বলে,,"কি টেস্ট ভাই বাসায় কাউকে বলো না প্লিজ"।
ইয়াসির মাথা চুলকে বলে,,"আরে না না কাকে বলব,খা তুই"।
হুট করে খাওয়া থামিয়ে ইশা ভ্রুকুচকে ইয়াসিরের দিকে তাকালে ইয়াসিরও ভ্রু নাচিয়ে বলে কি?
ইশা বলে,,"তোমার জামা কাপড় গুলো কি হাল করলাম কিন্তু তুমি না রেগে এত ভালো ট্রিট করছো কেন??"
ইয়াসির হেসে ইশার মাথায় হাত রেখে বলে,,"একটামাত্র বোন তার সাথে রাগ করা যায় নাকি বল?"
ইশাও আর না ভেবে মুচকি হেসে খেতে থাকে। এদিকে ইয়াসিরে পাশ থেকে ফটাফট ইশার কয়েকটা ছবি তুলে বলে,,"রুমে যা, বাইরে কেউ দেখলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।"
ইশাও খুশি মনে রুমে চলে খেতে খেতে একপর্যায়ে দেখতে পায় তেলাপোকার মাথার মতো কিছু একটা, একটুপর ইশা যখন নিচু হয়ে খেয়াল করে দেখে সত্যিই তেলাপোকা। ইশা বিকট চিৎকার দিয়ে উঠে,,,
ইয়াসির ইশার চিৎকার শুনে হেসে উঠে বলে,,"বাহ্ এত তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গেল। কি রাক্ষসীরে দুমিনিটেই একদম ফিনিস দিয়ে ফেলেছে।।"
সবাই ইশার রুমের সামনে নক করলে। ইশা ঘাবড়ে গিয়ে দরজা খুলে সামনে ইযানকে দেখে ইযানের হাত ধরে বলে,,"ভাইয়া তেলাপোকা আইসক্রিমে তেলাপোকা বড় তেলাপোকা "
ইযান বলে,,"কিইইই??কোথায়?কিছু হয়নি তোহ্ তোর?"
তখনই ইয়াসির বলে,,,"ইশা তুই লুকিয়ে আইসক্রিম খাচ্ছিলি ডক্তর না তোকে নিষেধ করেছে???"
ইশা রেগে বলে,,"তুমি তোহ্ আইসক্রিম দিয়েছো ভাইয়া?"
ইয়াসির বলে,,"কিহ? কিসব বলছি একটা থাপ্পড় মারবো বেয়াদব মেয়ে আমার কাজ নেই তোকে আইসক্রিম দিবো?"
তখনই ইশার মা ইশার কান টেনে ধরে বলে,,"অসভ্য মেয়ে আমাকে জ্বালিয়ে মারবি নাকি?তুই আইসক্রিম আনলি কেন?দাঁত সবগুলো পড়ে যাক এই নিয়ত করেছিস নাকি?"
তখনই সোহানা বেগম বলে,,"তোমার মাইয়া খালি আমার নাতী ডারে দোষে। যেই আমার নাতী ভুল ডা ধরাইয়া দিছে ওমনি আমার নাতীর ঘাড়ে দোষ দিয়া দিছে, হতচ্ছাড়ি মাইয়া!!"
ইশা ওর মার থেকে কান ছাড়িয়ে বলে,,"খবরদার বুড়ি নাতী নাতী করবা না তোমার নাতী ধোঁয়া তুলসী পাতা নাকি?"
