিটা বড় বেগুনে চুপিচুপি সুঁই গুঁজে রাখল। তারপর নিজের হাতেই নাম দিল, “বেগুন ফাঁদ”!
রাতে ছেলেপুলেরা আসে, দেখে টসটসে বেগুন ঝুলছে। খুশিতে টুপটাপ ছিঁড়ে নিয়ে যায়। পরদিন খবর ছড়ায়, “চারজনের দাঁত ফুঁড়ে গ্যাছে!” কেউ আবার বলছে, “রক্ত পড়ছে মুখে!”
শফি মোল্লা দাড়িতে হাত বুলিয়ে হাসে — “নাইকো কষ্ট, এখন বুঝবে চুরি মানে কি!”
কিন্তু হাসির দিন বেশিদিন থাকল না।
পরদিন সকালে তার বউ তরকারি রান্না করল নিজের উঠোনের বেগুন দিয়ে। সবাই খেতে বসে। হঠাৎ শফি মোল্লা মুখ টিপে “উঁহুঁ!” করে উঠল — তার দাঁতেও লেগে গেছে একটা পিন!
চোখ বড়, চেহারা ফ্যাকাসে — বউ চেঁচায়, “হায় আল্লাহ, আপনি নিজের ফাঁদে নিজেই ধরলেন!”
পাড়ায় রটে গেল,
“শফি মোল্লার বেগুন ফাঁদ — খায় শত্রু, খায় মোল্লা সাধ!”
শফি সেই থেকে বেগুন খায় না, দাঁতের দোষ দিয়ে বলে, “এই দাঁত বেগুন শত্রু হইয়া গেছে!”
#sifat10
রমিজ আর বাঁশি বাজানো
রমিজ ছিল একটু অন্য রকম — পাড়ার “আর্টিস্ট”! ঘরে সারাক্ষণ বাঁশি বাজাত, গলা তুলে রবীন্দ্রসংগীতও গাইত, যদিও কোনো সুরে গাইত কিনা তা নিয়ে পুরো পাড়া দ্বিধায়!
সে বলত, “আমার বাঁশির সুর শুনে গাছের পাতাও নাচে!”
একদিন ভাবল, পুকুরপাড়ে বসে বাঁশি বাজালে সবাই দেখে মুগ্ধ হবে। গিয়ে বসে, চোখ বন্ধ করে শুরু করল — “পিয়া রে... পিয়া রে...”
কিন্তু সে জানত না, পেছনে বেঁধে রাখা আছে মালিকের রাগী পাঁঠা "কালা"। কালা বাঁশির আওয়াজ শুনে ভাবল, কেউ তাকে খোঁচাচ্ছে!
রমিজ তো আর পিছনে তাকায় না, সে ডুবে আছে শিল্পে। হঠাৎ পাঁঠাটা দৌড় দিয়ে হর্ণের মতো “বেেে” করে ঝাঁপিয়ে পড়ল রমিজের পিঠে!
রমিজ চিৎকার দিয়ে লাফ — বাঁশি একদিকে, রমিজ আরেক দিকে! দৌড়াতে দৌড়াতে গিয়ে ঢুকল সরাসরি ফুলির চাচির রান্নাঘরে — চুলা উল্টে, ডাল ছিটকে পড়ে তার মাথায়!
চাচি হা করে তাকিয়ে বলে, “তুমি কি বাঁশিওয়ালা না সার্কাসওয়ালা?”
পরদিন সবাই বলল,
“রমিজের বাঁশি এত সুরে বাজে, পাঁঠাও নাচে... আর শেষে ‘ডাল নৃত্য’ হয়!”
রমিজ পরদিন ঘোষণা দিল, “আজ থেকে আমি বাঁশি বাদ! এখন থেকে আমি কেবল কবিতা লিখব।”
কেউ জিজ্ঞেস করল, “সে কবিতায় কি থাকবে?”
উত্তর দিল, “পাঁঠা, ডাল আর দৌড়ের ব্যথা!”
#sifat10