কালাম ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইমানি দর্শন, যা ঈশ্বরের অস্তিত্ব, গুণাবলী, প্রকৃতি এবং মানুষের সঙ্গে ঈশ্বরের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে। এটি ইসলামি ধর্মতত্ত্বের একটি শাখা হিসেবে বিবেচিত হয়। ঈশ্বরকে মানুষের মতো উপমা দেওয়ার বিষয়ে ইহুদি, খ্রিস্টান ও মুসলিম চিন্তাধারায় বিস্তর মতপার্থক্য দেখা যায়। অনেক চিন্তাবিদ মনে করেন, ঈশ্বর অসীম ও অপার, তাকে মানুষের সঙ্গে তুলনা করা অনুচিত। অপরপক্ষে, কিছু দার্শনিকের মতে, সীমিত অর্থে ঈশ্বরকে মানুষের উপমায় বোঝানো যেতে পারে। পবিত্র গ্রন্থসমূহে ঈশ্বর সম্পর্কে উপমা ও তুলনার উভয় উদাহরণই বিদ্যমান। যেমন, কুরআনে আল্লাহকে “আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর আলো” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যা এক ধরনের উপমা।[২৬] আবার, কুরআনেই বলা হয়েছে: “তার সমতুল্য কেউই নয়”, যা এক ধরনের নিষ্পেক্ষতা। তিনটি ইব্রাহিমি ধর্মের ধর্মগ্রন্থ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ঈশ্বরকে বোঝাতে তুলনার চেয়ে উপমার ব্যবহার বেশি হয়েছে। অর্থাৎ, ঈশ্বরের গুণাবলীর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট অর্থবাচকতার পরিবর্তে প্রতীকী ও বিমূর্ত প্রকাশই প্রাধান্য পেয়েছে।[২৭] মুসলিম বিশ্বাস অনুযায়ী, আল্লাহ এমন এক সত্তা যাকে মানুষের কল্পনা, যুক্তি, বিজ্ঞান বা দর্শনের মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে উপলব্ধি করা সম্ভব নয়।[২৮]