"হ তুলসী পাতাই। কালকার মধ্যে ওরে বিয়া দিবা মোর ফাইনাল ডিসিশন।"
ইয়াসির বলে,,"একদম আমিও সহমত আর দাদীজান চলো তো এই পেত্নীর সাথে কথা বলে তোমার প্রেসার হাই করার কোনো মানে নেই চলো চলো"
ইশা রেগে তাকিয়ে আছে। ইশার তাকানো দেখে ইয়াসির একটা চোখ টিপ মেরে মুচকি হেসে চলে যায়।
ইশা মনে মনে বলে,,"চান্দু তোমারে একবার পাই সদরঘাটের পানিতে চুবাইয়া মারমো শালা বারুদভাইয়ের বাচ্চা। "
এরপর সবার ধমক টমক গিলে ইশা ঘুমাতে যায়।
____________________
এদিকে টানা তিনটা মাস কেটে গেছে। ইয়াসিরের বাসায় আসার আনাগোনা কমে গেছে। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর তাকে পাওয়া মুশকিল।এদিকে ইশা দিনে চার পাঁচ বার ইয়াসিরকে ফোন দিলেও সে লাপাত্তা। বেচারী সারাদিনই মনটা খারাপ থাকে। শুধু ইশা না বাড়ির সবাই আজকাল চুপচাপ একঘেয়ে হয়ে পড়েছে ইয়াসিরকে ছাড়া।
রাতে খাওয়ার টেবিলে সবার খাওয়ার মাঝে আয়ান বলে উঠে,,"কালকে ইয়াসির আসবে হয়ত ভোরে।"
ইশা এটা শুনে খুশির ঠেলায় বলে উঠে,,"সত্যি ভাইয়া আসবে??"
খাওয়া মাঝে হুট করে কথা বলায় গলায় খাবার আটকে বেচারী কাশতে লাগে ইযান আর আয়ান পানি খায়িয়ে ঠিক করে।
সারারাত ছটফট করতে থাকে ইশা। ইশা এবার জানিয়েই দিবে ইয়াসিরকে এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইশা সারারাত কল্পনা করতে থাকে কীভাবে কীভাবে প্রপোজ করবে?ইয়াসির কি আদোও রাজি হবে নাকি থাপ্পড়ে আসমানে পাঠিয়ে দিবে। ভাবনার জল্পনাকল্পনা শেষ করে ভোরের দিকে বেচারী ঘুমায় আর তখনি ইয়াসির আসে। সবাই উঠে এলেও ইশা ঘুমের তোপে জানতেই পারে না ইয়াসির এসেছে। সে ঘুমেই টুইটুম্বুর।
ইয়াসির বাসায় এসে ইশাকে না দেখে বলে,,"পেত্নী টা কি ঘুমাচ্ছে নাকি?"
সোহানা বেগম বলে,,"মাইয়া মানুষ উঠতে হয় ভোরে এই মাইয়া কোনো জাতেরই না এটা নিয়া যে তোমরা কি করবা যাইহোক ইয়াসির আসছে এবার ভালা পাত্র খুঁজো তারপর বিয়া দাও।"
সবাই সোহানা বেগমের কথায় পাত্তা না দিয়ে যে যার মতো কাজে লেগে পড়ে।কারন বাড়ির একটা মেয়েকে কেউই তাড়াতাড়ি বিয়ে দিতে ইচ্ছুক না। ইয়াসির এসেছে একটা ঘনিষ্ঠ ফ্রেন্ডের বিয়েতে এটেন্ড করতে নয়ত তাও তার দেখা মিলতো না৷ এইসব নিয়েই আয়ান আর ইয়াসির কথা বলছিল।
বাহিরে ইয়াসির আসায় একটু শোরগোল হচ্ছিল। ইশাও ঘুমঘুম অবস্থায় উঠে বসে দেখে ৭ টা বাজে। ইশা ঢুলুমুলু পায়ে এগিয়ে যায় আয়ানের রুমের সামনে দাঁড়িয়ে ইয়াসিরকে দেখে চোখমুখ ঢলতে ঢলতে বলে,,"ভাইয়া তুমি এসেছো?"
ইয়াসির আর আয়ান ইশাকে দিকে তাকায়। ইয়াসির খানিকবাদে জোরে চিল্লানি দিয়ে বলে,,"তোর বইন সত্যি পেত্নী প্রমাণ পেলি। আর এই পেত্নী খবরদার কাছে আসবি না সর যা যা শেওড়াগাছে যা।"
ইশা হকচকিয়ে বুঝার চেষ্টা করে ইয়াসির কিসব বলছে। একটু পর যখন সামনের আয়নায় নিজেকে দেখে বুঝতে পারে ওর চুলের অবস্থা দেখে নিজেই একপলক ঘাবরে উঠে দৌড়ে বেরিয়ে যায়। যতই হোক ক্রাশের সামনে এমন অবস্থায় থাকলে এ জন্মে আর প্রেম হবে না তার।
সকাল সকাল নাস্তার সময় ইয়াসির বলে,,,"আজকে বিকেলেই যাবো তোমরা কেউ যাবে?"
ইশা