ডেকে, হয়তো গান নয়তো চুমু আর নয়তো থাপ্পর এসব করার জন্য? জুথি দাঁতে দাঁত চিপে কোমরে হাত দিয়ে কিছু বলতে নিবে তার আগেই আরিশ জুথি কে ঘুরিয়ে বিছানার উপর ফেলে জুথির উপরে উঠে জুথির হাত দুটো বিছানার সাথে চেপে ধরতে, জুথি আরিশের ভর নিতে না পেরে দম আটকে বললো,
‘আল্লাহ ‘গো’ মুই মনে হয় মরেই যামু, এইটা কি? আমার উপর থেকে সরেন।
আরিশ জুথি কে চোখ মুখ খিচে কথাটা বলতে দেখে জুথির কানের লতিতে কামড় দিয়ে ফিসফিস করে বললো,
‘একটু আগে যেভাবে কথা বললি, আবার একটু বলতো।
‘ওরে বাবা,গো কানটা আমার শেষ। কানটা ঘাড়ের সাথে চেপে ধরে।
আরিশ জুথি কে ওভাবেই কোলের ভিতর আঁকড়ে নিয়ে উন্মুক্ত গলায় যখন চুমু খেতে যাবে তখন, বিছানায় রাখা ফোনে লুসিয়ানের -‘ও ভাই’ ডাক শুনে,জুথির থেকে সরে বিছানায় বসে জুথি কেও এক টানে ওর পাশে বসিয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে বললো,
‘ছোটু ডাকটা দেওয়ার আর টাইম পেলিনা?
‘মনে?
আরিশ লুসিয়ানের কথায় রাগি,নিশ্বাস ফেলে বললো,
‘কিছু না, গাধা।
‘ভাই তমি অমায় গাধা ভোললা?
‘বলবো না তো কি করব? তোর বাংলা শুনে আমার মাথা ঘুরছে।
লুসিয়ান আরিশের কথায় কেবলা মার্কা হাসি দিয়ে বললো,
‘ঔত,একঠা হয়ইলেই হলো। তুমি ভাবির কছে ফোন টা দও ত।
আরিশ লুসিয়ানের কথায় নাক মুখ কুঁচকে ফোনটা জুথির কাছে দিয়ে বললো,
‘ওদের সাথে কথা বল।
জুথি কে ফোনটা নিতে সংকোচবোধ করতে দেখে, আরিশ ইশারায় ফোনটা নিতে বললে, জুথি ফোনটা নিয়ে বললো,
‘আসসালামু-আলাইকুম।
‘অলাইকুম-আসসালাম ভাবি ম,, — এতোটুকু বলে লুসিয়ান ম শব্দটায় আটকে যায়। অতঃপর ভ্রু চুলকে বোকা হেসে বললো,
‘তমি তো অনেক সন্দর দখতে,
লুসিয়ানের কথায় জুথি আরিশের দিক তাকাতে আরিশ ফোনটা ছো মেরে ওর হাত থেকে নিয়ে বললো,
‘ও তোর সম্পর্কে কি হয় মনে আছে তো?
‘আরে হ,হ মনে আছে। দও ত ভাবির কছে।
আরিশ ফোনটা জুথির কাছে দিতে লুসিয়ান গলা খাঁকারি দিয়ে বললো,
‘তমি কি বাঙালি মে? সতি বলবা।
‘জি আমি খাঁটি বাঙালি।
‘তমি সধারণ কোন বাঙালি নয় লা, তুমি আমার মন খাড়া এক বাঙালি,
জুথি লুসিয়ানের কথা শুনে ফিক করে হেসে দিল,জুথি কে হাসতে দেখে লুসিয়ান চোখ বড় বড় করে বললো,
‘ওমা তমর দখি গালে টোল পরে, আমি ত জানতম বাঙালি মেরা মটু হয়, এখন দখছি বাঙালি মেরা ত অনক সন্দর। — বলে আরিশ কে ডেকে বললো,
‘ভাই ও ভাই?
‘হুম বল।
‘ভাই আমি তমার বউয়ের মোত সুন্দর মে বিয়ে করবো।
‘তাহলে তো তোকে বাঙালি মেয়ে বিয়ে করতে হবে?
‘হ ভাই তমার বউয়ের মোত বাঙালি মেয়ে বিয়ে করতে রাজি। — ও আরো কিছু বলবে তার আগেই ইন্দ্রিয়া ত্যাইনিন লুসিয়ানের থেকে ফোনটা নিয়ে বললেন,
‘তুই পরে বাঙালি মেয়ে বিয়ে করিস, এখন আমি একটু মেয়েটার সাথে কথা বলি, বলে বললেন,
‘কেমন আছো সোনা,মা?
‘আলহামদুলিল্লাহ, আপনি কেমন আছেন? মিষ্টি কন্ঠে।
‘ফাইন আম্মু। আমিও তো বলি, ছেলে ছুটে দেশে গেল কেন।
‘মানে?
