রুপা তার দাদুর রেখে যাওয়া পুরনো বাড়িতে এলো গরমের ছুটিতে। মায়ের অমতে এসেছিল, কারণ মা বলতেন—“ও বাড়িটা ভৌতিক, রাতে অনেক অদ্ভুত শব্দ শোনা যায়।” রুপা এসব বিশ্বাস করত না। বরং পুরনো জিনিস তার খুব পছন্দ ছিল।
বাড়িতে ঢোকার পরদিন, সে দাদুর ঘরটা ঘুরে দেখতে গিয়ে আবিষ্কার করল একটা বিশাল পুরনো দেওয়াল ঘড়ি। ঘড়িটা থেমে আছে—ঠিক রাত ১২টার কাঁটায়।
রুপা ভাবল, “চালু করলে কেমন হয়?” সে ঘড়িটাকে চাবি দিয়ে ঘুরিয়ে দিল। হঠাৎ কাঁটা এক ধাক্কায় নড়ে উঠল, এবং ঘণ্টা বাজতে শুরু করল—“টান... টান... টান…” ঠিক বারোবার।
ঘণ্টা থামতেই রুমটা কেমন ঠান্ডা হয়ে গেল। বাতাস থেমে গেল। জানালার পর্দা এমনভাবে উড়ল যেন কেউ ধাক্কা দিল। তারপর হঠাৎ সে শুনল এক গলা—
“অবশেষে কেউ আবার সময়টা জাগিয়ে তুলল…”
রুপা ঘুরে দাঁড়াল। কেউ নেই। কিন্তু ঘড়ির কাঁচের ভেতর এক ঝাপসা মুখ দেখা গেল। দাদুর মুখ! তিনি হাসছেন।
রুপা ভয় না পেয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল। মুখটা বলল,
“তুই সময়কে আবার চলতে দিয়েছিস। এখন তোর ওপর আমার একটা দায়িত্ব রইল—তুই এই ঘড়ির রক্ষক।”
তারপর থেকে প্রতি রাতে ১২টায় রুপা ঘড়ির সামনে বসে। সে জানে, সময় শুধু কাঁটার মধ্যে নয়—সে গল্প, ইতিহাস, ভালোবাসা আর কিছু অজানা রহস্যেরও নাম।
---