চিঠি দিবসে আমার উপন্যাসের চিঠি
-------------------------
প্রিয় হাসান
ভালবাসা অবান্তর নয়।
মেঘ ছুঁয়ে মোসল ধারায় বৃষ্টি নামলো,
জলের খেলায় মেতে উঠলো কিছু দুষ্ট
বালক বালিকা।
গন্তব্যে ফিরা কিছু মানুষ, বাহির ঘরে বসা।
বৃষ্টি থেমে গেলেই ফিরে যাবে আপন নীড়ে।
সবারই ফিরে যাবার পথ আছে ?
শুধু আমারই নেই।
কত দিন ভাবছি তোমায় লিখবো,
কিন্তু সময় হয়ে উঠে না।
তুমি কি আগের ঠিকানায় আছো,
না কি অন্য কোন ঠিকানায় ।
তাই বাড়ির ঠিকানায় চিঠি পাঠালাম।
নিরুদ্দেশ ভাবনাটা রুখে দিতে চাই,
সময়ের সাথে পেরে উঠছি না।
কিন্তু বাঁধা হয়ে দাড়ালো বিবেক, এ বয়সে
কাউকে ঠকানো সম্ভব নয়।
দেহের কার-বার সবাই করে,
শুধু আমিই পারলাম না হাসান ।
মনের দাম যেখানে নেই
সেখানে বৈবাহিক সম্পর্কটা গড়তে
সবাই পারলে ও ?
আমি পারবো না, আর এখন যে বয়স !
তাতে ও পথে না যাওয়াই ভাল।
তোমার লিখা সব চিঠি গুলো বাঁধাই করে
রেখেছি যাতে নষ্ট না হয়।
দেওয়ালে ঝুলিয়ে রাখা আছে,
ময়লা জমলে মুছিয়ে দেই নিজ হাতে।
তখন ৯০দশক আমি অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী।
পদ্মার করাল গ্রাসে আমাদের গদাধর ডাংগী
প্রায় নদী গর্ভে বিলিনের পথে।
কিছু স্মৃতির অঙ্গুর রয়ে গেছে।
আমাদের একটা আম গাছ ছিল বাড়ির
উঠানে বাবা ইচ্ছে করেই কাটলো না,
গাছটা আমার দাদুর হাতে লাগানো ছিল বলে।
আজ মা বাবা পৃথিবীতে কেউ নেই,
সবাই গত হয়ে গেছে।
তুমি ও গাছটা
দেখেছো মন্দির ঘরের পাশেই ছিল।
সেও কালের বিড়ম্ভনায় হারিয়ে গেল,
কেউ তার খবর রাখেনি।
ভুলে গেছে সবাই ভুলে যেতে হয় বলে।
কিন্তু এই আমি নবনীতা তোমাকে ভুলতে
পারলাম না বলেই,
সমাজ আমায় ভাল চোখে দেখে না।
কাছে থাকলে হয়তো তোমাকে এমন
করে ভাল বাসতে পারতাম না। মিলনের
সুখ পরিসীমা থাকে। আর আমি তোমার
সীমানার বাহিরে। তোমার প্রিয় ঋতু বর্ষা
কাল জানালার পর্দা ভিজিয়ে গেল ---
কিছুক্ষন আগে।
চোখে জল এসে গেল, আর পারছি না।
------------ইতি---তোমারই
নবনীতা, নদীয়া