‘আরি,, —ওনার কথা শেষ করার আগে উনার স্বামী ‘জিয়ানলুইজি গ্যান্টানার' উনার থেকে ফোনটা নিয়ে মধু কন্ঠে বললেন,
‘এই যে ছোট মামনি হাউ আর ইউ?
‘জি আলহামদুলিল্লাহ।
‘এই বাবাইটাকে জিজ্ঞেস করবে না?
‘জি, আপনি কেমন আছেন?
‘আই এম অলমোস্ট ফাইন, ছোটমা। — ওনারা ওর সাথে আরো কিছুক্ষণ কথা বলে,আরিশের সাথে দু একটা কথা বলে ফোন রাখতে, জুথি কৌতূহল নিয়ে বললো,
‘আরিশ ভাই ওনারা কে?
আরিশ জুথির প্রশ্নে, ভ্রু কুঁচকে বললো,
‘ওনাদের বিষয়ে তোকে কেউ বলেনি?
জুথি মাথা দুই পাশে নাড়ালো যার মানে না, তাকে কেউ এ বিষয়ে বলেনি। জুথিকে না করতে দেখে আরিশ বললো,
‘ওনারা আমার মামনি, বাবাই হন।
‘ওনাদের সাথে আপনার কিভাবে পরিচয় হলো?
জুথির এমন প্রশ্নের মনে পরে সেই সাত বছর আগের ঘটনার কথা, যখন আরিশ সুইজারল্যান্ড গিয়েছিল দুমাসও ঠিক করে পূর্ণ হয়নি।
~ফ্ল্যাশ~
“এমন এক দিনে, রাতের বেলায় আরিশের মনটা বিষন্নতায় ঘিরে আরিশ কে অস্থির করে তুলছিল। তার মৌ কে এক নজর দেখার তৃষ্ণায়,আরিশ কোনভাবেই নিজেকে ঘর বন্দী করে রাখতে পারছিল না, তাই এই মুহূর্তে এই পরিস্থিতি থেকে স্বাভাবিক হওয়ার জন্য প্রকৃতির হওয়া দরকার। তাই কোন রকম একটা টি-শার্ট গায়ে জড়িয়ে সিগারেট মুখে পুরে বাসা থেকে বের হয়ে, একটা নির্জন ঝঞ্ঝাটহীন লেকের কাছে বসে পিছন দিক থেকে চুলগুলো মুঠ করে ধরে, আকাশের দিক অশান্ত ভাবে চেয়ে রইল। এভাবে যে, ও কতক্ষণ কলঙ্ক গায়ে জড়ানো চাঁদের দিকে চেয়েছিল, সময়টা হয়তো ওর স্মরণে আসলো না। ওর মনে কোন অনুভূতি ও হলো না। শুধু ফেল ফেল করে চেয়ে রইল দূর বিহীন ঝলঝল করা গোল চাঁদের দিক। হঠাৎ ওর কানে কয়েকজন লোকের চাপা কন্ঠ, পাশাপাশি কারো গোঁড়ামির আওয়াজ শুনে ভ্রু কুঁচকে আসে ওর। শব্দের উৎস খুঁজতে চাঁদের দিক থেকে চোখ সরাতে তাতে কেমন ঝাপসা দেখলো। এটাতো হওয়ারই কথা? চোখ যদি এক দিকে নির্দিষ্ট ভাবে তাকিয়ে থাকে পর মুহূর্তে অন্যদিক তাকালে কেমন ঝাপসা লাগবে এটাই স্বাভাবিক। আরিশ চোখ দুটো হাত দিয়ে মুছে স্বাভাবিক করতে, শব্দটা যেন ক্রমশেই বেড়ে যাচ্ছে। আরিশ এমন শব্দে আশেপাশটা তাকালো তবে ওর চোখে কিছুই বাজল না। তাই উঠে দাঁড়িয়ে গম্ভীর কণ্ঠে উচ্চারণ করল -‘কে শব্দটা? ওর একটা শব্দ যেন পুরো লেকটা কেমন নিস্তব্ধ হয়ে গেছে, এটা দেখে আরিশ কেমন চোখদুটো ছোট ছোট করে বাঁকা হাসলো, এমন সময় ওর মাথা বরাবর পিছন থেকে কেউ হকিস্টিক দিয়ে আঘাত করতে যাবে, ঠিক সেই সময়টাই আরিশ ব্যাক ভাবে হকিস্টিকটা ধরে এক টানে লোকটাকে সামনে এনে ঘাড়টা কাত করে বললো,
‘-*কুত্তার কলিজা নিয়ে পিছন থেকে আঘাত করা, বন্ধ কর *শুয়োরের বাচ্চা। চোখ দুটো রক্ত আবা করে।
আরিশ হকিস্টিক এতটাই জোরে চেপে ধরেছে যে, সামনে থাকা লোকটার হাত কিছুটা বাঁকিয়ে যায়, লোকটার মনে হচ্ছিল আরিশ হকিস্টিকটা না ছাড়লে হয়তো ওনার হাতটা এখনই ভেঙে যাবে। হলোও তা