ওসমানের চুপচাপ ঈদ
চাঁদ দেখা গেছে। ঈদের ঘোষণায় পাড়া যেন জেগে উঠল। কোথাও আতশবাজি, কোথাও আনন্দের গান। কিন্তু ওসমান গনি চুপচাপ বসে ছিল বারান্দায়, হাঁটু জড়ানো, দু’চোখে চিন্তার ছায়া।
ওসমান ক্লাস নাইনে পড়ে। ভালো ছাত্র, ভদ্র, শান্ত স্বভাবের। বাবা ছোট্ট মুদি দোকান চালান, সংসার চলে খুব টানাটানিতে। এবার ঈদের আগেও বাবা বলেছিলেন, “ওসমান, এ বছর নতুন জামার ব্যবস্থা হয়তো করা যাবে না। তুই কষ্টে থাকিস না, বাবা।”
ওসমান মাথা নেড়েছিল, হাসতে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু বুকের ভেতরটা যেন ভার হয়ে উঠেছিল।
তার বন্ধুরা সবাই নতুন পাঞ্জাবি, টুপি আর জুতা কেনা নিয়ে ব্যস্ত। ফেসবুকে ছবি, দোকানঘুরে ভিডিও—ওসব দেখেও না দেখার ভান করত ওসমান।
ঈদের সকাল। ঘুম ভাঙতেই মা হাতে দিয়ে গেলেন সাদা ভাত আর ডাল। তারপর বললেন, “তোর বাপ তোর জন্য কিছু এনেছে... দেখে আয়।”
ওসমান দৌঁড়ে দোকানের পেছনে গেল। বাবা একটা ছোট ব্যাগ এগিয়ে দিলেন।
খুলে দেখে—একটা হালকা সবুজ পাঞ্জাবি। পুরোনো হলেও ধুয়ে ইস্ত্রি করে একদম নতুনের মতো।
বাবা বললেন, “এক ভদ্রলোক পুরোনো কাপড় দিয়ে গেছেন, আমি এটা দেখেই তোর কথা ভেবেছিলাম।”
ওসমান জামাটা বুকে জড়িয়ে ধরল। চোখ ভিজে উঠল, কিন্তু সে হেসে বলল, “এটাই তো আমার সবচেয়ে সুন্দর ঈদের জামা!”
পরে পাঞ্জাবি পরে সে মসজিদে গেল। নামাজ শেষে বন্ধুদের সঙ্গে কোলাকুলি করল। একজন জিজ্ঞেস করল, “নতুন পাঞ্জাবি কিনেছিস?”
ওসমান হেসে বলল, “না, এইটা উপহার পেয়েছি আল্লাহর রহমতে। তবে মনটা একদম নতুন জামার মতো খুশি!”
---
শেষ কথা
ঈদের সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে মনটা নতুন করে তোলার মাঝে। নতুন জামা না থাকলেও, যদি মনে থাকে কৃতজ্ঞতা, ভালোবাসা আর শান্তি—তবেই সেটাই হয় আসল ঈদ।
ওসমান বুঝে গেছে, ঈদ শুধু বাহারি পোশাক নয়, ঈদ হলো ভেতরের আলো জ্বালিয়ে রাখার দিন।
#aface
Saymon Ahmed
حذف نظر
آیا مطمئن هستید که می خواهید این نظر را حذف کنید؟