গল্প: "দ্বার"
নামের চিঠি এলো এক সকালে—একটা ছোট সাদা খাম, কোনো প্রেরকের নাম নেই, কেবল লেখা:
"আপনি নির্বাচিত হয়েছেন। ঠিক রাত ১২টায় ঘুমিয়ে পড়ুন।"
রিমি প্রথমে ভেবেছিল ধোঁকাবাজি। কিন্তু ঠিক রাত ১২টায়, যখন সে ঘুমিয়ে পড়ে, তখনই ঘটে সেই অদ্ভুত ঘটনাটি।
সে উঠে দেখে, ঘরটা একই আছে—কিন্তু ছবি গুলো বদলে গেছে। দেয়ালে যেখানে তার বাবার ছবি ছিল, সেখানে একজন অপরিচিত মানুষ। বইয়ের র্যাকে তার প্রিয় কবিতার বই নেই, বরং আছে অদ্ভুত কিছু যন্ত্রবিদ্যার বই।
ঘর থেকে বের হয়ে দেখে, তার প্রতিবেশী আর পুরনো চেনা মানুষগুলো নেই। রাস্তাঘাট, বাসস্টপ, এমনকি দোকানের নামও অচেনা। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়—সবাই তাকে চেনে, নাম ধরে ডাকে, হাসে, কথা বলে—একজন বিজ্ঞানী হিসেবে।
রিমি বুঝতে পারে—সে এসেছে একটা সমান্তরাল জগতে, যেখানে সে কবি নয়, একজন বিখ্যাত কুয়ান্টাম গবেষক।
প্রথমে তার ভালই লাগে—এই জীবনে সে ধনী, প্রতিষ্ঠিত, সম্মানিত। কিন্তু রাতে বিছানায় শুয়ে তার মন খোঁজে ছোট্ট একটা খাতা, যেখানে সে কবিতা লিখত। খুঁজে পায় না।
দিন যায়। সে বুঝতে পারে, এই পৃথিবীর রিমি বুদ্ধিমান হলেও, কিছু একটা হারিয়েছে—কল্পনার সেই হালকা ডানা। এখানে সব বাস্তব, কঠোর, বিজ্ঞান-সংকুল। কোথাও একটা দারুণ শূন্যতা।
একদিন রাতে, যখন আকাশে অদ্ভুত আলো দেখা দেয়, রিমি দেখে ঘরের কোণে একটি কালো দরজা খুলে গেছে—একদম নীরবে। দরজার গায়ে লেখা:
"ফিরতে চাইলে, সবকিছু হারাতে হবে। থেকে গেলে, নিজের কল্পনাকে বিদায় দিতে হবে।"
রিমি অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে দরজার সামনে।
তারপর সে...