বাংলা উপন্যাস লেখা শুরু হয়েছে ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে; তবে তা দ্রুত বাংলা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ আঙ্গিকে পরিণত হয়েছে। একজন অবাঙালি লিখিত এবং ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত ফুল মণি করুণার বিবরণ নামীয় গ্রন্থটিকে বাংলা ভাষার প্রথম উপন্যাসোম রচনা হিসাবে গণ্য করা হয়। ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত প্যারীচাঁদ মিত্রের লেখা আলালের ঘরের দুলাল নামীয় আখ্যানে উপন্যাসের বৈশিষ্ট্যাবলী সুচিহ্নিত হয়েছিল। ইয়োরোপীয় ধারার অনুকরণে লিখিত বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত এবং ১৮৬৫ সালে প্রকাশিত দুর্গেশনন্দিনী বাংলা ভাষায় উপন্যাসের প্রথম প্রামাণিক উদাহরণ।
বাংলা উপন্যাসের বিকাশ ঔপনিবেশিক মুকাবিলা, ক্রমবর্ধমান মুদ্রণ সংস্কৃতি, নগর কেন্দ্রের বৃদ্ধি এবং মধ্যবিত্ত পাঠক বৃদ্ধির দ্বারা প্ররোচিত হয়েছিল। [১] উপন্যাস শব্দটি, উপনয় এবং উপন্যাস্ত শব্দ থেকে উদ্ভূত। [২]
সংগঠন ও কাহিনীর বিবেচনায় বিংশ শতাব্দীর প্রথমাংশেই বাংলা উপন্যাস পরিপক্কতা অর্জন করেছিল। পরবর্তীকালে তা বিচিত্র ও বর্ণিল সংগঠন ও কাহিনী অবলম্বন করে এবং লাভ করে আন্তজার্তিক মাত্রা। এ সব রচনায় ইয়োরোপীয় ও মার্কিন প্রভাব, বিশেষ করে ইংরেজী উপন্যাসের প্রভাব, পরিলক্ষিত হলেও দেশীয় প্রেক্ষাপটের অবলম্বনের প্রচেষ্টাও ছিল উল্লেখ করবার মতো। তবে বিংশ শতাব্দীর শেষভাবে আবির্ভূত হুমায়ূন আহমেদের হাতে বাংলা উপন্যাস সকল বিদেশী প্রভাব কাটিয়ে আঙ্গিকে, ভাষায় ও বিষয়ে — সব দিকে দিয়ে স্বাবলম্বী ও শিল্পোত্তীর্ণ হয়ে ওঠে। ফলস্বরূপ বিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে বাংলা গল্পের চেয়ে বাংলা উপন্যাস পাঠকের কাছে জনপ্রিয়তর হয়ে ওঠে।
hanif ahmed Romeo
댓글 삭제
이 댓글을 삭제하시겠습니까?