এক ছিল কৃপণ লোক।
প্রচুর তার টাকাপয়সা। কিন্তু নিজের জন্য এক কানাকড়ি সে খরচ করত না। রাতদিন তার মাথায় একটাই
চিন্তা… কী করে আরো টাকাপয়সা আয় করা যায়। টাকা জমাতে হবে, প্রচুর সম্পদশালী হতে হবে তাকে।
লোকটি যেমন কিপটে, ছেলেটি ছিল তার সম্পূর্ণ উলটো। সে দুহাতে টাকাপয়সা ওড়াত। বাবা যেখানে টাকা লুকিয়ে রাখে সেই গোপন স্থানের সন্ধান সে পেল; তাকে আর পায় কে! সমস্ত টাকাপয়সা হাতিয়ে নিয়ে সেখানে সে রেখে দিল কিছু পাথরের টুকরো।
তারপর তার ফুর্তি দেখে কে! বন্ধুবান্ধব সঙ্গে নিয়ে আনন্দ করে বেড়াতে লাগল সে। টাকা খরচ করে বলে অনেক বন্ধুবান্ধবও জুটে গেল।
কিছুদিন পরে কৃপণ লোকটি জানতে পারল—তার বহুদিনের জমানো টাকা চুরি হয়ে গেছে। মনের দুঃখে লোকটি দুদিনেই বুড়ো হয়ে গেল। খাওয়াদাওয়া ছেড়ে সারাদিন কেবল বিলাপ করছেঃ হায় হায় আমার
এ কী হল।
ছেলেটি এসব জানতে পেরে বাবাকে একদিন এসে বললঃ বাবা, তুমি নাকি দারুণ ভেঙে পড়েছ।
কৃপণ লোকটি হাহাকার করে উঠলঃ হ্যা বাবা, আমার সব শেষ হয়ে গেছে। টাকার বদলে কিছু পাথর এখন আমার সঞ্চয়ে।
এই শুনে ছেলেটি খুব মজা পেল। আমাদের জীবনে টাকার প্রয়োজন কী বাবা? আমরা একটু সুখে-শান্তিতে থাকতে চাই—এই কারণেই তো মানুষ টাকা আয় করে।
কিন্তু সেই টাকা যদি আমাদের জীবনে কোনোই কাজে না-লাগে তবে তার মূল্য কোথায়? তখন টাকা আর পাথর দুই-ই তো একই জিনিস। দুটোই মূল্যহীন। তুমি যেভাবে জীবন কাটাও সেটা কোনো মানুষের জীবন নয়।
—তাহলে, মানুষ কেন টাকা আয় করে?
বাবার এই কথায় হেসে ফেলল ছেলেটি। খুব জ্ঞানীলোকের মতো সে বললঃ কৃপণের টাকায় জগতের কোনো উপকার হয় না। মানুষ টাকা আয় করে জীবন ধারণের জন্যে। আর সে মহৎ মানুষ যে টাকা আয় করে সকাজে ব্যয় করে।
কৃপণ মানুষটি পুত্রের এই কথা একবাক্যে মেনে নিল। সে স্বীকার করল—এবারে টাকা আয় করে ভালো কাজে সে ব্যয় করবে। # # #
Tanzim Bin Helal
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?